মৌলভীবাজার ও কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
ব্রিটিশদের নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৯২১ সালের ২০ মে ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলনের ডাক দেন চা-শ্রমিক নেতারা। এদিন প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক সিলেট থেকে হেঁটে চাঁদপুরে মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছান। তাঁরা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশ বাহিনীর সৈনিকেরা নির্বিচারে গুলি চালান। শত শত চা-শ্রমিককে হত্যা করে মেঘনা নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেন সৈন্যরা। যাঁরা পালিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
ওই ঘটনার পর কেটে গেছে এক শতাব্দী। তখন থেকেই রক্তাক্ত ওই দিনটিকে পালন করা হচ্ছে চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকদের অব্যাহত দাবির মুখে শত বছরেও মেলেনি দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, ১৮৩৫ সালে চীন দেশের সীমানার বাইরে সর্বপ্রথম চা-উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় চা-বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, ওডিশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের একই ভূখণ্ডের জায়গা স্থানান্তর করা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ (গাছ নড়লে টাকা মিলবে) এমন প্রলোভনে শ্রমিকদের নিয়ে এলেও তাঁদের এ ভুল বুঝতে বেশি সময় লাগেনি। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা-বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে হিসাবহীন চা-শ্রমিকের জীবন অকালে ঝরেছে। এর মধ্যে অব্যাহত ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই। নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা-শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পণ্ডিত দেওসরন ‘মুল্লুকে চল’ (মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়া) আন্দোলনের ডাক দেন।
চা-শ্রমিকেরা আক্ষেপ করে জানান, চা-শিল্পের উন্নতি হলেও বদলাচ্ছে না তাঁদের জীবন। সারা দিন কাজের পর একজন চা-শ্রমিকের আয় হয় ১২০ টাকা। নেই নিজস্ব জাতিগত পরিচয়, লেখাপড়ার সুযোগ নেই, নেই স্যানিটেশনও, রয়েছে চিকিৎসার অভাব।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কমলগঞ্জের চা-বাগানের চা-শ্রমিকের সন্তানেরা বলেন, চা-শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার নেই। বর্তমানে মধ্যযুগীয় দাসপ্রথার চেয়েও করুণ জীবনযাপন করছেন তাঁরা। মৌলিক চাহিদাও তাঁরা পূরণ করতে পারেন না। বছরের পর বছর চা-বাগানে কাজ করার পরও অস্থায়ী বলে বিবেচিত চা-শ্রমিকেরা।
সিলেট চা-জনগোষ্ঠী ছাত্র যুব কল্যাণ পরিষদের সহসভাপতি সুজিত বাড়াইক বলেন, ‘২০২০ সালের চুক্তি অনুসারে, একজন শ্রমিককে অবসর ভাতা হিসেবে তিনি যত বছর কাজ করেছেন, বছরের গড়ে দেড় মাসের বেতন হিসাবে পেনশন দেওয়ার কথা। কিন্তু সেটা শুধু কাগজে-কলমে।’
চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি বলেন, চা-বাগানের শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন আসেনি। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি জীবনযাত্রায়। এমনকি মৌলিক অধিকারও ভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন না তাঁরা। চা-বাগানের এই জনগোষ্ঠী এখনো ব্রিটিশ সামন্তবাদ আর স্থানীয় বাবু-সাহেবদের বেড়াজাল ছিন্ন করতে পারেননি।
চা-শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে চা-শ্রমিক দিবসটি পালনের স্বীকৃতি চেয়েও পাইনি।’
বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট ভ্যালির সভাপতি জি এম শিবলী বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের জীবনমান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে, লেখাপড়া চাকরিতেও অনেকে এগিয়ে গেছে। তাঁদের আরও উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে। প্রতিটি বাগানে প্রাথমিক স্কুল স্থাপন করা হচ্ছে।’
প্রতিবছরের মতো এবারেও ২০ মে চা-শ্রমিক দিবসে কমলগঞ্জে চা-শ্রমিক সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদায় পালন করবে।
ব্রিটিশদের নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৯২১ সালের ২০ মে ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলনের ডাক দেন চা-শ্রমিক নেতারা। এদিন প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক সিলেট থেকে হেঁটে চাঁদপুরে মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছান। তাঁরা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশ বাহিনীর সৈনিকেরা নির্বিচারে গুলি চালান। শত শত চা-শ্রমিককে হত্যা করে মেঘনা নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেন সৈন্যরা। যাঁরা পালিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
ওই ঘটনার পর কেটে গেছে এক শতাব্দী। তখন থেকেই রক্তাক্ত ওই দিনটিকে পালন করা হচ্ছে চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকদের অব্যাহত দাবির মুখে শত বছরেও মেলেনি দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, ১৮৩৫ সালে চীন দেশের সীমানার বাইরে সর্বপ্রথম চা-উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় চা-বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, ওডিশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের একই ভূখণ্ডের জায়গা স্থানান্তর করা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ (গাছ নড়লে টাকা মিলবে) এমন প্রলোভনে শ্রমিকদের নিয়ে এলেও তাঁদের এ ভুল বুঝতে বেশি সময় লাগেনি। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা-বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে হিসাবহীন চা-শ্রমিকের জীবন অকালে ঝরেছে। এর মধ্যে অব্যাহত ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই। নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা-শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পণ্ডিত দেওসরন ‘মুল্লুকে চল’ (মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়া) আন্দোলনের ডাক দেন।
চা-শ্রমিকেরা আক্ষেপ করে জানান, চা-শিল্পের উন্নতি হলেও বদলাচ্ছে না তাঁদের জীবন। সারা দিন কাজের পর একজন চা-শ্রমিকের আয় হয় ১২০ টাকা। নেই নিজস্ব জাতিগত পরিচয়, লেখাপড়ার সুযোগ নেই, নেই স্যানিটেশনও, রয়েছে চিকিৎসার অভাব।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কমলগঞ্জের চা-বাগানের চা-শ্রমিকের সন্তানেরা বলেন, চা-শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার নেই। বর্তমানে মধ্যযুগীয় দাসপ্রথার চেয়েও করুণ জীবনযাপন করছেন তাঁরা। মৌলিক চাহিদাও তাঁরা পূরণ করতে পারেন না। বছরের পর বছর চা-বাগানে কাজ করার পরও অস্থায়ী বলে বিবেচিত চা-শ্রমিকেরা।
সিলেট চা-জনগোষ্ঠী ছাত্র যুব কল্যাণ পরিষদের সহসভাপতি সুজিত বাড়াইক বলেন, ‘২০২০ সালের চুক্তি অনুসারে, একজন শ্রমিককে অবসর ভাতা হিসেবে তিনি যত বছর কাজ করেছেন, বছরের গড়ে দেড় মাসের বেতন হিসাবে পেনশন দেওয়ার কথা। কিন্তু সেটা শুধু কাগজে-কলমে।’
চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি বলেন, চা-বাগানের শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন আসেনি। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি জীবনযাত্রায়। এমনকি মৌলিক অধিকারও ভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন না তাঁরা। চা-বাগানের এই জনগোষ্ঠী এখনো ব্রিটিশ সামন্তবাদ আর স্থানীয় বাবু-সাহেবদের বেড়াজাল ছিন্ন করতে পারেননি।
চা-শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে চা-শ্রমিক দিবসটি পালনের স্বীকৃতি চেয়েও পাইনি।’
বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট ভ্যালির সভাপতি জি এম শিবলী বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের জীবনমান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে, লেখাপড়া চাকরিতেও অনেকে এগিয়ে গেছে। তাঁদের আরও উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে। প্রতিটি বাগানে প্রাথমিক স্কুল স্থাপন করা হচ্ছে।’
প্রতিবছরের মতো এবারেও ২০ মে চা-শ্রমিক দিবসে কমলগঞ্জে চা-শ্রমিক সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদায় পালন করবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
৪ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪