Ajker Patrika

‘গাছ পইড়া সব শেষ হইয়া গেছে আমার মায় এহন কই থাকবে?’

‘গাছ পইড়া সব শেষ হইয়া গেছে আমার মায় এহন কই থাকবে?’

‘অভাবের কারণে তালপাতা আর নাড়া (খড়কুটা) দিয়া ঘর বানাইয়া ছিলাম। বৃষ্টি অইলে পানি পড়তো। স্বপ্ন ছিল মাকে টিনের দোতলা ঘরে রাখমু। আল্লায় হেই স্বপ্ন পূরণও করছে। চার বছর যাইতে না যাইতে বানে (ঘূর্ণিঝড়) হেই স্বপ্ন ভাইঙা চুরমার কইরা দিছে। ঘরের উপুর (ওপর) দুইডা গাছ পইড়া সব শেষ হইয়া গেছে। আমার মায় এহন কই (কোথায়) থাকবে?’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে গতকাল বুধবার সকালে কথাগুলো বলেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধানদী গ্রামের মো. হানিফ ব্যাপারী। হানিফ একসময় রিকশা চালাতেন। এখন ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে ঝোড়ো বাতাসে দুটি বিশাল আকৃতির চাম্বুলগাছ পড়ে হানিফের বসতঘরটি ধুমরেমুচড়ে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।

ঘটনার সময় ওই ঘরে হানিফের বিধবা মা মর্জিনা বেগম, স্ত্রী জেসমিন বেগম, ছেলে মো. রমজান ও মেয়ে হাফছা ছিল। ভাগ্যক্রমে তাঁরা বেঁচে যায়।

মর্জিনা বেগম বলেন, ‘শিশু বয়সে অর (হানিফ) বাহে (বাবা) মারা গেছে। পোলাডায় কত কষ্ট কইরা আমার থাহনের লইগা ঘরডা উঠাইছে। হেই ঘরাডাও মাটির লগে মিইশা গেছে।’

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৬০ থেকে ৭০টি ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘরের ওপর গাছ পড়ে নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের রায় সাহেব গ্রামের শাহ আলম রাঢ়ী, আইয়ুব আলী সিকদার, ফজলে করিম খানের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।  একই ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের মো. জসিম চৌকিদারের ঘরের ভিটেমাটি পানির তোড়ে ভেসে গেছে।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে আলকাচ মোল্লা বলেন, ‘ঝড়ো বাতাসে গাছ পড়ে ও পানির তোড়ে ইউনিয়নে ৩০-৪০টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-আমিন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত