Ajker Patrika

হরিণের বনে মহিষ পালন

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
হরিণের বনে মহিষ পালন

সংরক্ষিত বনের পাশে মহিষ বাথানদের বসবাসের ঘর। বনের মধ্যে মহিষের পালের অবাধ বিচরণ। গভীর বনের মধ্যে তিন ঘণ্টা পথ চলার পরও কোথাও হরিণের দেখা মেলেনি। পাওয়া যায়নি পায়ের চিহ্নও। পাওয়া গেছে মহিষের একাধিক পাল। মাঝেমধ্যে গভীর এই বনে বাথানদের দেখা যায়। যাঁরা এই মহিষের পালের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন। দেখলে মনে হবে হরিণ নয়, এই বনটি মহিষের জন্য গড়ে তোলা কোনো বাগান। নোয়াখালী হাতিয়ার জাতীয় উদ্যান নিঝুমদ্বীপের সংরক্ষিত বনের চিত্র এটি।

সংরক্ষিত এই বনের মধ্যে কয়েকজন মহিষের বাথানের সঙ্গে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের। সংরক্ষিত এই বনে কীভাবে মহিষ পালন করছেন প্রশ্ন করলে তাঁরা জানান, মহিষের মালিকরা বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে এখানে মহিষ পালন করছেন। এজন্য কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। বনের পাশে বসবাসের জন্য তৈরি করা ঘরটি তাঁদের। তাতে সাত-আটজন বাথান বসবাস করেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে প্রায় দুই শ মহিষ রয়েছে এই বনে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মহিষের মালিক হাতিয়ার জাহাজমারা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোয়াজ্জম হোসেন। সাবেক এই ইউপি সদস্যের রয়েছে শতাধিক মহিষ। এই শতাধিক মহিষ পালনের দায়িত্বে রয়েছেন বাথান বাকের হোসেন। তিনি জানান, ছয় মাস ধরে তাঁরা এখানে মহিষ পালন করছেন। বন বিভাগের কেউ বাধা দিয়েছেন কি না প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।

স্থানীয়রা জানান, নিঝুমদ্বীপে সংরক্ষিত এই বন পাহারা দেওয়ার জন্য রয়েছে বন বিভাগের একটি বিট অফিস। এই অফিসের অধীনে ১০ জন বনপ্রহরী রয়েছেন। তাঁরা এই বিশাল বন এলাকা পাহারার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সম্প্রতি নিঝুমদ্বীপে হরিণের নিরাপদ আবাসস্থল এই বনের মধ্যে মহিষের পাল ছেড়ে দেওয়ায় হরিণের বেঁচে থাকা শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। মহিষ বনের মধ্যে থাকা হরিণের খাদ্য খেয়ে ফেলছে, আবার বাথানদের অবাধ বিচরণের কারণে হরিণ এই বাগান থেকে সাঁতরে অন্য চরে চলে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় নিঝুমদ্বীপ জাতীয় উদ্যান হরিণশূন্য হয়ে পড়বে।

নিঝুমদ্বীপকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়েছে ২০০১ সালে। এরপরই বন, হরিণ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করার জন্য বন বিভাগ ও স্থানীয়দের অংশগ্রহণে গড়ে তোলা হয় সহব্যবস্থাপনা কমিটি। 
এই কমিটির সভাপতি খবিরুল হক বেলাল জানান, ১০ বছর আগে বন অদিধপ্তরের করা একটি টিম এই চরের হরিণশুমারি করে। তাতে দেখা গেছে, এখানে প্রায় আট হাজার হরিণ রয়েছে। এখন সেই সংখ্যা তিন-চার হাজারে বেশি হবে না। কারণ হিসেবে তিনি শিয়ালের আক্রমণ, বনের মধ্যে উঁচু জায়গা না থাকা, মিঠাপানির অভাব ও সম্প্রতি বনের মধ্যে মহিষের পাল ছেড়ে দেওয়াকে মনে করেন।

তিনি আরও জানান, এসব বিষয়ে একাধিকবার বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলার পরও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। ২০০৪ সালের দিকে বন বিভাগ বনের মধ্যে পাড় উঁচু করে তিনটি পুকুর খনন করে, যা জোয়ারের পানিতে এখন সমতলের সঙ্গে মিশে গেছে। এখন অস্বাভাবিক জোয়ার হলে হরিণের পাল ভেসে যায় বিভিন্ন চরে। লোকালয়েও চলে আসে বিভিন্ন সময়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত