Ajker Patrika

ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দালাল ধরলে দ্রুত সেবা

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৩
Thumbnail image

ফেনীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কার্যালয়ে দালাল ছাড়া কোনো সেবাই মেলে না বলে অভিযোগ তাঁদের।

একাধিক ভুক্তভোগী সেবাপ্রার্থী জানান, ফেনীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি দালালের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এখানে সেবা নিতে এলে দালালের মাধ্যমেই আসতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাভেল এজেন্সির এক কর্মী জানান, ফেনীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিটি পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত ১২০০ টাকা দিতে হয়।

রফিকুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, তিনি পাসপোর্ট করতে সরাসরি অফিসে যান। আবেদনপত্রে তাঁর সব ঠিক থাকলেও নানা অজুহাতে তাঁর ডাটা এন্ট্রি করতে গড়িমসি করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একই সময়ে এনাম পাটোয়ারী নামের তাঁর এক বন্ধু একটি এজেন্সির মাধ্যমে জমা দিয়ে কোনো ঝামেলা ছাড়াই পাসপোর্ট পেয়ে যান।

ভুক্তভোগীরা জানান, পাসপোর্ট অফিসের নির্ধারিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন না করে সরাসরি সেবা নিতে এলে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তোপের মুখে পড়তে হয় গ্রাহকদের। আবেদনপত্রে সবকিছু ঠিক থাকলেও ডেটা এন্ট্রির সময় কোন না কোন স্থানে তথ্য গরমিল করে পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়। অথবা আবেদন জমাদানকালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলে তা গ্রাহককে না জানিয়ে আবেদনগুলো পেন্ডিং রেখে দেওয়া হয়।

রোকসানা জাহান নামের এক আবেদনকারী জানান, গত ৩ জানুয়ারি তিনি পাসপোর্ট অফিসে নিজের ও তাঁর কন্যার পাসপোর্টের আবেদন জমা দিয়ে ছবি তুলতে আসেন। নিজের পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদি ও সন্তানের ৫ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট পেতে তিনি ব্যাংকে নির্ধারিত ফি জমা দেন। কিন্তু ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ঊর্মি তথ্য আপডেটের সময় পাসপোর্টের মেয়াদ কমিয়ে দেন। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি অফিসের প্রধান সহকারী পরিচালককে অবহিত করলে তিনি তা ঠিক করে দিতে অপারেটরকে নির্দেশ দেন। কিন্তু অপারেটর তা ঠিক না করায় তাঁর পাসপোর্টটি আটকে গেছে।

ভুক্তভোগী রোকসানা বলেন, ‘আমি কোনো দালাল ও এজেন্সির মাধ্যমে আসিনি। তাই আমাকে হয়রানি করতে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ভুল তথ্য সার্ভারে জমা দিয়ে আমার পাসপোর্টটি আটকে দিয়েছেন। দালাল কিংবা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে আমার সঙ্গে এমনটি করা হতো না।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক শারমিন আক্তার ঊর্মি বলেন, ‘রোকসানা আক্তারের আবেদনে ডেটা এন্ট্রির সময় ভুল হওয়ায় ব্যাংকে আরও কিছু টাকা জমা দিয়ে তা ঠিক করতে হবে। সেটি আমি জমা দিয়ে পাসপোর্টটি তাঁকে পাইয়ে দেব বলে জানিয়েছি।’

পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক ওমর ফারুক জিসান বলেন, ঢালাওভাবে গ্রাহকদের অভিযোগ সঠিক নয়। অনেক গ্রাহক কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দিচ্ছেন না। কেউ এনআইডি আনলে জন্মসনদ আনছেন না। আবার জন্মসনদ ঠিক হলেও জরুরি অন্য কোনো কাগজ দিতে পারছেন না। এতে অনেক ক্ষেত্রে সময় অপচয় হচ্ছে। তবু গ্রাহক সুবিধা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফেনী পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাধন সাহা বলেন, ‘ সমস্যার সমাধানে ঊর্মিকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো কেন সমাধান হয়নি বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত