কমিটি নিয়ে পাল্টাপাল্টি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌর বিএনপির কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল করেছে দলীয় নেতা-কর্মীরা। গতকাল শনিবার সকালে উভয় পক্ষ বসুরহাট কলেজ গেইট ও হক মার্কেট এলাকায় মিছিল করে। গত শুক্রবারে ঘোষিত কমিটিকে কেন্দ্র করে এ মিছিল হয়। এ সময় উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার ও যুগ্ম আহ্বায়ক আহছান উল্যাহ মানিককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপনের সমর্থকেরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নবগঠিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূরুল আলম সিকদারের নেতৃত্বে কমিটির পক্ষে স্বাগত জানিয়ে কলেজ গেইটে সমাবেশ ও উৎসব মিছিল করে। অপরদিকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে তা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল করে বিক্ষুব্ধরা। নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপনের আয়োজনে এ মিছিলে নেতৃত্ব দেন মানছুরুল হক বাবর, বেলাল হোসেন বেলাল ও অন্যান্যরা। এ ছাড়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কমিটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির প্রবীণ নেতা কাজী একরাম নতুন কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ গ্রহণকারী একাধিক বিএনপি নেতা–কর্মী অভিযোগ করেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের এক নেতা থেকে জেলা বিএনপির নেতারা টাকা খেয়ে তাকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দুই নম্বর সদস্য করেছে। তাঁর এক অনুসারীকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করেছে। এ ছাড়া ৪৮টি পদের ৪০টি পদ দেওয়া হয়েছে ওই জামায়াত নেতার অনুসারীদের। যারা প্রকৃত বিএনপি করে তাঁদের পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

বিএনপি নেতা কাজী একরাম জানান, এ কমিটিতে পদায়নের ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি। এতে এ কমিটি থেকে পদত্যাগের সংখ্যাও আরও বাড়তে পারে। নতুন ঘোষিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদারের বিরুদ্ধে সরকার দলের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করারও অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হওয়ার যোগ্যও নন। তিনি আরও বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ঘোষিত উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ত্যাগী নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরীকে এ কমিটিতে যথাযথ স্থানে রাখা হয়নি। যা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার বলেন, ‘কমিটি তো আমি করিনি। কেউ মুখে মুখে পদত্যাগের কথা বললে এটার কোনো ভিত্তি নেই। লিখিত পেলে এ বিষয়ে আমরা পরে কথা বলব।’

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি টাকা খেয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, দলের সবার সঙ্গে আলোচনা করেই কমিটি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, বসুরহাট পৌরসভা, কবিরহাট উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করেছে নোয়াখালী জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি ও সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে নূরুল আলম সিকদারকে আহ্বায়ক, মাহমুদুর রহমান রিপনকে সদস্যসচিব, মো. আনছার উল্যাহকে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪৮ সদস্যের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তা ছাড়া আবদুল মতিন লিটনকে আহ্বায়ক, আবদুল্লাহ আল মামুনকে সদস্যসচিব, শওকত হোসেন সগীরকে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪০ সদস্যের বসুরহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।