Ajker Patrika

চাল বিতরণে ‘অনিয়ম’

খাইরুল ইসলাম আকাশ, তালতলী (বরগুনা) 
আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১২: ৩২
Thumbnail image

সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিনে জেলেদের সরকারি চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জেলেদের অভিযোগ, প্রকৃত জেলেরা চাল পান না, যাঁরা জেলে নন, তাঁরাই চাল পান। তবে মৎস্য কার্যালয় বলছে, জেলে যাচাই-বাছাইয়ের সময় এসব জেলে না থাকায় তাঁদের তালিকাভুক্ত করা হয়নি।

জানা গেছে, উপজেলায় ৮ হাজার ৭২১ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। উপকূলীয় এলাকার খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ পেশা হচ্ছে জেলে। ইলিশ মাছ ধরা পেশায় বেশির ভাগ জেলে নির্ভরশীল। সামুদ্রিক মাছের বাধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষণে প্রতিবছরের মতো এবারও ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য বিভাগ। নিষেধাজ্ঞাকালীন কর্মহীন এসব জেলেকে জুনে ৫৬ কেজি ও জুলাই মাসে ৩০ কেজি করে দুই ধাপে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। তবে নিষেধাজ্ঞাকালীন সরকারের চাল বিতরণ নিয়ে জেলেদের রয়েছে নানান অভিযোগ।

উপজেলার ইদুপাড়া গ্রামের জেলে মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘সরকার নাকি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের চাল দেয়। সত্যি বলতে, এই চালগুলো পায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের আত্মীয়স্বজন। আমরা যাঁরা প্রকৃত সাগরের জেলে, তাঁদের নামের চাল বরাদ্দ হয় ঠিকই, কিন্তু সেটা চলে যায় সমাজের প্রতিষ্ঠিত মানুষের ঘরে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথা বিশ্বাস না হলে জেলেদের চাল পরিষদে যখন বিতরণ করা হবে, তখন আপনারা এসে এ বিষয়ে সত্যতা যাচাই-বাছাই করে দেখেন। এঁদের মধ্যে অনেকে আছেন এলাকায় মুদিদোকানি, ট্রলারের মালিকসহ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের আত্মীয়স্বজন।’

একই এলাকার জেলে মো. হারুন (৫৫) বলেন, ‘জেলেজীবনে মাত্র একবার চাল পেয়েছি। কিন্তু যাঁরা জেলে নন, তাঁরা চাল পান সব সময়।’ তিনি বলেন, সব মিলিয়ে বছরে অবরোধ (নিষেধাজ্ঞা) থাকে ৫ থেকে ৬ মাস। সাগরে সব সময় মাছ পাওয়া যায় না। সবদিক হিসাব করলে আমাদের কাজ থাকে ১২ মাসের মধ্যে ৬ মাস। বাকি ৬ মাস সংসার চলতে হয় ধারদেনা করে। এর ভেতরে ছেলেমেয়ের পড়াশোনা করাতে পারছি না।’

ফকিরহাট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সুলতান ফরাজী বলেন, ‘ভারতের জেলেরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে জলসীমানায় এসে মাছ শিকার করছে। এ জন্য ভারতের সঙ্গে মিল রেখে আমাদের বাংলাদেশে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত। এই নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে পরিবার চলবে, এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আছে জেলে পরিবারগুলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘জেলেদের প্রণোদনা বাড়ানোসহ নিষেধাজ্ঞাকালীন গভীর সাগরে প্রশাসনের টহল বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি আমরা।’

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিভিন্ন স্পটে জেলেদের যাচাই-বাছাইয়ের সভা করেছি। তখন এই সব জেলে ছিলেন না। এ জন্য তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবু যাতে প্রকৃত জেলে ছাড়া অন্য কেউ চাল না পান, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সাগরে ভারতীয় জেলেরা যাতে মাছ শিকার করতে না পারেন, সে জন্য নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশকে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে।’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম সাদিক তানভীর বলেন, সরকারি চাল বিতরণে যেসব অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত