Ajker Patrika

সংকটের অছিলায় বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ১০
সংকটের অছিলায় বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম

পেঁয়াজের দাম গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ৭ টাকা। আগামী এক মাস বাজারে পেঁয়াজের এই সংকট থাকবে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, আগামী মার্চের শেষে বাজারে হালি পেঁয়াজ আসবে। তখন দাম কমবে।

নিত্যপণ্য নিয়ে ভোক্তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। নিত্যপণ্যের দাম জানতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এও ফোন করছেন ভোক্তারা। ৯৯৯ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিনে জিনিসপত্রের দাম কেন কমছে না—জানতে চেয়ে শতাধিক ফোন পেয়েছেন তাঁরা। যারা ফোন করেছেন তাঁদের অধিকাংশের প্রশ্ন ছিল, সবজির দাম কবে কমবে? রোজায় পণ্যের দাম কমবে নাকি বাড়বে?

রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বুধবার তাদের বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৬-৩৮ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার তা বিক্রি হয়েছে ৪৩-৪৫ টাকায়। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৭ টাকা। আর গত সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪৫-৫০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা।

পেঁয়াজচাষি ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার কামারডাঙি গ্রামের আবদুল মাজেদ বলেন, এ বছর পেঁয়াজ আবাদ করে অনেকেই চালান তুলতে পারেননি। কয়েক মাস আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ তাঁরা ১৮-২০ টাকায় বিক্রি করেছেন। বর্তমানে এই পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। আগামী মার্চের শেষের দিকে বাজারে নতুন হালি পেঁয়াজ উঠবে। তখন দাম সহনীয় হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।

মাজেদ আরও বলেন, এ বছর কয়েক দফা বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়ার ভয়ে অনেকেই জমি থেকে আগেভাগে পেঁয়াজ তুলেছেন। এ পেঁয়াজে বেশি পরিমাণে সার দেওয়া হয়। ফলে এই মুড়িকাটা পেঁয়াজ বেশি দিন ঘরে সংরক্ষণ করা যায় না। বর্তমানে তাদের ৯০ শতাংশ পেঁয়াজের মজুত শেষ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে দাম বাড়লেও কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না। কারণ তাদের হাতে পেঁয়াজের মজুত নেই।

পেঁয়াজ চাষিরা জানান, পেঁয়াজ আবাদের প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই বেশি। কীটনাশক থেকে শুরু করে বীজের দাম অনেক বেড়েছে। শ্রমিকের মজুরি অনেক চড়া। বর্তমানে ৭০০-৭৫০ টাকার নিচে একজন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ কৃষকের উৎপাদিত রসুনের মণ ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষকেরা পেঁয়াজ-রসুন চাষে এগিয়ে আসবে না।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৯ টাকা। যা গতকাল মঙ্গলবার তা বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৪৯ টাকা। যা গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫৩ টাকায়।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে পেঁয়াজের মোট চাহিদা ২৫ লাখ মেট্রিক টন। দেশে উৎপাদন হয় ২৯ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। সংরক্ষণের কারণে প্রসেস লস হয় ২৫ শতাংশ। আর আমদানি করা পেঁয়াজ প্রসেস লস হয় ৮-১০ শতাংশ। দেশে বছরে পেঁয়াজ আমদানি হয় ৬-৭ লাখ মেট্রিক টন। বাজার যাতে অস্বাভাবিক না বাড়ে সে জন্য সরকার টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে। বর্তমানে দেশের পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ি, নওগাঁ, রাজশাহী ও নাটোরে পেঁয়াজ আবাদ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

পর্যটন শুরু কাল: সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চালাবেন না মালিকেরা

ময়মনসিংহের নান্দাইল: শত বছরের হাইত উৎসবে মাছশিকারিদের ঢল

সোয়া লাখের বদলে ৭৫০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র, বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকান

অনিশ্চয়তায় ঢাকা বিআরটি কোম্পানি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ