Ajker Patrika

ববির শিক্ষার্থী ও আশপাশের স্থানীয়দের মধ্যে দূরত্ব, নিরসনে উদ্যোগ নেই

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫৮
ববির শিক্ষার্থী ও আশপাশের স্থানীয়দের মধ্যে দূরত্ব, নিরসনে উদ্যোগ নেই

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ছে বিরোধ। শিক্ষার্থীদের দাবি, তাঁরা লাঞ্ছনা ও হামলার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা শ্রমিকদের হাতে। এদিকে এলাকাবাসী বলছে সামান্য ঘটনার জেরে মহাসড়কের বিশ্ববিদ্যালয় অংশে অবরোধ করছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাঁদের বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর কিংবা লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। গত মঙ্গলবার রাতে সংঘটিত এমন একটি ঘটনায় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েছে।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ কিংবা বাড়িঘরে হামলা করে ক্ষতি করতে চান না। কিন্তু সহপাঠীরা আক্রান্ত হোক, তার পুনরাবৃত্তিও আশা করেন না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাড়িঘর ও দোকানপাটে বারবার হামলায় তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দুপক্ষের অসন্তোষ দানা বাঁধলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।

মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে লাঞ্ছনার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন আনন্দবাজারের পাশে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দুটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এর আগে ২০১৭ সালে আনন্দবাজারেই ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এদিকে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মহাসড়কে ছাত্র ও শ্রমিকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।

ববির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সোহেল রানা বলেন, ‘পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনটা যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। দৃশ্যমান উদ্যোগ না দেখলে পদক্ষেপ নেব। এলাকাবাসীর বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনাটি সাজানোও হতে পারে। আর মহাসড়ক অবরোধ করার মূল কারণ পুলিশের ও এলাকাবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ।’

আনন্দবাজারের বাসিন্দা ও জাপা নেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, সাধারণ মানুষ শান্তিতে থাকতে চায়। শিক্ষার্থীরা এখানে যা-ই করুক, না তাকালেই হয়। কিন্তু নিরীহ লোকের দোকানপাট, বাড়িঘর বিভিন্ন সময় ভাঙচুরে এলাকাবাসী হতাশ।

পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জিবুল হক সেন্টু জানান, মঙ্গলবারের ঘটনায় ওই এলাকার পুরুষেরা তাঁর এলাকায় ভয়ে চলে আসেন।

পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক মুনাওয়ালি উল ইসলাম অলি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলবাসীর আন্দোলনের ফসল এ বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের দ্বারা স্থানীয় গ্রামবাসীর বাড়িঘরে প্রায়ই হামলা-ভাঙচুর হচ্ছে। মহাসড়ক অবরোধ হচ্ছে। এলাকাবাসী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে এর অবসান চান।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম জানান, ছাত্রী লাঞ্ছিত ও বাড়িতে হামলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ ছিলেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মহাসড়কে অবরোধ ঘটালে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাঁরা চিন্তা করছেন শিক্ষার্থীদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই বসতি ও ব্যবসা। আশপাশের মানুষের সঙ্গে এ ধরনের ঝামেলার অবসানে তাঁরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন নিয়ে যোগাযোগ রক্ষার একটি মাধ্যম গড়ে তুলতে চিন্তাভাবনা করছেন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার দুই আসামির বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাটের বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত