Ajker Patrika

ফসলি জমির মাটি কেটে রাস্তায়, আদালতে মামলা

শহিদুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২: ৫৬
ফসলি জমির মাটি কেটে রাস্তায়, আদালতে মামলা

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া চরাঞ্চলে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে পাকা রাস্তা নির্মাণকাজে শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নিয়ম না মেনে খননযন্ত্র দিয়ে কৃষকদের ফসলি জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলছে। এতে বাধা দিতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে তেওতা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর যমুনাবাজার থেকে আলোকদিয়া আশ্রয়কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার নতুন রাস্তার কাজ চলছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকার) অর্থায়নে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি বাস্তবায়ন করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এ কাজের প্রথম ধাপে চার কিলোমিটার নির্মাণের কাজ পেয়েছেন মেসার্স বেল্লাল কনস্ট্রাশন  নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মূল কাজ করছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি।

শিডিউল অনুযায়ী চরাঞ্চলের নতুন এ রাস্তার নিচের অংশে দুই ফুট আঠালো মাটি দিয়ে উঁচু করার পর হবে ইট সলিং। রাস্তার নিচের অংশ আঠালো উল্লেখ থাকলেও তা করা হচ্ছে বালু দিয়ে। নিয়ম না মেনে রাতে জোর করে খননযন্ত্র দিয়ে কৃষকের ফসলি জমির মাটি কেটে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। এতে বাধা দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন উল্টো জমির মালিকদের নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। পরে ভুক্তভোগীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

ভুক্তভোগী আলোকদিয়ার চর বেষ্টনী গ্রামের বাসিন্দা হান্নান ফকির বলেন, ‘প্রশাসনের কোনো দোহাই ঠিকাদারেরা মানছেন না। তাই সবাই মিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেছি।’

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোতালেব হোসেন জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙনে সংকুচিত হয়ে আসছে চর। নদী পার থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে সরকারের এত টাকা ব্যয়ে পাকা রাস্তা নির্মাণে বেশ ঝুঁকি রয়েছে। যেকোনো সময় নদীতে ভেঙে যেতে পারে। এ ছাড়া, রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণ না করে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটায় মালিকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

শিবালয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব রায় বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটতে একাধিক বার নিষেধ করা হলেও তারা কর্ণপাত করছেন না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।’ রাস্তার কাজের ধরন ও মান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘শিডিউল অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করলে প্রকল্প বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত