অ্যাস্ট্রোলেব সময় নির্ধারণ ও আকাশের নক্ষত্র গণনাকারী যন্ত্র। এর উৎপত্তি সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, চতুর্থ শতকে গ্রিক বিজ্ঞানীরা অ্যাস্ট্রোলেব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তবে মুসলিম সভ্যতায়ই এটির বাস্তবধর্মী আবিষ্কার ও প্রয়োগ দেখা যায়। অ্যাস্ট্রোলেব নিয়ে নবম শতকের শুরুর দিকের বিজ্ঞানী আলি ইবনে ইসা ও আল-খাওয়ারিজমির রচনা পাওয়া যায়। দশম শতকে মুসলিম বিশ্বের রাজধানী বাগদাদে পুরোনো অ্যাস্ট্রোলেবটি তৈরি হয়েছিল। এরপর অনেকেই অ্যাস্ট্রোলেব তৈরি করলেও তা বিশেষ সর্বজনীন রূপ লাভ করেনি।
সাধারণত যে অ্যাস্ট্রোলেবটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, সেটিই প্রথম সর্বজনীন অ্যাস্ট্রোলেব। ১১ শতকে স্পেনের টলেডোতে এটি উদ্ভাবিত হয়। আলি ইবনে খালাফ আল-শাজ্জার এবং আবু ইসহাক আল-জারকালির যৌথ উদ্যোগে এটি উদ্ভাবিত হয়েছিল। এটিই প্রথম যন্ত্র, যা বিভিন্ন দ্রাঘিমাংশে সমানভাবে ব্যবহার করা যেত। এর আগে সাধারণ অ্যাস্ট্রোলেবগুলো ভিন্ন ভিন্ন দ্রাঘিমাংশ সাপেক্ষে তৈরি করা হতো, যার ফলে স্থান পরিবর্তনের ফলে তা দিয়ে সঠিক হিসাব করা যেত না। নিখুঁত নৌচালনায় ব্যাপক অবদান রেখেছিল জারকালির অ্যাস্ট্রোলেব।
১৩ শতকের শেষের দিকে সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত অ্যাস্ট্রোলেবটি তৈরি করেন ইবনে সাওকা আল-বাগদাদি। সেটিতে চারটি সমান্তরাল ফলক রাখার মতো একটি ফাঁপা ডিস্ক ছিল। অ্যাস্ট্রোলেব সম্পর্কে মার্কিন পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. হ্যারল্ড উইলিয়ামস বলেন, ‘অ্যাস্ট্রোলেব আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কারের আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণনাযন্ত্র এবং টেলিস্কোপ আবিষ্কারের আগে সবচেয়ে জরুরি পর্যবেক্ষণ-যন্ত্র। অ্যাস্ট্রোলেবের আদি উৎস এখনো অজানাই রয়ে গেছে। … উৎস যেটাই হোক, যন্ত্রটির উন্নতি সাধন ও বিস্তৃত ব্যবহার শুরু করেছিলেন মুসলিমরাই। নামাজের সঠিক সময় নির্ধারণ এবং কিবলার অবস্থান নির্ণয়ে অ্যাস্ট্রোলেবের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রায় ১৮০০ সাল পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বে অ্যাস্ট্রোলেবের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।’
অ্যাস্ট্রোলেবে মহাকাশের তারার অবস্থানসংক্রান্ত মানচিত্রের সংযোজন থাকে এবং এর সাহায্যে নির্দিষ্টভাবে ভূমির সাপেক্ষে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়ের ব্যবস্থা থাকে। কিছু অ্যাস্ট্রোলেব হাতে বহন করার মতো ছোট, আবার কিছু অ্যাস্ট্রোলেব বিশাল আকৃতির। মধ্যযুগীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য যন্ত্রটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের কম্পিউটার হিসেবে বিবেচনা করা হতো—যার সাহায্যে তাঁরা সূর্যোদয়, সূর্যাস্তসহ বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনার সময়, সূর্যের সাপেক্ষে ভূমির অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রকার মহাজাগতিক গবেষণা সম্পাদন করতেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণা ও ব্যবহারিক জীবনে অ্যাস্ট্রোলেবের বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে। অতিক্রম-অতীত কোনো উঁচু বস্তুর উচ্চতা নির্ণয়, সময় নির্ধারণ এবং অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যন্ত্রটির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। দশম শতাব্দীর বিখ্যাত মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী আবদুর রহমান আল-সুফি তাঁর রচনায় অ্যাস্ট্রোলেবের এক হাজারের অধিক ব্যবহার উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া অ্যাস্ট্রোলেবের উন্নয়নে আরও বহু মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীর নাম জড়িয়ে আছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অনেক নারী জ্যোতির্বিজ্ঞানী। সিরিয়ার আলেপ্পোতে বসবাসকারী দশম শতাব্দীর জ্যোতির্বিজ্ঞানী মরিয়ম আল-আস্ত্রালাবিয়া আল-ইজলিয়ার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি আলেপ্পোর হামদানি আমির সাইফ-উদ-দৌলার দরবারে নিযুক্ত ছিলেন।
মধ্যযুগে জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রধানতম সহায়ক যন্ত্র ছিল অ্যাস্ট্রোলেব। বর্তমানে যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণার সহায়ক বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র উদ্ভাবিত হয়েছে, তবু জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় অ্যাস্ট্রোলেবের ব্যবহারের গুরুত্ব কোনো অংশেই কমেনি।
সূত্র: থাউজেন্ড ওয়ান ইনভেনশনস ডটকম
অ্যাস্ট্রোলেব সময় নির্ধারণ ও আকাশের নক্ষত্র গণনাকারী যন্ত্র। এর উৎপত্তি সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, চতুর্থ শতকে গ্রিক বিজ্ঞানীরা অ্যাস্ট্রোলেব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তবে মুসলিম সভ্যতায়ই এটির বাস্তবধর্মী আবিষ্কার ও প্রয়োগ দেখা যায়। অ্যাস্ট্রোলেব নিয়ে নবম শতকের শুরুর দিকের বিজ্ঞানী আলি ইবনে ইসা ও আল-খাওয়ারিজমির রচনা পাওয়া যায়। দশম শতকে মুসলিম বিশ্বের রাজধানী বাগদাদে পুরোনো অ্যাস্ট্রোলেবটি তৈরি হয়েছিল। এরপর অনেকেই অ্যাস্ট্রোলেব তৈরি করলেও তা বিশেষ সর্বজনীন রূপ লাভ করেনি।
সাধারণত যে অ্যাস্ট্রোলেবটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, সেটিই প্রথম সর্বজনীন অ্যাস্ট্রোলেব। ১১ শতকে স্পেনের টলেডোতে এটি উদ্ভাবিত হয়। আলি ইবনে খালাফ আল-শাজ্জার এবং আবু ইসহাক আল-জারকালির যৌথ উদ্যোগে এটি উদ্ভাবিত হয়েছিল। এটিই প্রথম যন্ত্র, যা বিভিন্ন দ্রাঘিমাংশে সমানভাবে ব্যবহার করা যেত। এর আগে সাধারণ অ্যাস্ট্রোলেবগুলো ভিন্ন ভিন্ন দ্রাঘিমাংশ সাপেক্ষে তৈরি করা হতো, যার ফলে স্থান পরিবর্তনের ফলে তা দিয়ে সঠিক হিসাব করা যেত না। নিখুঁত নৌচালনায় ব্যাপক অবদান রেখেছিল জারকালির অ্যাস্ট্রোলেব।
১৩ শতকের শেষের দিকে সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত অ্যাস্ট্রোলেবটি তৈরি করেন ইবনে সাওকা আল-বাগদাদি। সেটিতে চারটি সমান্তরাল ফলক রাখার মতো একটি ফাঁপা ডিস্ক ছিল। অ্যাস্ট্রোলেব সম্পর্কে মার্কিন পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. হ্যারল্ড উইলিয়ামস বলেন, ‘অ্যাস্ট্রোলেব আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কারের আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণনাযন্ত্র এবং টেলিস্কোপ আবিষ্কারের আগে সবচেয়ে জরুরি পর্যবেক্ষণ-যন্ত্র। অ্যাস্ট্রোলেবের আদি উৎস এখনো অজানাই রয়ে গেছে। … উৎস যেটাই হোক, যন্ত্রটির উন্নতি সাধন ও বিস্তৃত ব্যবহার শুরু করেছিলেন মুসলিমরাই। নামাজের সঠিক সময় নির্ধারণ এবং কিবলার অবস্থান নির্ণয়ে অ্যাস্ট্রোলেবের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রায় ১৮০০ সাল পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বে অ্যাস্ট্রোলেবের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।’
অ্যাস্ট্রোলেবে মহাকাশের তারার অবস্থানসংক্রান্ত মানচিত্রের সংযোজন থাকে এবং এর সাহায্যে নির্দিষ্টভাবে ভূমির সাপেক্ষে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়ের ব্যবস্থা থাকে। কিছু অ্যাস্ট্রোলেব হাতে বহন করার মতো ছোট, আবার কিছু অ্যাস্ট্রোলেব বিশাল আকৃতির। মধ্যযুগীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য যন্ত্রটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের কম্পিউটার হিসেবে বিবেচনা করা হতো—যার সাহায্যে তাঁরা সূর্যোদয়, সূর্যাস্তসহ বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনার সময়, সূর্যের সাপেক্ষে ভূমির অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রকার মহাজাগতিক গবেষণা সম্পাদন করতেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণা ও ব্যবহারিক জীবনে অ্যাস্ট্রোলেবের বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে। অতিক্রম-অতীত কোনো উঁচু বস্তুর উচ্চতা নির্ণয়, সময় নির্ধারণ এবং অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যন্ত্রটির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। দশম শতাব্দীর বিখ্যাত মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী আবদুর রহমান আল-সুফি তাঁর রচনায় অ্যাস্ট্রোলেবের এক হাজারের অধিক ব্যবহার উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া অ্যাস্ট্রোলেবের উন্নয়নে আরও বহু মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীর নাম জড়িয়ে আছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অনেক নারী জ্যোতির্বিজ্ঞানী। সিরিয়ার আলেপ্পোতে বসবাসকারী দশম শতাব্দীর জ্যোতির্বিজ্ঞানী মরিয়ম আল-আস্ত্রালাবিয়া আল-ইজলিয়ার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি আলেপ্পোর হামদানি আমির সাইফ-উদ-দৌলার দরবারে নিযুক্ত ছিলেন।
মধ্যযুগে জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রধানতম সহায়ক যন্ত্র ছিল অ্যাস্ট্রোলেব। বর্তমানে যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণার সহায়ক বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র উদ্ভাবিত হয়েছে, তবু জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় অ্যাস্ট্রোলেবের ব্যবহারের গুরুত্ব কোনো অংশেই কমেনি।
সূত্র: থাউজেন্ড ওয়ান ইনভেনশনস ডটকম
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
২০ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫