Ajker Patrika

এক সারিতে ৯৬ জাতের আম

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১৯: ১২
এক সারিতে ৯৬ জাতের আম

রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের (কেআইবি) সামনের রাস্তা দিয়ে হাটতে গিয়েই নাকে এল মিষ্টি ঘ্রাণ। কেআইবি প্রাঙ্গণে ঢুকতেই দেখা গেল অনেকগুলো স্টল। সেখানে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অনেক ধরনের দেশি ফল। পাকা ফলের গন্ধে ম-ম করছে পুরো প্রাঙ্গণ।

কেইআইবিতে মন ভালো করা এই আয়োজনের শুরুটা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন ‘ফল মেলা-২০২২’ শিরোনামের এই আয়োজনের উদ্বোধন করেছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। মেলার এবারের প্রতিপাদ্য ‘বছরব্যাপী ফল চাষে, অর্থ পুষ্টি দুই-ই আসে’।

গত বৃহস্পতিবার মেলা শুরু হলেও ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল দর্শনার্থীর আগমন ছিল চোখে পড়ার মতো। দেশি ফলের সমাহার দেখতে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ছেলেমেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছেন দীপালি পাল। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় গ্রীষ্মের ছুটি বলে একটা ব্যাপার ছিল। এখন তা নেই বললেই চলে। ফল তো শহরেও পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রামে গিয়ে আম, কাঁঠাল খাওয়ার মজাটা পাচ্ছে না আমাদের ছেলেমেয়েরা। এই ধরনের মেলা ওদের ফল চিনতে শেখাবে।’

মেলায় ফল আনা হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ময়মনসিংহের কেওয়াটখালির হর্টিকালচারের সাড়ে ৩৯ কেজির কাঁঠাল থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র আকৃতির পাহাড়ি ফল প্রেজমা কিংবা ভিন্ন আকৃতির খাঁজকাটা গোল ফল সবই আছে সেখানে। দেশি ফলের পাশাপাশি দেশের মাটিতে চাষ করা বিদেশি ফল অ্যাভোকাডোও স্থান পেয়েছে স্টলে। আছে পাহাড়ি দুর্লভ ফল, বাদাম, মধু, মাশরুমও।

মেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলে ৬৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। বেশির ভাগ স্টলেই দেখা গেছে আমের সমাহার। বিক্রেতারা বলছেন, এই সময় আমের চাহিদাই সব থেকে বেশি। মেলায় অংশ নেওয়া কামাল অ্যাগ্রো ফার্মের বিক্রেতা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ‘আমরা শুধুই আম নিয়ে কাজ করছি। এর আগেও আমরা ফল মেলায় অংশ নিয়েছি। এবার আমের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের জুসও বিক্রি করছি এখানেই।’

মেলায় সরকারি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও ফল ব্যবসায়ী যেমন এসেছেন, তেমনি আছেন গ্রামের কৃষকও। এমনই একজন কৃষক হবিগঞ্জের আবদুল বাছির বদু মিয়া। উৎপাদক হিসেবে জাতীয় সম্মাননা পেয়েছিলেন তিনি। মেলায় নিজের বাগানের লেবু, পেয়ারা, সফেদা, লটকন, তরমুজ, জাম ও আনারস নিয়ে এসেছেন বদু মিয়া।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে ৯৬ জাতের আম। স্টলের কর্মীরা জানান, ৬৪টি জেলা থেকেই বিভিন্ন ফল আনা হয়েছে এখানে। সব জেলার বিশেষ জাতের আম সংগ্রহ করা হয়েছে কৃষকদের কাছ থেকে। এসব আম মেলা শেষে অনাথ আশ্রমের শিশুদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হবে।

এখানে প্রদর্শনীর জন্য আরও আছে বিভিন্ন জাতের কফি বিন, নানা ধরনের বাদাম (যেমন বাক্সবাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম), প্যাশন, ডুমুর, রামবুটান, ডেউয়া, আলু বোখারা, চাপালিশ, আঁশফল, বিলিম্বি, পানিয়ল, ঘুটঘুটিয়া (রাঙামাটি) দেশি গাব, প্রেজাম (পাহাড়ি), তানপুরা (হবিগঞ্জ), পাহাড়ি বিভিন্ন কলা, সাতকরা ইত্যাদি।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিএসও বাবুল চন্দ্র সরকার জানান, বর্তমানে দেশে দেশি-বিদেশি ৭৮ রকমের ফল চাষ হচ্ছে। তবে উৎপাদিত ফলের শতকরা ৬০ ভাগই হচ্ছে আম, কলা ও কাঁঠাল।

আম সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত