Ajker Patrika

শ্রীবরদীতে সারের কৃত্রিম সংকট, বেশি দামে বিক্রি

ফরিদ আহম্মেদ রুবেল, শ্রীবরদী (শেরপুর)
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৬
শ্রীবরদীতে সারের কৃত্রিম সংকট, বেশি দামে বিক্রি

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বাড়তি দামে এমওপি (পটাশ) সার বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষকদের অভিযোগ, ডিলার বা বাজারের খোলা দোকানে সার কিনতে গেলে বলে সার নেই। আবার বেশি টাকা দিলে মেলে সার। কৃষি অফিস থেকে বলা হয়েছে, সারের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। কয়েক দিন আগে সার সরবরাহ কম ছিল, বর্তমানে সারের কোনো সংকট নেই। সার সংকটের অজুহাতে কেউ বাড়তি টাকা নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এমওপি সার ধানের চারা লাগানোর সময় একবার এবং শিষ বের হওয়ার আগে আরেকবার খেতে দিতে হয়। বর্তমানে ধানের চারা লাগানোর সময়। তাই কৃষকদের প্রচুর পরিমাণ সার দরকার হচ্ছে। এমওপি সার প্রতি বস্তা ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু নির্ধারিত দামে সার কিনতে গেলে বলে সার নেই। তবে বাড়তি টাকা দিলে পাওয়া যায় সার। গত সাত-আট দিন ধরে এমন অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

সাতানী শ্রীবরদী গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘সার নেই বাজারে, বেশি দাম দিলে গোডাউনের কথা বলে সার নিয়ে আহে। এ জন্য বেশি দামেই কিনতাছি। কী আর করার আছে।’ 
শ্রীবরদী উপজেলা জালকাটা এলাকার কৃষক আলম মিয়া বলেন, ‘বাপু কয়েক দিন ধরে খুব ঝামেলার মধ্যে আছি, বাজারে সার কিনবার গেলে আমারে দেখেই বলে সার নেই, কারণ আমি পরিচিত মানুষ, আমার কাছে বেশি দাম কীভাবে নিবে? কিন্তু অপরিচিত লোক পাঠালে বেশি দাম নিয়ে সার বিক্রি করতেছে। এহন আপনারাই কন, বিপদ না তালে আমার?’

আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘লংগরপাড়া বাজর থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে এক বস্তা সার নিয়ে আইলাম। দিবারই চায় না, জোর করে আনছি। শ্রীবরদী বাজারে কিনবার গেছিলাম, দোকানদার বলে সার নাই।’

উপজেলার কয়েকজন সার ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এমওপি সার তাদের কাছে নেই। আবার কয়েকটি দোকানে কিছু আছে, যা সরকারি মূল্যের চেয়ে প্রতি বস্তায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি। আবার এসব সার খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা বস্তা।

শ্রীবরদী উত্তর বাজারের মেসার্স বিজয় ট্রেডার্সের মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সার বিএডিসি সরবরাহ করতে পারছে না বিধায় বাজারে সংকট রয়েছে। দুই দিন আগে আমি কিছু সার পেয়েছিলাম, তা সরকারি দামেই কৃষকের কাছে বিক্রি করেছি। তবে বাইরের খোলা বাজারে হয়তো দাম বেশি নিতে পারে, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।’

জেলা সার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাসেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিএডিসি সরবরাহ করতে না পারায় বাজারে এমওপির সংকট। তবে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে তা ঠিক নয়। তার পরও আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।’

শেরপুর বিএডিসি গুদামের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল আলম বলেন, এ মাসের ১ তারিখে ৭৩৬ টন এমওপি ডিলারদের সরবরাহ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সরকার শেরপুরের জন্য আরও এমওপি পাঠাতে চেয়েছে। গুদামে জায়গা না থাকায় নেওয়া যায়নি। এখন জায়গা খালি হয়েছে। এমওপি আসা শুরু হয়েছে। ডিলারদের চাহিদামতো সরবরাহ করা হবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, সারের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো ডিলার বা খুচরা বিক্রেতা বেশি নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মুহিত কুমার দে বলেন, কয়েক দিন আগে সার সরবরাহ কম ছিল। বর্তমানে সারের কোনো সংকট নেই। তবে সংকটের অজুহাতে কেউ বাড়তি টাকা নিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত