Ajker Patrika

হালনাগাদ হয় না তথ্য বাতায়ন

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সরকারি দপ্তরগুলোর ওয়েবসাইটে তথ্য খুঁজলে অনেক তথ্যই পাওয়া যায় না। আগে বিভিন্ন তথ্য দেওয়া থাকলেও নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে না বেশির ভাগ দপ্তরের ওয়েবসাইট।

উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একজন সহকারী প্রোগ্রামার থাকলেও গতি পাচ্ছে না পোর্টাল হালনাগাদ করায়। ফলে তথ্যভান্ডারটির সঠিক ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার একটি মাধ্যম হিসেবে এই প্রকল্পে সরকারের নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ‘তথ্যপ্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক’ এই প্রতিপাদ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর ঘটা করে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উদ্‌যাপন করা হলেও নজর নেই জাতীয় তথ্য বাতায়নের তথ্যের ঘাটতি পূরণ বা তথ্য হালনাগাদের দিকে।জানা গেছে, সরকারের বিভিন্ন তথ্য ও সেবা ডিজিটাল প্রযুক্তি বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারি প্রচেষ্টার অংশহিসেবে চালু করা হয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। দেশের নাগরিকেরা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, পর্যটন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তি, গেজেট, সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের তালিকা, জনপ্রতিনিধিদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি সব তথ্যই এই ওয়েবপোর্টাল থেকে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

প্রতিটি নাগরিকের তথ্য ও সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতেই এই জাতীয় বাতায়ন করা হয়েছে। স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, উদ্ভাবনী ও জনমুখী প্রশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সরকার ও নাগরিকের মধ্যকার দূরত্ব কমানোর লক্ষ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও এটুআই প্রোগ্রামের নেতৃত্ব এবং তত্ত্বাবধানে এই বাতায়নের যাত্রা শুরু হয়।

কিন্তু শুধু গোসাইরহাট উপজেলা প্রশাসনের ওয়েবপোর্টালটি ঘেঁটে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বা দপ্তরগুলোর ওয়েবসাইটে কিছু তথ্য আপডেট থাকলেও যেসব তথ্য বা সরকারি পরিষেবার কথা উল্লেখ থাকার কথা রয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটের সব মেন্যু বা সাব-মেন্যুতে গিয়ে শতভাগ তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রশাসনের ওয়েবপোর্টালটির আওতাধীন উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, আটটি ইউনিয়ন পরিষদ ও ৩৪টি সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইট রয়েছে। তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ অনুযায়ী, একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার নাম থাকার কথা থাকলেও উপজেলা প্রশাসনসহ ওয়েবপোর্টালটির আওতাধীন কোনো দপ্তরের ওয়েবসাইটে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রশাসনের হোমপেজ বা মূল পাতাটি খুললেই কভার ফটোতে থাকা আটটি ছবির মধ্যে শুধু একটি ছবিতে বর্তমান ইউএনওর ছবি রয়েছে। বাকি সাতটি ছবি পূর্ববর্তী সময়ের এবং সেগুলোর প্রায় প্রতিটি ছবিতেই উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার মাইনুল ইসলামের উপস্থিতি রয়েছে।

উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওয়েবপোর্টালে কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সেবার তালিকা, যোগাযোগের কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপজেলা ভূমি অফিস, গোসাইরহাট থানা, কৃষি অফিস ইত্যাদি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সেবার তালিকা বা অন্য তথ্য খুঁজে পাওয়া গেলেও গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়েবপোর্টালে ডা. হাফিজুর রহমানের নাম ছাড়া আর কোনো কর্মকর্তা, ডাক্তারের নাম বা অন্য কোনো তথ্য বা সেবার তালিকা পাওয়া যায়নি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের নাম থাকলেও আপলোড করা নেই তাঁদের কোনো ছবি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার স্থানে লেখা রয়েছে, ‘অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) এর গোপনীয় শাখা।’ আলাওলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. উসমান গনি ব্যাপারী এবং কুচইপট্টি ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিনের নাম থাকলেও ওয়েবপোর্টালে তাঁদের কোনো ছবি নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোসাইরহাট উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি দপ্তরের তথ্য হালনাগাদের দায়িত্ব স্ব স্ব দপ্তরের। তবে কোনো দপ্তরের তথ্য আমাকে হালনাগাদ করতে বললে আমি তা করে দিই।’ 
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নিয়মিত হালনাগাদ করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো প্রশিক্ষণ করিয়েছি। প্রশিক্ষণে আমরা সংশ্লিষ্টদের দেখিয়ে দিই কীভাবে ওয়েবপোর্টালে তথ্য আপলোড দিতে হবে, হালনাগাদ করতে হবে, সে অনুযায়ী তাঁদের দপ্তরের কার্যক্রমের তথ্য হালনাগাদ করার কথা।’

গোসাইরহাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের পর থেকে নিয়মিত পোস্ট দেওয়া হচ্ছে, আপডেট করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আরও আপডেট করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত