Ajker Patrika

পাহাড়ি ঢলে ফসলের ক্ষতি

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) ও হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট)
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ৫৫
পাহাড়ি ঢলে ফসলের ক্ষতি

পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বিস্তীর্ণ ফসলের খেত তলিয়ে গেছে। পেঁয়াজ, মরিচ, পাটসহ অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া তিস্তা নদীতে পানি বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকেরা।

নাগেশ্বরী: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে শাকসবজিচাষিরা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ ছাড়া পাট, ভুট্টাসহ নিম্নাঞ্চলের বোরো আবাদেও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত থেমে থেমে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে কুড়িগ্রামে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগার থেকে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর থেকে গতকাল সোমবার ১০টা পর্যন্ত ১৭১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জেলার কিছু কিছু এলাকায় আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে।

নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের বেগুনীপাড়ার সবজিচাষি আলতাফ হোসেন জানান, অতি বৃষ্টির ফলে তাঁর দুই বিঘা জমির বেগুনগাছ নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া চালকুমড়ার গাছও মরে যাচ্ছে।

কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের কৃষক কুদ্দুস মিয়া জানান, তাঁর আধা বিঘা পেঁয়াজখেত বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে, তাই পরিপক্ব হওয়ার আগেই তুলতে হয়েছে। একই এলাকার আব্দুল কাদের বলেন, চৈত্র মাসের এমন বৃষ্টি প্রায় দুই যুগ দেখেননি তিনি। এই বৃষ্টিতে শাকসবজির আবাদ নষ্ট হয়েছে তাঁর।

নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। তবে ফসলের খেত থেকে পানি নেমে যাওয়ায় তেমন একটা ক্ষতির আশঙ্কা নেই।

হাতীবান্ধা: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ভারী বৃষ্টির ফলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায়। এতে চরের কৃষকদের চাষ করা পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মরিচ, ভুট্টা, লাউ, কুমড়া, তরমুজ, শসা ও মসলাজাতীয় অনেক ফসলের খেত পনিতে তলিয়ে গেছে।

গতকাল দুপুরে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা ব্যারাজের বেশির ভাগ গেট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেরা মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু পানি বৃদ্ধির ফলে কৃষকদের তলিয়ে যাওয়া ফসলগুলো নৌকায় করে এনে রোদে শুকাচ্ছেন তাঁরা।

চরাঞ্চলের কৃষক গোলাম রব্বানি বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমির পেঁয়াজ পানিতে তলিয়ে গেছে। নৌকায় গিয়ে সেই পেঁয়াজ তুলে এনে রোদে শুকানো হচ্ছে। হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার এই ক্ষতি হয়েছে।’ একই কথা বলেন আরেক কৃষক দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আমি কী করব। পুরো পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এ বিষয়ে তিস্তা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, ‘হঠাৎ গত কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি এখনো বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু অসময়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে শুনেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত