Ajker Patrika

শতবর্ষী কুঞ্জমেলায় দর্শনার্থীর ভিড়

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) গাজীপুর
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ৩৫
শতবর্ষী কুঞ্জমেলায় দর্শনার্থীর ভিড়

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়াখোলায় গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে কুঞ্জমেলা। তিন দিনের এ মেলা এবার শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। প্রতিবছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এবং পৌষ মাসের শেষ দিকে বসে এ মেলা। এবারও মেলায় ভিড় করেছেন হাজারো দর্শনার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চুয়ারিয়াখোলা গ্রামের শ্রীশ্রী কানাইলাল মন্দির কমিটির উদ্যোগে কুঞ্জমেলার আয়োজন করা হয়। মেলার প্রথম দিন খাবারসামগ্রী, দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এবং তৃতীয় দিন খাবারসামগ্রী ও মাছ মিলিয়ে চলে মেলা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবী রাধা, দেবতা কৃষ্ণের লীলাকীর্তি উপলক্ষে কুঞ্জমেলার আয়োজন করা হয়।

মেলার আগে সনাতন ধর্মের লোকজন টানা ১৫ দিন নিরামিষ খান। মেলার শেষ দিন আমিষ খাদ্য গ্রহণ ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাঁদের আনুষ্ঠানিকতা। মেলা উপলক্ষে জামাই ও আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করার রেওয়াজও চলে।

গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দিন মেলাপ্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন শতাধিক ব্যবসায়ী। মিষ্টান্ন, খেলনা, চুড়ি, ফিতা, আলতা থেকে গৃহস্থালির নানা জিনিসের পসরা সাজিয়েছেন তাঁরা। মেলায় নিমকি, মুড়কি, ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি, চানাচুর, মিষ্টি ও জিলাপি বিক্রি করা হচ্ছে ৫০টির বেশি দোকানে। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে নাগরদোলা। আরও হাতি, ঘোড়া, নৌকা ও রাইফেলের শুটিং।

ঢাকার ডেমরা থেকে পঞ্চাশোর্ধ্ব সাহেরা বেগম কুঞ্জমেলায় এসেছেন চুড়ি নিয়ে। তিনি বলেন, এবার তিনি প্রথম কুঞ্জমেলায় এসেছেন। বিভিন্নজনের কাছে এই মেলার কথা শুনে তাঁর এখানে আসা। অনেক লোকজন এবং বেচাকেনাও ভালো। মেলায় নারী ও শিশু ক্রেতাই বেশি বলে জানান তিনি।

নরসিংদী থেকে খেলনার দোকান নিয়ে এসেছেন আফজাল উদ্দিন। তিনি বললেন, ‘আমি কয়েক বছর ধরে এখানে আসি। পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এখানকার মেলা। বেচাকেনা যা-ই হোক, একসঙ্গে এত দর্শনার্থী দেখে ভালোই লাগে।’

কাপাসিয়ার জাঙ্গালীয়ার রয়েন থেকে মাটির তৈজসপত্র নিয়ে এসেছেন শুভাস চন্দ্র দাস। আর উপজেলার মোক্তারপুরের বাঘুন থেকে মাটির তৈরি পিঠার ছাঁচ নিয়ে এসেছেন পরিমল চন্দ্র পাল। মাটির তৈজসপত্র কিনতে আসা অবলা রানী দাস বলেন, শীতের সময় গ্রামে পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। তাই পিঠা তৈরির ছাঁচের জন্য তিনি প্রতিবছর মেলায় আসেন।

শ্রীশ্রী কানাইলাল মন্দির ও মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি মুকুল চন্দ্র দে বলেন, ১০০ বছর পূর্ণ হলো এই কুঞ্জমেলার। মূলত পৌষ মাসের শেষের দিকে এই কুঞ্জমেলা বসে। কানাইলাল মন্দির রাধা-কৃষ্ণের লীলাকীর্তি ১৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। একেবারে শেষের তিন দিনে বসে কুঞ্জমেলা। মেলা থেকে যে আয় হয়, তা মন্দিরের কল্যাণ ট্রাস্টে জমা হয়।

মুকুল চন্দ্র দে বলেন, মেলা উপলক্ষে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয় না। দূর-দূরান্তের মানুষ এখনো আসছে মেলায় যোগ দিতে। সে কারণে সব রকমের সুবিধা রাখতে আয়োজক কমিটি প্রায় এক মাস আগে থেকে সব প্রস্তুতি নিয়ে থাকে।

তুমলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুবকর বাক্কু মিয়া বলেন, গ্রাম-বাংলার মেলার ঐতিহ্য রাখতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে শ্রীশ্রী কানাইলাল মন্দির কমিটি। প্রতিবছর তাঁরা স্বেচ্ছাশ্রমে অব্যাহত রেখেছেন এই মেলার আয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত