Ajker Patrika

হাতিরঝিলে অনুমোদন ছাড়াই গড়া হচ্ছে বহুতল ভবন

তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা
Thumbnail image

রাজধানীর অন্যতম দৃষ্টিনন্দন স্থান হাতিরঝিল ঘেঁষে একটি বহুতল ভবন গড়ে উঠছে অনুমোদন ছাড়াই। ১০ কাঠা জমির ওপর ভবনটির একটি বেসমেন্টসহ চারতলার কাজও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এ ভবন নির্মাণ করার ক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী চারপাশে জায়গা ছাড়া তো দূরের কথা, উল্টো সিটি করপোরেশনের রাস্তা ও পয়োনালা দখল করে নেওয়া হয়েছে। কাজ বন্ধ করার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তা মানছেন না প্লটের মালিক। মালিকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনি নিয়ম মেনে কাজ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা গত বুধবার নিজ দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাতিরঝিল-সংলগ্ন মেরুল বাড্ডা এলাকায় বিনা অনুমতিতে একটি স্থাপনা নির্মাণ করার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সেখানে প্লট মালিক একটি মামলার কাগজ দেখাচ্ছেন। তাই আইন শাখাকে এ বিষয়ে কাজ করতে বলেছি। মামলা-সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।’

নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাজউকের অথরাইজড অফিসার-৪/১ মাকিদ এহসান প্রথমে অবৈধ এ স্থাপনার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে একটি নোটিশ দেন। তাতে বলা হয়, মেরুল বাড্ডার ম/৩৩/ডি প্লটটির মালিক শেখ বাদল আহমেদ। তাঁর দাবি, তিনি রাজউক থেকে ছয়তলা আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনের অনুমোদন নিয়েছেন। কিন্তু যে স্মারক নম্বর দেখিয়ে তিনি ওই দাবি করছেন, তা সঠিক নয়। রাজউকের রেকর্ড শাখার নথি যাচাই করে বাদল আহমেদের দাখিল করা স্মারকটির সত্যতা মেলেনি। এ ছাড়া প্লট মালিককে নকশা দাখিল করতে বলা হলেও তা করা হয়নি। তাই বিধি মোতাবেক তাঁকে নকশা অনুমোদন করিয়ে নিতে অনুরোধ করা হয়। নকশা অনুমোদন ছাড়া কোনো ধরনের নির্মাণকাজ না করতেও প্লট মালিককে নির্দেশ দেন রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্লটে ভবন নির্মাণের কাজ করছিলেন বেশ কিছু শ্রমিক। চারতলার আস্তরের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন ভবনটির নিচে কথা হয় দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী গৌতম গোস্বামীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১০ কাঠা জায়গার ওপর মোট আটতলা ভবন হচ্ছে। একটি সেমি বেসমেন্টও আছে। ভবনটির নিচে ৪ হাজার ৬ বর্গফুট হলেও ওপরের ফ্লোরগুলোর স্পেস ৫ হাজার ২ বর্গফুটের মতো।’ তিনি জানান, এখানে একটি চেইন রেস্টুরেন্ট হবে।

রাজউকের এক কর্মকর্তা জানান, ওই প্লটের মালিককে শুরু থেকেই নোটিশ দেওয়াসহ নানাভাবে নিষেধ করা হচ্ছে। নিচতলার কাজ করার সময়ও বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিদর্শনকালে অথরাইজড অফিসারকে দেখানোর জন্য এক সেট নকশা ও অনুমোদনপত্র সংশ্লিষ্ট সাইটে সংরক্ষণ করার বিধান থাকলেও তা দেখাতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। এ ছাড়া রাজউকের অনুমোদিত নকশার তথ্যসংবলিত সাইনবোর্ডও প্রদর্শন করা হচ্ছে না। নির্মাণকাজ শুরু করার আগে অথরাইজড অফিসারকে জানানোর নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তা মানা হয়নি।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ভবনমালিক শেখ বাদল আহমেদকে ফোন করা হলে সেটি ধরেন এনায়েত সজীব নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু দেশের বাইরে আছেন। আমি তাঁর পক্ষে সব কাজ মনিটরিং করছি। আমরা সবকিছু নিয়মের মধ্যেই করছি। এ বিষয়ে আদালতে মামলা করেছি। এখন আদালত যা করার করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত