Ajker Patrika

একটি বাড়ি, একটি ওয়ার্ড

শ্যামল চন্দ্র দাস মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর)
Thumbnail image

দালালবাড়ির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম বৈকুণ্ঠ দালাল, দ্বারিকানাথ দালাল, প্যারিমোহন দালাল ও নবদ্বীপ দালাল।

বৈকুণ্ঠ দালালের উত্তরসূরি সুভাষ চন্দ্র দাস জানান, এখানে জমিদারদের বসবাস ছিল এবং পুরো এলাকা নিয়ে ছিল জমিদারি। বিভিন্ন এলাকার জমিদারেরা এখানে আসতেন। এ গ্রামের নেতৃত্বে ছিলেন মায়াধর। তাঁর পিতার নাম মনমোহন দালাল। দ্বারিকানাথ দালাল এখানকার জমিদারবাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। তাঁরই স্মৃতি বহন করছে গ্রামটি।

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই এখন সরকারি চাকরি করেন। গ্রামটিতে রয়েছে জগন্নাথদেবের একটি মন্দির এবং একটি ইসকন মন্দির। তবে প্রতিবছরই লক্ষ্মীপূজায় লক্ষ্মীর দশেরা অনুষ্ঠিত হয় এই গ্রামে।

এই গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ভরত চন্দ্র দাস। গত নির্বাচনে তিনি দুজন প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। গ্রামটি ঘনবসতিপূর্ণ। এর পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবেশ করলে পূর্ব দিক দিয়ে বের হওয়া বেশ কষ্টসাধ্য। পথচারীরা প্রায়ই পথ ভুলে যায়। গ্রামে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। এখানে আছে একটি বাজার, একটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

মেহারন দালালবাড়িতে বর্তমানে বসবাস করছে তৃতীয় প্রজন্মের ৩৬০টি পরিবারের প্রায় সাত হাজার মানুষ। এখানে আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, বাজার ও দোকানপাট। বর্ষায় ফসলি জমিগুলো পরিণত হয় বিলে। মনে হবে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বিলের মাঝখানে অবস্থিত একটি বাড়ি।

বৈকুণ্ঠ দালালের উত্তরসূরি সুভাষ দাস বলেন, ‘আমরা খুশি হব আমাদের বাড়ির রাস্তাঘাটগুলো প্রশস্ত হলে। এখন আমাদের চলাফেরা করতে সমস্যা হয়।’ এই বাড়ির গৃহবধূ মালতী রানি জানান, ভোটের সময় সবাই ভালো কথা বললেও তাঁদের গ্রামের উন্নয়নে কেউ কিছু করে না।

মেহারন দালালবাড়ির বাসিন্দা প্রাণকৃষ্ণ কুমার দাস জানান, এই বাড়িতে একত্রে থাকতে তাঁদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। নিজেদের সমস্যা গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরাই সমাধান করেন। বাইরের কাউকে প্রয়োজন হয় না। মাঝে মাঝে ঝগড়া-বিবাদ হলেও তাঁরা একত্রেই থাকতে চান।

বাড়ির পরিবেশ এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে বলে মনে করেন বাসিন্দারা। এখানে এখন আগের চেয়ে শিক্ষিতের সংখ্যা বেশি। অনেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। কেউ পড়ালেখা শেষ করে ব্যবসা করছেন।

নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মামুন বলেন, ‘মেহারন দালালবাড়ির ঐতিহ্য রয়েছে। এ বাড়ি নিয়েই একটি ওয়ার্ড। সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। পেশায় অধিকাংশই মৎস্যজীবী ও নিরীহ। আমরা সব সময়ই তাঁদের পাশে আছি।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বি এইচ এম কবির আহমেদ বলেন, বাড়িটি সারা দেশের মধ্যে অনন্য। এই বাড়িতে আগে অনেক সমস্যা নিয়ে মানুষ বসবাস করত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই নতুন করে রাস্তাটি পাকা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত