সিইউএফএল খুলবে কবে নিশ্চিত নন কেউ

চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টের লিপারমারে প্রাইমারি রিফরমারি ওয়েস্টেস বয়লারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গত মঙ্গলবার থেকে ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা। কারখানা বন্ধ থাকায় সরকার প্রতিদিন এই আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কবে সিইউএফএল আবার উৎপাদনে যাবে কেউ সুস্পষ্ট করে বলতে পারছেন না।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, প্রতিদিন সিইউএফএলে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০ টন ইউরিয়া উৎপাদন হয়। যার সরকার নির্ধারিত বাজারমূল্য প্রতি টন ২০ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন ২ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী কাফকো থেকে সরকার আন্তর্জাতিক মূল্যে প্রতি টন সার ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা দরে কিনছে। ৮৫ হাজার টাকা দরে প্রতিদিন  ৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সার কিনতে হচ্ছে।

এ ছাড়া সিইউএফএলের আ্যমোনিয়া প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ৬০০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করা হয়। ৭০ হাজার টাকা দরে প্রতি টন বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি। সে হিসাবে অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ক্ষতি ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।

সিইউএফএল সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সিইউএফএলের ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অগ্নিকাণ্ডে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে জানা যায়নি। ঘটনা তদন্তে মেনটেনেজ বিভাগের জিএমের নেতৃত্বে একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ঘটনা সরেজমিন দেখতে বিসিআইসির মেনটেনেজ বিভাগের জিএম সুদীপ মজুমদার মঙ্গলবার রাতেই সিইউএফএলে এসেছেন।

সিইউএফএলের একটি সূত্র জানায়, দায়িত্বরতদের গাফিলতির কারণে এ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। ঘটনার সময় সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ছিলেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিইউএফএলের এক কর্মকর্তা বলেন, কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে গ্যাস ক্যাটে এক হাজার ডিগ্রি তাপমাত্রায় থাকে। এ সময় আগুন লাগলে পানি দিয়ে নেভানোর নিয়ম নাই। এ সময় পানি দিলে আগুন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। মঙ্গলবার কারখানায় আগুন নেভানোর সময় পানি দেওয়ায় আগুন আরও বেড়ে বিস্ফোরণ হয়।

তবে সিইউএফএলের ফায়ার অ্যান্ড সেফটি বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রব দাবি করেন এখানে তাঁদের একটি শাখা রয়েছে। তবে উন্নতদেশের মতো ব্যবস্থা নাই।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল্যা খান বলেন, কখন আবার চালু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। যেখানে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে তা ঠান্ডা হতে সময় লাগবে। কারণ সেখানে ৯০০ ডিগ্রি তাপমাত্র ছিল। অগ্নিকাণ্ডে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে কারখানা ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল্যা বলেন, এখনো বোঝা যাচ্ছে না। আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।