Ajker Patrika

সেলিম আল দীন

সম্পাদকীয়
সেলিম আল দীন

বাংলা নাটকে নতুন ধারার প্রবর্তক সেলিম আল দীন। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের স্বপ্নদ্রষ্টা তিনি। এ ছাড়া তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রাণপুরুষ। তাঁর নাট্যভাবনার জগৎ গড়ে উঠেছে আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপটে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর রাজনৈতিক কারণে তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি এক বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপি রাইটার হিসেবে কাজ করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

একক প্রচেষ্টায় ১৯৮৬ সালে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাটক ও নাট্যতত্ত্ব’ বিভাগ। এই বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে তিনি নাট্য ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সংযোজন করেছিলেন। তাঁর হাত দিয়েই অনেক নাট্যকর্মী ও অভিনেতা তৈরি হয়েছে। সমাজের অপেক্ষাকৃত নষ্ট, ক্ষয়ে যাওয়া ঘুণে ধরা পচনশীল চিত্রটি যেমন তিনি তাঁর নাটকের মাধ্যমে আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন, পাশাপাশি মানুষের বিজয়গাথাও তাঁর নাটকে ফুটে উঠেছে অত্যন্ত দক্ষ আর বলিষ্ঠতার সঙ্গে।

১৯৭৩ সালে ঢাকা থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করার পর তাঁর নাটক লেখা ও নির্মাণের পর্ব শুরু হয়। পাশ্চাত্য নাট্যরীতিকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব এক নাট্যরীতির অনুসন্ধান চালিয়ে তিনি সফল হন। ভারতীয় নাট্যশাস্ত্রের নির্যাস এবং বাংলা ভাষার মধ্যযুগের সাহিত্যরীতি থেকে পাওয়া শিল্প উপাদান তিনি প্রথম ব্যবহার করলেন তাঁর নাটকে।

তাঁর বিখ্যাত নাটকগুলো হলো—হরগজ, হাত-হদাই, কিত্তনখোলা, কেরামত মঙ্গল, যৈবতী কন্যার মন, বনপাংশুল, প্রাচ্য, নিমজ্জন, চাকা, মুনতাসীর ইত্যাদি।

আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি গান লেখা শুরু করেন। টিভির জন্যও তিনি লিখেছেন বহু নাটক। তাঁর লেখা ‘কিত্তনখোলা’ ও ‘চাকা’ নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে চলচ্চিত্র।

সেলিম আল দীন ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি অকালে মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত