তানিম আহমেদ, ঢাকা
এত বড় দল। এতগুলো সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। কিন্তু কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ সবাই। এখন সেই ব্যর্থতার কারণ খুঁজছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘এদের মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট।’ কিন্তু বাস্তবে হলো উল্টো। ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের আবেগ, মাঠের বাস্তব চিত্র অনুধাবন করতে তো পারেইনি; উল্টো শক্তি প্রয়োগ করতে গিয়ে নিজেরাই ক্যাম্পাস-ছাড়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার কোনো উদ্যোগ নেননি দলের নেতারাও। শেষে আন্দোলন যখন সহিংস রূপ নেয়, তখনো সাংগঠনিকভাবে মাঠে থাকেনি কোনো সংগঠন। এই যে বড় ধরনের সাংগঠনিক ব্যর্থতা, তা নিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। নেতারা বলছেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড কমিটি না থাকা, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দলে সুবিধাবাদী শ্রেণি গড়ে উঠলেও প্রয়োজনের সময় তাদের মাঠে পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে রাজধানীর বেশির ভাগ সংসদীয় আসনের এমপি, জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। আন্দোলনের শুরুতে ছাত্রলীগের তর্জন-গর্জন দেখা গেলেও শেষে তাদের অন্তঃসারশূন্য সাংগঠনিক দুর্বলতা আওয়ামী লীগকে ভাবাচ্ছে।
গত কয়েক দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের মধ্যে মূল্যায়ন শুরু করেছে। মঙ্গলবার এ নিয়ে যৌথ সভা করা হয়। সেখানে কেন্দ্রীয়, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের ব্রিফ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানান, ওবায়দুল কাদের তাঁদের বলেছেন, সহিংসতা মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের মাঠে রাখতে না পারাটাই দলীয় সাংগঠনিক ব্যর্থতা। কোটা আন্দোলনে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক ব্যর্থতাও সামনে এসেছে বলে জানান কাদের।
গতকাল বুধবার ঢাকা-৪, ৫ এবং ১৮ সংসদীয় আসনের এমপি, থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা এবং কাউন্সিলরদের নিয়ে তেজগাঁওয়ে মতবিনিময় সভা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে থানা পর্যায়ের নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন, আবার একাধিক নেতা নিজেকে জাহির করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা বড় গলায় বলেন, তিনি নিজে মাঠে ছিলেন এবং তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০ মিনিটের মতো কথা বলেন। উত্তরা এলাকার একটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হলেও আন্দোলনের সময় তিনি ধানমন্ডির ২৭ নম্বর পুরোনো সড়কে ছিলেন বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা তাঁকে থামিয়ে দেন। নেতারা পরস্পরকে দোষারোপ করলে দলটির এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থামিয়ে দিয়ে বলেন, এখন পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করে, দলাদলি করে কোনো লাভ হবে না। ভবিষ্যতে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক ভিত যথেষ্ট আছে। এটাকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু দুর্বলতা আছেই। সেই দুর্বলতাকে মেরামত করতে হবে। দুর্বলতা দূর করে সবাইকে সংগঠিত করতে হবে।’
গত কয়েক দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানা পর্যায়ের কমপক্ষে ১০ নেতার সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তাঁরা সংগঠনের ব্যর্থতা নিয়ে নানান মন্তব্য করেন। তবে প্রকাশ্য এ নিয়ে কথা বলতে চাননি কেউই।
এক নেতা বলেন, মূল ব্যর্থতা হলো গত ১৫ বছরে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি নেই। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ দীর্ঘদিন ধরে চলছে ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা অনেক নেতার কাছ থেকে নিজস্ব লোকেরা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। সেসব সুবিধাবাদীরা গত কয়েক দিনের বিশেষ পরিস্থিতিতে মাঠে ছিল না। সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেকেই মাঠে থেকে সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছেন।
থানা পর্যায়ের নেতাদের অভিযোগ, আন্দোলন মোকাবিলায় নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকলেও প্রয়োজনের সময় বেশির ভাগ স্থানীয় এমপি, মেয়র, কাউন্সিলরদের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তাঁরা আর্থিক সংকটে থাকলেও তেমন সাহায্য করা হয়নি।
ঢাকা দক্ষিণের থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের খোঁজ নেননি এমপিরা। নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখতে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি। বৃহস্পতি-শুক্রবার সহিংসতা নেতা-কর্মীদের আয়ত্তের বাইরে গেলেও এর আগে হাতে গোনা দুজন এমপি ছাড়া কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
ঢাকা জেলায় সংসদীয় আসন ২০টি। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৬টির অবস্থান। তিনজন আওয়ামী লীগদলীয় স্বতন্ত্র এমপি। বাকি ১৩ জন নৌকা প্রতীকেই এমপি হয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ৫৪ এবং দক্ষিণে ৭৪ জন। চলমান ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে হাতে গোনা দু-একজন এমপি ও কয়েকজন কাউন্সিলর মাঠে ছিলেন।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজধানীতে ব্যাপক সহিংসতায় জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের নেতা-কর্মীদের তেমন মাঠে দেখা যায়নি। আবার উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, বাড্ডা, রামপুরা এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামার চেষ্টা করলেও সহিংসতাকারীদের তোপের মুখে মাঠ ছাড়েন তাঁরা। পল্টনসহ কিছু এলাকায় পুলিশের পেছনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শতাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন। তবে শুক্রবার সেখানে হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর অবস্থান দেখা যায়।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কদমতলী, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, রামপুরাসহ কয়েকটি এলাকায় টানা তিন-চার দিন সংঘর্ষ হয়। এসব এলাকার মধ্যে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কদমতলী ও উত্তরার এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও তাঁদের আওয়ামী লীগের পদবি রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, জাতীয় নির্বাচন উন্মুক্ত রাখায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দলাদলি তৈরি হয়েছে। স্বতন্ত্র এমপিরা দলে বেকায়দায় আছেন। এ আন্দোলনে তাঁদের কর্মকাণ্ডকে কে কোন দিক দিয়ে ব্যবহার করবে, এমন দুর্ভাবনা অনেকের মধ্যে ছিল। এতে অনেকেই মাঠে ছিলেন না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দলের সাংগঠনিক ব্যর্থতা তেমন কিছু নেই। ছাত্রদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেক রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-বিএনপি সম্পৃক্ত হয়ে ধ্বংসলীলা করেছে। অনেক তাণ্ডব করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারি, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। নিজেদের আরও সুসংগঠিত করা এবং সমন্বয় আরও বৃদ্ধির জন্য কাজ শুরু করেছি।’
এত বড় দল। এতগুলো সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। কিন্তু কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ সবাই। এখন সেই ব্যর্থতার কারণ খুঁজছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘এদের মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট।’ কিন্তু বাস্তবে হলো উল্টো। ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের আবেগ, মাঠের বাস্তব চিত্র অনুধাবন করতে তো পারেইনি; উল্টো শক্তি প্রয়োগ করতে গিয়ে নিজেরাই ক্যাম্পাস-ছাড়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার কোনো উদ্যোগ নেননি দলের নেতারাও। শেষে আন্দোলন যখন সহিংস রূপ নেয়, তখনো সাংগঠনিকভাবে মাঠে থাকেনি কোনো সংগঠন। এই যে বড় ধরনের সাংগঠনিক ব্যর্থতা, তা নিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। নেতারা বলছেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড কমিটি না থাকা, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দলে সুবিধাবাদী শ্রেণি গড়ে উঠলেও প্রয়োজনের সময় তাদের মাঠে পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে রাজধানীর বেশির ভাগ সংসদীয় আসনের এমপি, জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। আন্দোলনের শুরুতে ছাত্রলীগের তর্জন-গর্জন দেখা গেলেও শেষে তাদের অন্তঃসারশূন্য সাংগঠনিক দুর্বলতা আওয়ামী লীগকে ভাবাচ্ছে।
গত কয়েক দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের মধ্যে মূল্যায়ন শুরু করেছে। মঙ্গলবার এ নিয়ে যৌথ সভা করা হয়। সেখানে কেন্দ্রীয়, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের ব্রিফ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানান, ওবায়দুল কাদের তাঁদের বলেছেন, সহিংসতা মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের মাঠে রাখতে না পারাটাই দলীয় সাংগঠনিক ব্যর্থতা। কোটা আন্দোলনে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক ব্যর্থতাও সামনে এসেছে বলে জানান কাদের।
গতকাল বুধবার ঢাকা-৪, ৫ এবং ১৮ সংসদীয় আসনের এমপি, থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা এবং কাউন্সিলরদের নিয়ে তেজগাঁওয়ে মতবিনিময় সভা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে থানা পর্যায়ের নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন, আবার একাধিক নেতা নিজেকে জাহির করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা বড় গলায় বলেন, তিনি নিজে মাঠে ছিলেন এবং তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০ মিনিটের মতো কথা বলেন। উত্তরা এলাকার একটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হলেও আন্দোলনের সময় তিনি ধানমন্ডির ২৭ নম্বর পুরোনো সড়কে ছিলেন বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা তাঁকে থামিয়ে দেন। নেতারা পরস্পরকে দোষারোপ করলে দলটির এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থামিয়ে দিয়ে বলেন, এখন পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করে, দলাদলি করে কোনো লাভ হবে না। ভবিষ্যতে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক ভিত যথেষ্ট আছে। এটাকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু দুর্বলতা আছেই। সেই দুর্বলতাকে মেরামত করতে হবে। দুর্বলতা দূর করে সবাইকে সংগঠিত করতে হবে।’
গত কয়েক দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানা পর্যায়ের কমপক্ষে ১০ নেতার সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তাঁরা সংগঠনের ব্যর্থতা নিয়ে নানান মন্তব্য করেন। তবে প্রকাশ্য এ নিয়ে কথা বলতে চাননি কেউই।
এক নেতা বলেন, মূল ব্যর্থতা হলো গত ১৫ বছরে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি নেই। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ দীর্ঘদিন ধরে চলছে ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা অনেক নেতার কাছ থেকে নিজস্ব লোকেরা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। সেসব সুবিধাবাদীরা গত কয়েক দিনের বিশেষ পরিস্থিতিতে মাঠে ছিল না। সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেকেই মাঠে থেকে সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছেন।
থানা পর্যায়ের নেতাদের অভিযোগ, আন্দোলন মোকাবিলায় নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকলেও প্রয়োজনের সময় বেশির ভাগ স্থানীয় এমপি, মেয়র, কাউন্সিলরদের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তাঁরা আর্থিক সংকটে থাকলেও তেমন সাহায্য করা হয়নি।
ঢাকা দক্ষিণের থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের খোঁজ নেননি এমপিরা। নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখতে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি। বৃহস্পতি-শুক্রবার সহিংসতা নেতা-কর্মীদের আয়ত্তের বাইরে গেলেও এর আগে হাতে গোনা দুজন এমপি ছাড়া কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
ঢাকা জেলায় সংসদীয় আসন ২০টি। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৬টির অবস্থান। তিনজন আওয়ামী লীগদলীয় স্বতন্ত্র এমপি। বাকি ১৩ জন নৌকা প্রতীকেই এমপি হয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ৫৪ এবং দক্ষিণে ৭৪ জন। চলমান ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে হাতে গোনা দু-একজন এমপি ও কয়েকজন কাউন্সিলর মাঠে ছিলেন।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজধানীতে ব্যাপক সহিংসতায় জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের নেতা-কর্মীদের তেমন মাঠে দেখা যায়নি। আবার উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, বাড্ডা, রামপুরা এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামার চেষ্টা করলেও সহিংসতাকারীদের তোপের মুখে মাঠ ছাড়েন তাঁরা। পল্টনসহ কিছু এলাকায় পুলিশের পেছনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শতাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন। তবে শুক্রবার সেখানে হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর অবস্থান দেখা যায়।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কদমতলী, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, রামপুরাসহ কয়েকটি এলাকায় টানা তিন-চার দিন সংঘর্ষ হয়। এসব এলাকার মধ্যে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কদমতলী ও উত্তরার এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও তাঁদের আওয়ামী লীগের পদবি রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, জাতীয় নির্বাচন উন্মুক্ত রাখায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দলাদলি তৈরি হয়েছে। স্বতন্ত্র এমপিরা দলে বেকায়দায় আছেন। এ আন্দোলনে তাঁদের কর্মকাণ্ডকে কে কোন দিক দিয়ে ব্যবহার করবে, এমন দুর্ভাবনা অনেকের মধ্যে ছিল। এতে অনেকেই মাঠে ছিলেন না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দলের সাংগঠনিক ব্যর্থতা তেমন কিছু নেই। ছাত্রদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেক রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-বিএনপি সম্পৃক্ত হয়ে ধ্বংসলীলা করেছে। অনেক তাণ্ডব করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারি, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। নিজেদের আরও সুসংগঠিত করা এবং সমন্বয় আরও বৃদ্ধির জন্য কাজ শুরু করেছি।’
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৯ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪