Ajker Patrika

কাউনিয়ার বাজারে ভেজাল কীটনাশক, বিপাকে চাষি

শাহীন রহমান, পাবনা
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ৫৩
কাউনিয়ার বাজারে ভেজাল কীটনাশক, বিপাকে চাষি

কাউনিয়ায় ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশকে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। মানহীন এসব কীটনাশক জমিতে দফায় দফায় প্রয়োগ করেও সুফল মিলছে না। এ অবস্থায় পোকার আক্রমণ ঠেকাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। কৃষি বিভাগ উপজেলার হাট-বাজারে ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক বেচাবিক্রি বন্ধে অভিযানে নেমেছে।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, কীটনাশক ভেজাল ও নিম্ন মানের হওয়ায় পোকার আক্রমণ দমানো যাচ্ছে না। খেতের মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা দমনে এরই মধ্যে জমিতে তিন থেকে চারবার কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। ফলন বিপর্যয়েরও আশঙ্কা রয়েছে।

মিরবাগ ময়েশা গ্রামের কৃষক সাবলু মিয়া জানান, ধান গাছের বয়স চলছে ৬০ থেকে ৭০ দিন। এরই মধ্যে পাতা মোড়ানো ও মাজরা পোকার আক্রমণ ঠেকাতে জমিতে তিনবার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। তবুও জমি থেকে পোকা সরানো যাচ্ছে না।

কৃষক আকুল মিয়া বলেন, মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা দমনে ২৭ দিনের ব্যবধানে তিনবার স্প্রে দিতে হয়েছে।

নাজিরদহ গ্ৰামের কৃষক কামরুজ্জামান জানান, কীটনাশকের মান ভালো হলে প্রথমবারেই পোকার আক্রমণ দমন হতো। একাধিকবার প্রয়োগ করায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়সহ ধানগাছ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিসহ ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী কৃষকদের ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক সরবরাহ করেন। ফলে পোকা দমনে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়েছে কৃষকদের।

এ প্রসঙ্গে বেইলি ব্রিজ বাজারে সরকারি নিবন্ধনকৃত কীটনাশক ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন,

উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামগঞ্জে সরকারি নিবন্ধনকৃত কীটনাশক দোকানের পাশাপাশি অনিবন্ধিত প্রায় ২৫০টি বালাইনাশকের দোকান রয়েছে। অনিবন্ধিত এসব দোকানের কতিপয় মালিক ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক বেচাবিক্রির সঙ্গে জড়িত। এতে প্রতারিত হচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম জানান, উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নে কৃষি বিভাগের নিবন্ধনকৃত ২০৮টি কীটনাশক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক বেচাবিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন জানান, পোকা দমনে একাধিকবার কীটনাশক স্প্রে করার পরও সুফল না পাওয়ার বিষয়টি নজরে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে উপজেলার হারাগাছ পৌরসভাসহ টেপামধুপুর, হারাগাছ, কুরশা ইউনিয়নের হাট-বাজারে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অনিবন্ধিত একাধিক কীটনাশক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ভারতীয় কীটনাশক জব্দ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত