Ajker Patrika

জলদস্যু-আতঙ্কে মাছ ধরতে যান না জেলেরা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
জলদস্যু-আতঙ্কে মাছ ধরতে যান না জেলেরা

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে জলদস্যু ও ডাকাতের ভয়ে মাছ ধরতে যেতে চান না জেলেরা। প্রতিদিনই জলদস্যুরা হামলা চালিয়ে জাল, নৌকা ও মাছ নিয়ে যায়। কখনো মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণও করে জেলেদের। গত দুই মাসে প্রায় ২৫টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদের হামলায় মারা গেছেন দুজন। জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন জেলেরা।

জেলে, মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৯ নভেম্বর ভোরে রামগতির মেঘনা নদীতে জলদস্যুর হামলায় তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁরা হলেন আব্বাস মাঝি, মো. ফারুক ও মো. ইউসুফ। এ সময় মহিউদ্দিন নামের এক জেলেকে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে পরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বদ্দারহাটের মেঘনায় জেলেদের নৌকায় হামলা চালায় ডাকাতেরা। এ সময় নৌকায় থাকা শিশু হাসান ও জেলে নজু বয়াতিকে নদীতে ছুড়ে ফেলে দেয় ডাকাতেরা। পরে জেলে নজু বয়াতি সাঁতরে কূলে উঠতে পারলেও শিশু হাসান নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে হাসানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর কয়েক দিন আগে রামগতির মেঘনার চরআব্দুল্লাহ থেকে সাত জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। মুক্তিপণ আদায়ের পর মাঝনদীতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পাঁচজন সাঁতার কেটে কূলে আসেন। দুজন নিখোঁজ হন। এর দুদিন পর সাইফুল হাওলাদার নামের একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এভাবে প্রায়ই জলদস্যুদের হাতে হামলার শিকার হতে হয় জেলেদের। এভাবে দুই মাসে মেঘনায় ২৫টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক জেলে।

লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে থাকেন এখানকার জেলেরা। অভিযোগ রয়েছে, রামগতির চরগজারিয়া, বয়ারচর, চরআব্দুল্লাহ, তেলিরচর, মতিরহাট এবং তার আশপাশের জেলেরা নদীতে যাচ্ছেন না জলদস্যু ও ডাকাত আতঙ্কে। কালা জাকের, বাদশা মহিউদ্দিন পলাশসহ ২০-২৫ জলদস্যু নদীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব ডাকাতের কারণে জেলেরা নদীতে যাচ্ছেন না। প্রায়ই জেলেদের ওপর হামলা করে নৌকা, জাল, মাছ এবং টাকা লুটে নিয়ে যায় ডাকাতেরা।

রামগতির চরআব্দুল্লাহ এলাকার জেলে ফারুক ও ইউসুফ মাঝি বলেন, ‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১০-১২ জনের একদল জলদস্যু তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে দস্যুরা। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হই। অন্য জেলে মহিউদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে মুক্তিপণের টাকা বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে তাঁকে ছেড়ে দেয়।

জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সহসভাপতি আবু ইউসুফ জানান, দুই মাসে ডাকাত ও জলদস্যুদের হামলার ঘটনা ঘটেছে ২৫টি। পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলেরা যেন নিরাপদে মাছ শিকার করতে পারেন, সে জন্য নদীতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে  গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত