Ajker Patrika

পোশাকপণ্যের নামে এল কম্বল-প্রসাধনী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১২: ১৫
পোশাকপণ্যের নামে এল কম্বল-প্রসাধনী

মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা কনটেইনারভর্তি পণ্যের চালান আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৭৫ ধরনের পণ্য একটি কনটেইনার থেকে আটকের এই তথ্য গতকাল শনিবার জানানো হয়। এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার কায়িক পরীক্ষা শেষে এ বিষয়ে নিশ্চিত হন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

আটক চালানের মধ্যে কম্বল, জায়নামাজ, প্রসাধনী ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে। অথচ এতে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্লাংকেট কাপড় থাকার কথা ছিল। এ জন্য সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই মালামালগুলোর মালিক পাবনা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার এমজিএল কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড। তাঁরা মরিশাস থেকে ২৪০ প্যাকেজ তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্লাংকেট কাপড় ঘোষণায় এক কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। মরিশাসের পোর্ট লুইস বন্দর থেকে কোটা নাজার নামের জাহাজে করে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।

পরে সেই কনটেইনারটি খালাসের জন্য আমাদানিকারকের মনোনীত চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের নুর চেম্বারের সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রত্যয় ইন্টারন্যাশনাল বিল দাখিল করে। গোপনে তথ্য পেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের পক্ষ থেকে চালানটির খালাস স্থগিত করে। পরে বন্দরের জেআর কনটেইনার ইয়ার্ডে ওই কন্টেইনারটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এতে কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) দলসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরীক্ষায় দেখা যায়, কনটেইনারটির ২৩৮টি প্যাকেজের প্রায় প্রতিটির ইনার প্যাকেজের গায়ে প্রেরক ও প্রাপকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ কাপড় সেলাই করা রয়েছে। এখানে নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে এতে ৪ হাজার ৫৫৭ কেজি ওজনের ১ হাজার ৫৫১টি কম্বল, ৪৭৬ কেজি ওজনের ৪৮৩টি জায়নামাজ, ১২০ কেজি বিভিন্ন প্রকার প্রসাধনী, ২০০ কেজি নানা ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ মোট ৭ হাজার ৫৭০ কেজি পণ্য পাওয়া যায়। এ সব পণ্যে আনুমানিক ১৭ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রত্যয় ইন্টারন্যাশনাল এর আগে গত জুন-জুলাই মাসে ১১টি বিল অব অ্যান্ট্রির মধ্যে ৯টি চালান ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড জালিয়াতি করে খালাস করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বাকি দুটি চালানের মধ্যে ওই চালানটিতে অনিয়ম ধরা পড়ে।

এই প্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড জালিয়াতির ঘটনায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার তফসির উদ্দিন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে গত ১৫ নভেম্বর চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ওই কমিটির সদস্যসচিব মো. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এআইআর দলের শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় জানা গেছে, আটক দুটি চালানের মধ্যে একটি চালানে মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত