Ajker Patrika

হ্যাটট্রিক জয়ের স্বপ্ন তাঁদের

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৫
হ্যাটট্রিক জয়ের স্বপ্ন তাঁদের

খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে টানা তৃতীয়বারও জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন উপজেলার ৩ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ জন সদস্য। এ জন্য মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন তাঁরা। আগামী ৭ ডিসেম্বর প্রতীকের বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামবেন বলে তাঁরা জানিয়েছন। এতে হ্যাটট্রিক (তৃতীয় মেয়াদে) জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা।

সব কিছু ঠিক থাকলে চর্তুথ ধাপের ইউপি নির্বাচনে আগামী ২৬ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের জয়ের জন্য ৭ সদস্য পদপ্রার্থী ভোটে অংশ নিবেন। এদের মধ্যে ১ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য, বাকিরা সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী। শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ এই প্রার্থীরা বিগত সময়ের জনপ্রিয়তা ও নতুন প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে জয় পেতে চাইছেন।

ইউপি সদস্যদের তৃতীয়বার প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সদর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের গচ্ছাবিল এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকাল প্রকৃত জনসেবক পাওয়া কঠিন! সাধারণত ব্যক্তিস্বার্থ ছাড়া কেউই মেম্বার-চেয়ারম্যান হতে চান না। সংখ্যায় অল্প হলেও যাঁরা মনপ্রাণ দিয়ে সমাজের ছিন্নমূল মানুষের আপদে-বিপদে কাছে থাকেন, তাঁদের আমরাও মনপ্রাণ উজাড় করে বারবার নির্বাচিত করার চেষ্টা করি। এবারও অনেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়নি। আমাদের অনুরোধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমরাও প্রকৃত জনসেবকদের মান-ইজ্জত রক্ষায় কাজ করব।’

মানিকছড়ি সদর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃতীয়বারে ইউপি সদস্য প্রার্থী মো. মোশারফ হোসেন। এই ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৮৬ জন। এই প্রার্থী সম্পর্কে ওই ওয়ার্ডের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী ভোটার নাম না প্রকাশ করে বললেন, ‘আমরা জাতি-বিজাতি বুঝি না। মোশারফ সব সময় দেখেন, খোঁজ-খবর রাখেন।’

মোশারফ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী অঙ্গিকার হিসেবে জনপদ উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছি।’ 
৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ সদস্য পদপ্রার্থীর একজন চলা প্রূ মারমা। ওই ওয়ার্ডের এক বাঙালি নারী ভোটার বলেন, ‘চলা প্রূ মারমার লোভ-লালসার মনমানসিকতা দেখিনি। ভোটে জয়-পরাজয় থাকবেই। তাঁকে এবারও আমরা তাঁকে মেম্বার হিসেবে দেখতে চাই।’ 
চলাপ্রূ মারমা বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনপদে শিক্ষা ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করার অঙ্গিকার নিয়ে তৃতীয় বার ভোট যুদ্ধে শামিল হয়েছি।’

বাটনাতলী ইউপির ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য ম্রাসে মারমা ২০১১ সাল থেকে টানা দুবার নির্বাচিত হয়ে হয়েছেন। ম্রাসে মারমা বলেন, ‘অনগ্রসর জনপদে শিক্ষা, বিদ্যুৎ, নারী উন্নয়ন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনে কাজ করার অঙ্গিকার নিয়ে তৃতীয়বার ভোটের মাঠে নেমেছি।’

ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন মো. আবুল হাসেম। ৯০০ ভোটারের এই ওয়ার্ডে অসাম্প্রদায়ি মানসিকতায় উন্নয়ন ও গ্রাম্য সালিস-বিচারে পক্ষপাতহীন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুনাম কুঁড়িয়েছেন। দুই জন প্রার্থীর মধ্যে এবারও তিনি জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।

এগারো শ ভোটারের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃতীয়বার সদস্য পদপ্রার্থী লাব্রেচাই মারমা। বিদ্যুৎ সুবিধাবঞ্চিত জনপদে সোলার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনে তাঁর অগ্রণি ভূমিকা আছে। আগামীতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিসহ কর্মসংস্থান ও বিদ্যুতায়ণে ভূমিকা রাখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনটহরী ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবার প্রার্থী হতে চাই ছিলেন না। তবে ভোটারদের অনুরোধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে জানা গেছে। ৫০০ পরিবারে এই ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪০০। এবার শিক্ষা ও মানুষের কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিতে চান জাহাঙ্গীর।

ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃতীয়বারের মতো সদস্য হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ক্যজাই মারমা। কৃষিনির্ভর ও অনগ্রসর এই জনপদে শিক্ষা, বিদ্যুৎ সংযোগ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নের অঙ্গিকার দিয়ে তিনি ভোটারের মন জয় করতে চাইছেন। ১ হাজার ভোটারের এই ওয়ার্ডে সদস্য পদপ্রার্থী ৪ জন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শওকত আলী চৌধুরী বলেন, ‘একজন সৎ ও দক্ষ জনপ্রতিনিধিই পারে সমাজ পরিবর্তন এবং উন্নয়নে নিজেকে তুলে ধরতে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত