Ajker Patrika

রোগীর ভিড়, সেবা ব্যাহত

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৩৬
রোগীর ভিড়, সেবা ব্যাহত

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে হঠাৎ বেড়েছে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশিজনিত রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ৪০ শতাংশই শিশু। রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।

তা ছাড়া শয্যাসংকটও প্রকট। শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দা ও করিডরের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ভর্তি হওয়া অন্তত ৫০ শতাংশ রোগীকে। ফ্যান না থাকায় তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগী ও রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনেরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৫১টি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে চিকিৎসকদের ৩১টি পদ। আর ৮২ জন নার্সের পদ থাকলেও পদায়ন করা হয়েছে ৫৯ জন। গত মাসের ২৬ তারিখ থেকে হাসপাতালে আন্ত ও বহির্বিভাগে রোগীর চাপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ রোগীকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। আর ১০০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকছে ১৮০ থেকে ২০০ জন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা অর্ধেকের বেশি।

শিশুর জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগের উপসর্গ নিয়ে ৩ অক্টোবর হাসপাতাল আসেন রুদ্রকর গ্রামের মতি ফরায়জী। পরে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ওই দিন দুপুরে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত শিশুটির জন্য কোনো সিট পাননি তিনি। হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের সিঁড়ির পাশের মেঝেতে কোনো রকমে চাদর বিছিয়ে ছেলের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে তাঁকে। মতি ফরায়জী বলেন, ‘অসুস্থ শিশুটি নিয়ে তিন দিন ধরে নোংরা পরিবেশে থাকতে হচ্ছে। এখানে কোনো ফ্যান না থাকায় শিশুটিসহ আমরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছি। সারা দিন সিঁড়ি দিয়ে মানুষ ওঠানামা করে। তখন প্রচুর ধুলাবালি আমাদের শরীরে পড়ে।’

মতি ফরায়জীর শিশুসন্তানের মতো এমন আরও অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জন শিশু ও নারীসহ অন্য রোগীদের ভাগ্যেও জোটেনি হাসপাতালের শয্যা। ফলে প্রচণ্ড গরমে অন্ধকার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাঁদের।

জেলা শহরের শান্তিনগর আবাসিক এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে এসে ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নাতিকে ডাক্তার দেখাতে পারেননি ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ আম্বিয়া খাতুন। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও নাতিকে ডাক্তার দেখাতে পারিনি। রোগী আসছে শত শত। ডাক্তার মাত্র একজন। আমি বুড়ো মানুষ। ভিড় ঠেলে ডাক্তারের কাছে যেতে পারিনি। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কাল (আজ বৃহস্পতিবার) আবার আসতে হবে। কী আর করা।’

হাসপাতালে কর্মরত শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফিরোজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১০ দিন ধরে আউটডোর ও ইনডোরে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিতে আসছে। চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের মধ্যে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশিজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি। আবহাওয়া পরিবর্তনের কিছুটা প্রভাবের কারণে এমনটি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুনীর আহমদ খান বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালটিতে ১৮৭ জন রোগী ভর্তি আছে। অথচ আমাদের সিট রয়েছে ১০০টি। হাসপাতালে বারান্দা ও মেঝেতে জরুরি ভিত্তিতে বিছানার ব্যবস্থা করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া চিকিৎসকসংকট থাকায় সেবা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত