Ajker Patrika

নিজের কফিনেই পেরেক ঠোকে পাকিস্তান

এ আর চন্দন, ঢাকা
Thumbnail image

একাত্তরে সীমান্তের ওপার থেকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী শুরু থেকেই অঘোষিতভাবে আর্টিলারি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের। সম্ভবত ভারতকে পশ্চিম রণাঙ্গনে টেনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পাকিস্তান ৩ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় ভারতে আচমকা বিমান হামলা করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তখন কলকাতায় এক জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। ভারতের পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীরে ১২টি বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানি বিমান থেকে ১৮৩টি বোমা ফেলা হয়েছিল। তবে ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তারা এতে মোটেও বিচলিত হননি।

মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের ভাষায়, ‘এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য ভারত পুরো প্রস্তুত ছিলো।

মিসেস গান্ধী দ্রুত রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলেন এবং ঐ রাতেই ১২টা ৩০ মিনিটে জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে সকলকে চরম ত্যাগ স্বীকারের জন্য তৈরী হওয়ার আহ্বান জানালেন। ততোক্ষণে জেনারেল অরোরাও আক্রমণের নির্দেশ পেয়ে যান। ভারতীয় নৌবাহিনী ইতিমধ্যেই সফল অভিযান শুরু করে দিয়েছিল। বিশাখাপত্তম উপকূলের মাত্র কয়েক মাইল দূরে ভারতীয় ডেস্ট্রয়ার আইএনএস রাজপুত পাকিস্তানী সাবমেরিন গাজীর সন্ধান পেয়ে যায়। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই রাজপুতের ডেপথ-চার্জে সাবমেরিন গাজী টুকরো টুকরো হয়ে সাগর গর্ভে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।’ (সূত্র: লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে)

ভারতীয় পূর্বাঞ্চল কমান্ডের লে. জে. জগজিৎ সিং অরোরার অধিনায়কত্বে ঘোষিত হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড। ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী এবং বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত হলো মিত্রবাহিনী। গভীর রাতেই মিত্রবাহিনী অবরুদ্ধ বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয়।

ক্যাপ্টেন আইনউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী কুমিল্লার মিয়াবাজারে পাকসেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে মিয়াবাজার দখল করে নেন। জাফর ইমামের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী নোয়াখালীর মাইজদীতে হানাদারদের ওপর আক্রমণ চালায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল সোনাইমুড়ী মুক্ত করে। দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা শত্রুমুক্ত হয়। সাতক্ষীরা সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে পাকিস্তানিরা পিছু হটে দৌলতপুরের দিকে পালাতে থাকে। রংপুরের পলাশবাড়ীতে পরাজিত হয় পাকিস্তানিরা। এ দিন মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও।

গেরিলা কমান্ডার মাহবুব আলমের ভাষায়, ‘ঠাকুরগাঁও শহরকে ডানে রেখে, এই এখন সিও অফিস অর্থাৎ আলবদর একডেমির সামনে জ্যোৎস্নালোকিত সন্ধ্যা রাতে আমরা বসে আছি।...আমরা যেনো পিটিয়ে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছি পাকবাহিনীকে।’ (সূত্র: গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত