আয়নাল হোসেন, ঢাকা ও সবুর শুভ, চট্টগ্রাম

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
ভোটে জিতে নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে বাজারে লাগাম টানার একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে সব দিক থেকে। যেমন গতকাল রোববার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে চারজন মন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের মজুত ও আমদানি পরিস্থিতি, চলমান ডলার-সংকট ও ঋণপত্র সহজীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। মধ্যস্বত্বভোগী কেউ কারসাজি করে দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রমজান মাসে যেসব পণ্য বিক্রি হয়, তা জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। এসব পণ্যের এলসি করতে ডলারের কোনো সংকট নেই।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২২ লাখ টন, শুধু রমজান মাসে ৩ লাখ টন। চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন, রমজানে ৩ লাখ টন। খেজুরের চাহিদা ১ লাখ টন, রমজানে ৫০ হাজার টন। আর ছোলার চাহিদা ১ লাখ ২০ হাজার টন, রমজানে ১ লাখ টন।
মন্ত্রী-গভর্নররা এসব কথা বললেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী মেসার্স এস আলম এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী আলী আজগর বলেন, দেড় মাস আগে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৭৫-৭৬ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ৮৪-৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬২-৬৫ টাকার অ্যাংকর ডাল ৭০ টাকা, ৬৫ টাকার খেসারি ডাল ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি থেকে পণ্য আসে পাড়া-মহল্লার দোকানে। রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মেসার্স আল্লাহর দান স্টোরের ব্যবসায়ী শিপন আহমেদের দোকানে গতকাল প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ৮০ টাকা, চিনি ১৫০ টাকা, মুগ ডাল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ছিল ৮২৫ টাকা, বর্তমানে কোম্পানি ৮৪৬ টাকা করেছে। চিনিও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
দোকানি শিপন আহমেদ বলেন, ‘রোজার বাকি এখনো দুই মাস। অথচ ছোলা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার মনে হয়, রোজার সময় কেজি ১৫০ টাকা হবে।’
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে তেল-চিনির দামও বাড়তি। এক মাস আগে প্রতিমণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) চিনির দাম ছিল ৪ হাজার ৯০০ টাকা, গতকাল রোববার তা ৪ হাজার ৯৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪ হাজার ৮২০ টাকার পাম তেল ৪ হাজার ৮৫০ টাকা, ৫ হাজার ৯৩০ টাকার সয়াবিন তেল এখন ৫ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি আবুল হাসেম বলেন, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ দিলে রোজায় দাম আর বাড়বে না।
খেজুর আমদানিকারক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলার-সংকটে খেজুর আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে না। অপর দিকে খেজুরের শুল্কায়ন বেড়েছে অস্বাভাবিক। গত বছর প্রতি কেজি খেজুরে শুল্কায়ন হতো ৫-১০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ১৭৬-২৭৬ টাকা হয়েছে। গত বছর যে খেজুর ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে তা হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১২০-১৫০ টাকার খেজুর বর্তমানে ৩৫০ টাকা।
পেঁয়াজ ছাড়া অন্য পণ্যের আমদানি কমেছে
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৩ লাখ ৫৬ হাজার টন। আর সদ্য বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এলসি খোলা হয় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ টন। অর্থাৎ ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে আমদানি কম হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন। ২০২২ সালের একই সময়ে অপরিশোধিত পাম তেল আমদানি হয় ৯ লাখ ৪১ হাজার ২৯ টন। আর ২০২৩ সালে আমদানি হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৭১৫ টন, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন কম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও জানা যায়, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছিল ১২ লাখ ৬৮ হাজার টন। এ বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার টন। অর্থাৎ ৫ লাখ টন কম এসেছে। ২০২২ সালে মসুর ডাল আমদানি হয়েছিল ৩ লাখ ১ হাজার টন। আর ২০২৩ সালে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯৮ টন বা ১ লাখ ৪১ হাজার টন কম। ছোলা আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার টন। আর গত বছর ১ লাখ ১১ হাজার ২৪৬ টন বা ১ লাখ ১৮ হাজার টন কম। আর খেজুর আমদানি হয়েছিল ৪৬ হাজার টন। গত বছর এলসি খোলা হয়েছে ৪৪ হাজার টন।
তবে বেড়েছে পেঁয়াজের আমদানি। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানি হয়েছিল ৫ লাখ ১৯ হাজার টন। আর গত বছর একই সময় আমদানি হয় ৫ লাখ ৮৮ হাজার টন। অর্থাৎ বেড়েছে ৬৯ হাজার টন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে
আন্তর্জাতিক বাজারে গত দেড় মাসের ব্যবধানে চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর মধ্যে চিনি প্রায় ৫ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে।
এলসি খুলতে হিমশিম
ডলার-সংকটে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না বলে জানা গেছে। ব্যাংকে ধরনা দিলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি, খেজুরসহ আটটি খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানির সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, এসব পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করা যাবে। এই সুবিধায় আমদানির সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ব্যাংকে ডলার-সংকটে এ সুযোগ কাজে আসছে না।
খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এ জামান অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক নুরুল আলম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বাকিতে পণ্য আমদানির সুযোগ দিলেও ডলারের সংকটে ব্যাংক ঋণপত্র খুলছে না। এতে রমজানে নিত্যপণ্যের দামের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হবে। এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক বলেন, ডলার-সংকটের কারণে সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ীকে এলসি দেওয়া যাচ্ছে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানের পণ্য আমদানির উপযুক্ত সময় এখন। তবে ডলার-সংকটে আমদানি কম।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘পণ্য আমদানি ২০ বা ২৫ শতাংশ কম হলে বাজারে সরবরাহের সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য আমদানি বাড়ানোর পদক্ষেপ এবং কারসাজি রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
ভোটে জিতে নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে বাজারে লাগাম টানার একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে সব দিক থেকে। যেমন গতকাল রোববার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে চারজন মন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের মজুত ও আমদানি পরিস্থিতি, চলমান ডলার-সংকট ও ঋণপত্র সহজীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। মধ্যস্বত্বভোগী কেউ কারসাজি করে দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রমজান মাসে যেসব পণ্য বিক্রি হয়, তা জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। এসব পণ্যের এলসি করতে ডলারের কোনো সংকট নেই।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২২ লাখ টন, শুধু রমজান মাসে ৩ লাখ টন। চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন, রমজানে ৩ লাখ টন। খেজুরের চাহিদা ১ লাখ টন, রমজানে ৫০ হাজার টন। আর ছোলার চাহিদা ১ লাখ ২০ হাজার টন, রমজানে ১ লাখ টন।
মন্ত্রী-গভর্নররা এসব কথা বললেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী মেসার্স এস আলম এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী আলী আজগর বলেন, দেড় মাস আগে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৭৫-৭৬ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ৮৪-৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬২-৬৫ টাকার অ্যাংকর ডাল ৭০ টাকা, ৬৫ টাকার খেসারি ডাল ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি থেকে পণ্য আসে পাড়া-মহল্লার দোকানে। রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মেসার্স আল্লাহর দান স্টোরের ব্যবসায়ী শিপন আহমেদের দোকানে গতকাল প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ৮০ টাকা, চিনি ১৫০ টাকা, মুগ ডাল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ছিল ৮২৫ টাকা, বর্তমানে কোম্পানি ৮৪৬ টাকা করেছে। চিনিও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
দোকানি শিপন আহমেদ বলেন, ‘রোজার বাকি এখনো দুই মাস। অথচ ছোলা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার মনে হয়, রোজার সময় কেজি ১৫০ টাকা হবে।’
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে তেল-চিনির দামও বাড়তি। এক মাস আগে প্রতিমণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) চিনির দাম ছিল ৪ হাজার ৯০০ টাকা, গতকাল রোববার তা ৪ হাজার ৯৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪ হাজার ৮২০ টাকার পাম তেল ৪ হাজার ৮৫০ টাকা, ৫ হাজার ৯৩০ টাকার সয়াবিন তেল এখন ৫ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি আবুল হাসেম বলেন, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ দিলে রোজায় দাম আর বাড়বে না।
খেজুর আমদানিকারক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলার-সংকটে খেজুর আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে না। অপর দিকে খেজুরের শুল্কায়ন বেড়েছে অস্বাভাবিক। গত বছর প্রতি কেজি খেজুরে শুল্কায়ন হতো ৫-১০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ১৭৬-২৭৬ টাকা হয়েছে। গত বছর যে খেজুর ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে তা হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১২০-১৫০ টাকার খেজুর বর্তমানে ৩৫০ টাকা।
পেঁয়াজ ছাড়া অন্য পণ্যের আমদানি কমেছে
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৩ লাখ ৫৬ হাজার টন। আর সদ্য বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এলসি খোলা হয় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ টন। অর্থাৎ ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে আমদানি কম হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন। ২০২২ সালের একই সময়ে অপরিশোধিত পাম তেল আমদানি হয় ৯ লাখ ৪১ হাজার ২৯ টন। আর ২০২৩ সালে আমদানি হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৭১৫ টন, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন কম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও জানা যায়, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছিল ১২ লাখ ৬৮ হাজার টন। এ বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার টন। অর্থাৎ ৫ লাখ টন কম এসেছে। ২০২২ সালে মসুর ডাল আমদানি হয়েছিল ৩ লাখ ১ হাজার টন। আর ২০২৩ সালে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯৮ টন বা ১ লাখ ৪১ হাজার টন কম। ছোলা আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার টন। আর গত বছর ১ লাখ ১১ হাজার ২৪৬ টন বা ১ লাখ ১৮ হাজার টন কম। আর খেজুর আমদানি হয়েছিল ৪৬ হাজার টন। গত বছর এলসি খোলা হয়েছে ৪৪ হাজার টন।
তবে বেড়েছে পেঁয়াজের আমদানি। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানি হয়েছিল ৫ লাখ ১৯ হাজার টন। আর গত বছর একই সময় আমদানি হয় ৫ লাখ ৮৮ হাজার টন। অর্থাৎ বেড়েছে ৬৯ হাজার টন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে
আন্তর্জাতিক বাজারে গত দেড় মাসের ব্যবধানে চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর মধ্যে চিনি প্রায় ৫ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে।
এলসি খুলতে হিমশিম
ডলার-সংকটে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না বলে জানা গেছে। ব্যাংকে ধরনা দিলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি, খেজুরসহ আটটি খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানির সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, এসব পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করা যাবে। এই সুবিধায় আমদানির সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ব্যাংকে ডলার-সংকটে এ সুযোগ কাজে আসছে না।
খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এ জামান অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক নুরুল আলম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বাকিতে পণ্য আমদানির সুযোগ দিলেও ডলারের সংকটে ব্যাংক ঋণপত্র খুলছে না। এতে রমজানে নিত্যপণ্যের দামের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হবে। এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক বলেন, ডলার-সংকটের কারণে সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ীকে এলসি দেওয়া যাচ্ছে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানের পণ্য আমদানির উপযুক্ত সময় এখন। তবে ডলার-সংকটে আমদানি কম।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘পণ্য আমদানি ২০ বা ২৫ শতাংশ কম হলে বাজারে সরবরাহের সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য আমদানি বাড়ানোর পদক্ষেপ এবং কারসাজি রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
আয়নাল হোসেন, ঢাকা ও সবুর শুভ, চট্টগ্রাম

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
ভোটে জিতে নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে বাজারে লাগাম টানার একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে সব দিক থেকে। যেমন গতকাল রোববার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে চারজন মন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের মজুত ও আমদানি পরিস্থিতি, চলমান ডলার-সংকট ও ঋণপত্র সহজীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। মধ্যস্বত্বভোগী কেউ কারসাজি করে দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রমজান মাসে যেসব পণ্য বিক্রি হয়, তা জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। এসব পণ্যের এলসি করতে ডলারের কোনো সংকট নেই।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২২ লাখ টন, শুধু রমজান মাসে ৩ লাখ টন। চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন, রমজানে ৩ লাখ টন। খেজুরের চাহিদা ১ লাখ টন, রমজানে ৫০ হাজার টন। আর ছোলার চাহিদা ১ লাখ ২০ হাজার টন, রমজানে ১ লাখ টন।
মন্ত্রী-গভর্নররা এসব কথা বললেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী মেসার্স এস আলম এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী আলী আজগর বলেন, দেড় মাস আগে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৭৫-৭৬ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ৮৪-৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬২-৬৫ টাকার অ্যাংকর ডাল ৭০ টাকা, ৬৫ টাকার খেসারি ডাল ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি থেকে পণ্য আসে পাড়া-মহল্লার দোকানে। রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মেসার্স আল্লাহর দান স্টোরের ব্যবসায়ী শিপন আহমেদের দোকানে গতকাল প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ৮০ টাকা, চিনি ১৫০ টাকা, মুগ ডাল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ছিল ৮২৫ টাকা, বর্তমানে কোম্পানি ৮৪৬ টাকা করেছে। চিনিও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
দোকানি শিপন আহমেদ বলেন, ‘রোজার বাকি এখনো দুই মাস। অথচ ছোলা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার মনে হয়, রোজার সময় কেজি ১৫০ টাকা হবে।’
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে তেল-চিনির দামও বাড়তি। এক মাস আগে প্রতিমণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) চিনির দাম ছিল ৪ হাজার ৯০০ টাকা, গতকাল রোববার তা ৪ হাজার ৯৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪ হাজার ৮২০ টাকার পাম তেল ৪ হাজার ৮৫০ টাকা, ৫ হাজার ৯৩০ টাকার সয়াবিন তেল এখন ৫ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি আবুল হাসেম বলেন, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ দিলে রোজায় দাম আর বাড়বে না।
খেজুর আমদানিকারক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলার-সংকটে খেজুর আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে না। অপর দিকে খেজুরের শুল্কায়ন বেড়েছে অস্বাভাবিক। গত বছর প্রতি কেজি খেজুরে শুল্কায়ন হতো ৫-১০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ১৭৬-২৭৬ টাকা হয়েছে। গত বছর যে খেজুর ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে তা হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১২০-১৫০ টাকার খেজুর বর্তমানে ৩৫০ টাকা।
পেঁয়াজ ছাড়া অন্য পণ্যের আমদানি কমেছে
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৩ লাখ ৫৬ হাজার টন। আর সদ্য বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এলসি খোলা হয় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ টন। অর্থাৎ ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে আমদানি কম হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন। ২০২২ সালের একই সময়ে অপরিশোধিত পাম তেল আমদানি হয় ৯ লাখ ৪১ হাজার ২৯ টন। আর ২০২৩ সালে আমদানি হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৭১৫ টন, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন কম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও জানা যায়, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছিল ১২ লাখ ৬৮ হাজার টন। এ বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার টন। অর্থাৎ ৫ লাখ টন কম এসেছে। ২০২২ সালে মসুর ডাল আমদানি হয়েছিল ৩ লাখ ১ হাজার টন। আর ২০২৩ সালে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯৮ টন বা ১ লাখ ৪১ হাজার টন কম। ছোলা আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার টন। আর গত বছর ১ লাখ ১১ হাজার ২৪৬ টন বা ১ লাখ ১৮ হাজার টন কম। আর খেজুর আমদানি হয়েছিল ৪৬ হাজার টন। গত বছর এলসি খোলা হয়েছে ৪৪ হাজার টন।
তবে বেড়েছে পেঁয়াজের আমদানি। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানি হয়েছিল ৫ লাখ ১৯ হাজার টন। আর গত বছর একই সময় আমদানি হয় ৫ লাখ ৮৮ হাজার টন। অর্থাৎ বেড়েছে ৬৯ হাজার টন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে
আন্তর্জাতিক বাজারে গত দেড় মাসের ব্যবধানে চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর মধ্যে চিনি প্রায় ৫ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে।
এলসি খুলতে হিমশিম
ডলার-সংকটে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না বলে জানা গেছে। ব্যাংকে ধরনা দিলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি, খেজুরসহ আটটি খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানির সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, এসব পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করা যাবে। এই সুবিধায় আমদানির সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ব্যাংকে ডলার-সংকটে এ সুযোগ কাজে আসছে না।
খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এ জামান অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক নুরুল আলম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বাকিতে পণ্য আমদানির সুযোগ দিলেও ডলারের সংকটে ব্যাংক ঋণপত্র খুলছে না। এতে রমজানে নিত্যপণ্যের দামের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হবে। এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক বলেন, ডলার-সংকটের কারণে সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ীকে এলসি দেওয়া যাচ্ছে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানের পণ্য আমদানির উপযুক্ত সময় এখন। তবে ডলার-সংকটে আমদানি কম।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘পণ্য আমদানি ২০ বা ২৫ শতাংশ কম হলে বাজারে সরবরাহের সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য আমদানি বাড়ানোর পদক্ষেপ এবং কারসাজি রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
ভোটে জিতে নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে বাজারে লাগাম টানার একটা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে সব দিক থেকে। যেমন গতকাল রোববার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে চারজন মন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের মজুত ও আমদানি পরিস্থিতি, চলমান ডলার-সংকট ও ঋণপত্র সহজীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। মধ্যস্বত্বভোগী কেউ কারসাজি করে দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রমজান মাসে যেসব পণ্য বিক্রি হয়, তা জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। এসব পণ্যের এলসি করতে ডলারের কোনো সংকট নেই।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২২ লাখ টন, শুধু রমজান মাসে ৩ লাখ টন। চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন, রমজানে ৩ লাখ টন। খেজুরের চাহিদা ১ লাখ টন, রমজানে ৫০ হাজার টন। আর ছোলার চাহিদা ১ লাখ ২০ হাজার টন, রমজানে ১ লাখ টন।
মন্ত্রী-গভর্নররা এসব কথা বললেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী মেসার্স এস আলম এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী আলী আজগর বলেন, দেড় মাস আগে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৭৫-৭৬ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ৮৪-৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬২-৬৫ টাকার অ্যাংকর ডাল ৭০ টাকা, ৬৫ টাকার খেসারি ডাল ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি থেকে পণ্য আসে পাড়া-মহল্লার দোকানে। রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মেসার্স আল্লাহর দান স্টোরের ব্যবসায়ী শিপন আহমেদের দোকানে গতকাল প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ৮০ টাকা, চিনি ১৫০ টাকা, মুগ ডাল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ছিল ৮২৫ টাকা, বর্তমানে কোম্পানি ৮৪৬ টাকা করেছে। চিনিও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
দোকানি শিপন আহমেদ বলেন, ‘রোজার বাকি এখনো দুই মাস। অথচ ছোলা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার মনে হয়, রোজার সময় কেজি ১৫০ টাকা হবে।’
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে তেল-চিনির দামও বাড়তি। এক মাস আগে প্রতিমণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) চিনির দাম ছিল ৪ হাজার ৯০০ টাকা, গতকাল রোববার তা ৪ হাজার ৯৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪ হাজার ৮২০ টাকার পাম তেল ৪ হাজার ৮৫০ টাকা, ৫ হাজার ৯৩০ টাকার সয়াবিন তেল এখন ৫ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি আবুল হাসেম বলেন, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ দিলে রোজায় দাম আর বাড়বে না।
খেজুর আমদানিকারক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলার-সংকটে খেজুর আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে না। অপর দিকে খেজুরের শুল্কায়ন বেড়েছে অস্বাভাবিক। গত বছর প্রতি কেজি খেজুরে শুল্কায়ন হতো ৫-১০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ১৭৬-২৭৬ টাকা হয়েছে। গত বছর যে খেজুর ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে তা হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১২০-১৫০ টাকার খেজুর বর্তমানে ৩৫০ টাকা।
পেঁয়াজ ছাড়া অন্য পণ্যের আমদানি কমেছে
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৩ লাখ ৫৬ হাজার টন। আর সদ্য বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এলসি খোলা হয় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩০০ টন। অর্থাৎ ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে আমদানি কম হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন। ২০২২ সালের একই সময়ে অপরিশোধিত পাম তেল আমদানি হয় ৯ লাখ ৪১ হাজার ২৯ টন। আর ২০২৩ সালে আমদানি হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৭১৫ টন, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন কম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও জানা যায়, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছিল ১২ লাখ ৬৮ হাজার টন। এ বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার টন। অর্থাৎ ৫ লাখ টন কম এসেছে। ২০২২ সালে মসুর ডাল আমদানি হয়েছিল ৩ লাখ ১ হাজার টন। আর ২০২৩ সালে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯৮ টন বা ১ লাখ ৪১ হাজার টন কম। ছোলা আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার টন। আর গত বছর ১ লাখ ১১ হাজার ২৪৬ টন বা ১ লাখ ১৮ হাজার টন কম। আর খেজুর আমদানি হয়েছিল ৪৬ হাজার টন। গত বছর এলসি খোলা হয়েছে ৪৪ হাজার টন।
তবে বেড়েছে পেঁয়াজের আমদানি। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানি হয়েছিল ৫ লাখ ১৯ হাজার টন। আর গত বছর একই সময় আমদানি হয় ৫ লাখ ৮৮ হাজার টন। অর্থাৎ বেড়েছে ৬৯ হাজার টন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে
আন্তর্জাতিক বাজারে গত দেড় মাসের ব্যবধানে চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর মধ্যে চিনি প্রায় ৫ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও ছোলার দাম ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে।
এলসি খুলতে হিমশিম
ডলার-সংকটে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না বলে জানা গেছে। ব্যাংকে ধরনা দিলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি, খেজুরসহ আটটি খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানির সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, এসব পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করা যাবে। এই সুবিধায় আমদানির সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ব্যাংকে ডলার-সংকটে এ সুযোগ কাজে আসছে না।
খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এ জামান অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক নুরুল আলম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বাকিতে পণ্য আমদানির সুযোগ দিলেও ডলারের সংকটে ব্যাংক ঋণপত্র খুলছে না। এতে রমজানে নিত্যপণ্যের দামের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হবে। এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক বলেন, ডলার-সংকটের কারণে সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ীকে এলসি দেওয়া যাচ্ছে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানের পণ্য আমদানির উপযুক্ত সময় এখন। তবে ডলার-সংকটে আমদানি কম।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘পণ্য আমদানি ২০ বা ২৫ শতাংশ কম হলে বাজারে সরবরাহের সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য আমদানি বাড়ানোর পদক্ষেপ এবং কারসাজি রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
২২ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
২২ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
২২ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রমজানের বাকি এখন প্রায় দুই মাস। অথচ রোজার বাজারে বেশি চাহিদা থাকা সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে বেশ কিছুটা। দাম বাড়ার পেছনে ডলার-সংকটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের সংকট নেই।
২২ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫