Ajker Patrika

এক শয্যায় ৩ রোগী

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৭
এক শয্যায় ৩ রোগী

ভোলায় শিশুদের জ্বর, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়েছে। প্রতিদিন এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০-১২ জন শিশু ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। রোগীর চাপ বাড়ায় একটি শয্যায় দু-তিনজন রোগী রাখা হচ্ছে। আবার শয্যা না থাকায় বারান্দায় রেখেও চলছে চিকিৎসা। এদিকে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসক ও নার্স সংকট থাকায় ঠিকমতো চিকিৎসাও পাচ্ছে না রোগীরা।

বর্তমানে এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ৩১টি শয্যার বিপরীতে ৫৭ শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার ২০ শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সর্দি-কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০৫ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়। গত রোববার ২৪ জন শিশু ভর্তি হয়। শনিবার ১৪, শুক্রবার ১৫, বৃহস্পতিবার ১৮, বুধবার ১৮ ও মঙ্গলবার ১৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া গত দুই সপ্তাহে ২২২ জন শিশু ভর্তি হয়। হাসপাতালে শিশু রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

অন্যদিকে শিশু রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে শয্যাসংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিটি শয্যায় গড়ে দু-তিনজনকে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে শীতের মধ্যে বারান্দায় রাখা হচ্ছে রোগীদের। এতে রোগীর স্বজনেরাও পড়েছেন বিপাকে। চাপ বেড়ে যাওয়া ঠিকমতো চিকিৎসা পারছে না রোগী।

গতকাল সোমবার সরেজমিনে শিশু ওয়ার্ডে দেখা গেছে, নাজিদা নুর নামে এক রোগীর মা সুফিয়ার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্স মৌসুমি রায়।

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা সুফিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘১০ মাস বয়সী শিশু নাজিদা নূরকে সর্দি, কাশি ও জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত কারণে সোমবার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু মেয়েকে ক্যানোলা পরানোর জন্য নার্সদের বারবার বলা হলেও তাঁরা আসেননি। বরং আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’

এ বিষয়ে নার্স মৌসুমি রায় বলেন, এ ওয়ার্ডসহ পুরো সদর হাসপাতালে রয়েছে নার্সসংকট। ফলে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোকসানা আক্তার বলেন, ‘ঠান্ডাজনিত রোগে ছেলে আবি আব্দুল্লাহকে সোমবার (গতকাল) সকালে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করি। কিন্তু সঠিকভাবে চিকিৎসা দিচ্ছে না চিকিৎসক ও নার্স।’

শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মৌসুমি রায় বলেন, কয়েক দিন ধরে রোগীর চাপ অনেক বেশি। শিশুদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে শয্যা রয়েছে ২৫টি ও কেবিন ৬টি। মোট ৩১টি শয্যায় বর্তমানে রোগী ভর্তি ৫৬। আমাদের একার পক্ষে এত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া কষ্টসাধ্য। তবুও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এখানে আরও একজন নার্স দরকার।’

ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) নিরুপম সরকার সোহাগ বলেন, ‘গরম ও ঠান্ডার কারণে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জনবলসংকট থাকায় চিকিৎসা দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে ১০০ শয্যার কার্যক্রম। ডাক্তার-নার্স চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত