হাসান মামুন

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৩ ডিগ্রিতে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
প্রিলের বাকি সময়ে পরিস্থিতির উন্নতির বদলে অবনতির শঙ্কাই বেশি। তবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক এলাকায় তাপমাত্রা অসহনীয় নয় এখনো। কোথাও কোথাও বৃষ্টি আর কালবৈশাখীর পূর্বাভাসও রয়েছে। তবে প্রায় দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টি না হলে মাঝারি থেকে তীব্র এবং কোনো কোনো অঞ্চলে অতি তীব্র হয়ে ওঠা তাপপ্রবাহ কমবে বলে মনে করা যাচ্ছে না।
ঈদেও আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীসহ বড় বড় শহর থেকে গ্রামের বাড়ি গেছে। বেড়াতেও গেছে পর্যটন স্পটগুলোয়। নববর্ষ যুক্ত হওয়ায় এবার দীর্ঘ ছুটি পেয়েছে মানুষ। সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছে। আরও বেশি গরমের মধ্যে নববর্ষ পালন করেছে মানুষ উৎসাহভরে। সেদিন রাঙামাটিতে তাপমাত্রা ওঠে ৪০ ডিগ্রিতে। তাতেও ওই পার্বত্য জেলায় ‘বৈসাবি’ পালনে উৎসাহের ঘাটতি হয়নি। রাজধানী থেকেও অনেকে গিয়ে এই উৎসবে যোগ দিয়েছে যথারীতি। প্রতিকূল আবহাওয়া আমাদের কখনো পুরোপুরি দমাতে পারেনি। তবে কষ্ট তো হয়েই থাকে।
সময়ে-সময়ে আবহাওয়া অত্যন্ত বিরূপ হয়ে উঠছে, যেটাকে বলে ‘চরম ভাবাপন্ন’। এটা কেবল এ দেশে নয়; এই অঞ্চলে এবং পৃথিবীর আরও কিছু অংশে। এর কারণ নিয়ে হচ্ছে গবেষণা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়া বিশেষ প্রতিকূল হয়ে উঠছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অদৃষ্টপূর্ব দুর্যোগ নেমে আসার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি দুবাই শহর ডুবে যায় বিরল অতিবর্ষণে। একই সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে প্রবল বন্যা, ভূমিধসে শতাধিক মানুষ মারা গেছে। ফসল, সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু ঘটেছে অনেক গবাদিপশুর।
বাংলাদেশে চলমান তাপপ্রবাহও একধরনের দুর্যোগ নিয়ে এসেছে জনজীবনে। গত ক’বছরের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছে, এটা স্বল্পমেয়াদি হবে না। অন্তত চলতি অর্থবছরের বাকি দুই মাসেও থেকে থেকে তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করেই চলতে হবে আমাদের। আবহাওয়াবিদেরা তেমনটাই বলছেন।
অত্যধিক গরম ও তাপপ্রবাহে প্রথমত জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটে থাকে। এর চাপ গিয়ে পড়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয়; বিশেষ করে গরমজনিত জটিলতায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা হাজির হন হাসপাতালে। দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকার কথা। ভালো যে তাদের একেবারে অপ্রস্তুত মনে হচ্ছে না। তাপপ্রবাহ চলাকালে প্রাপ্তবয়স্করাও ‘হিট স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এরই মধ্যে কমপক্ষে তিনজন এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকলে এটা কিন্তু এড়ানো যেতে পারে। দেরিতে হলেও এ-বিষয়ক নির্দেশনা প্রচারিত হচ্ছে। মিডিয়া এ ক্ষেত্রে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গত বছরও তাপপ্রবাহ, এর প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল মিডিয়ায়। এবার সেটা আরও গভীরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
দুপুরের দিকে তাপমাত্রা যখন বেশি থাকে এবং আকাশ থেকে সূর্য ঢালতে থাকে আগুন, তখন ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা হলো, দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে এই পরিস্থিতিতেও বাইরে যেতে হয় উপার্জন করতে। খোলা আকাশের নিচেই কাজ করতে হয় অনেককে। যেমন কৃষি ও নির্মাণশ্রমিকদের। হাওরাঞ্চলে এরই মধ্যে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগাম বন্যা বা অন্য কোনো কারণে তাঁদের ফসল নষ্ট হয়নি এবার। বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে; ফলনও নাকি ভালো। এই গরমেও তাঁরা প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ঘরে ফসল তুলছেন। তাপপ্রবাহ বেশি প্রতিকূল হলে সেখানে যান্ত্রিকভাবে ধান উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবসাবিষয়ক একটি সংবাদপত্রে হাওরে ‘কম্বাইন হারভেস্টার’ ব্যবহার শুরুর খবর দেওয়া হয়েছে। যা হোক, ধান উত্তোলনসহ কৃষিকাজে নিয়োজিত সবাইকে কার্যকরভাবে সতর্ক করতে হবে এমন তাপপ্রবাহে বেশি ঝুঁকি না নেওয়ার। হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া একজন জমিতে কাজ করার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
সরকার প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিনক্ষণ পিছিয়েছে। ঘরেও, বিশেষ করে শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যেন গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়ে। প্রবীণ ও আগে থেকে রোগাক্রান্তরা এমন পরিস্থিতিতে নাজুক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠে। তাদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এক একটি পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। কারও অসুস্থতা মানেই আবার হঠাৎ করে অর্থ ব্যয়। অনেকেরই এর প্রস্তুতি থাকে না।
এটা একই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জারও সময়। গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত খারাপ। বহু মানুষ মারা গেছে এই প্রতিরোধযোগ্য রোগে।এটা ঘিরে বহু পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগ; হয় বিপুল অর্থ ব্যয়। এবারও এই তাপপ্রবাহের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। সময় ও সুযোগ থাকতে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।
অর্থবছরের শেষ সময়ে এডিপির আওতাধীন প্রকল্পগুলো পুরোদমে বাস্তবায়নের সময় এখন। দেশে তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে এটি অবশ্য ব্যাহত হবে। অর্থবছরের শুরুতে ক’মাস বৃষ্টিবাদলে এডিপির বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। এখন শেষ সময়ে তাপপ্রবাহে এর বাস্তবায়ন, বিশেষ করে নির্মাণ ও উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হলে তাতে কর্মসংস্থান কমবে।
প্রবৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চলতি মাসে গরমের মধ্যে দু-দুটি উৎসবে অর্থনীতি চাঙা হয়ে ওঠাটা অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক। এতে মূল্যস্ফীতি আবার কিছুটা বাড়ার কথা। এটা থেকে আমাদের রেহাই নেই আরও অনেক দিন; বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ এক বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকল সইছে। তাপপ্রবাহে তাদের একাংশও যদি ঠিকমতো কাজ করতে না পারে; অসুস্থ থাকে, উৎপাদনশীলতা ও আয় হারায়, তাহলে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরও খারাপ। এ প্রসঙ্গে রিকশাচালক ও দিনমজুরদের কথা স্মরণ করা যায়।
গার্মেন্টসের মতো খাতে যাঁরা নিয়োজিত, তাঁদের উৎপাদনশীলতাও কি কমবে তাপপ্রবাহে? এ খাতে কাজের পরিবেশ অপেক্ষাকৃত ভালো হয়েছে মর্মন্তুদ ঘটনাবলি ঘটার পর, প্রধানত বিদেশি ক্রেতাদের চাপে। চলমান তাপপ্রবাহে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর মালিকপক্ষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিজিএমইএকে নিতে হবে সক্রিয় ভূমিকা। ঈদের আগে অনেক প্রতিষ্ঠান মার্চের বেতন না দিয়ে কেবল বোনাস দিতে পেরেছিল। তাপপ্রবাহে তারা যেন শ্রমিকদের কাজের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। সেটা পারা উচিত অন্যান্য শিল্প খাতেও। তবে এখনো বেশির ভাগ মানুষ নিয়োজিত অনানুষ্ঠানিক খাতে। রাস্তা আর ফুটপাতে আত্মকর্মসংস্থানেও অনেকে নিয়োজিত। দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর ক্ষতিপূরণ দেবে কে?
ঈদের পর পণ্য সরবরাহব্যবস্থা সচল হওয়ার আগেই শুরু হলো তাপপ্রবাহ। নতুন করে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে এর অবদান থাকতে পারে। তাপপ্রবাহে পণ্য সংরক্ষণেও সৃষ্টি হয় চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিকের অধিক তাপমাত্রায় ওষুধের গুণমান হারানোর কথা বিবেচনায় নিতে হবে আমাদের। প্রচণ্ড গরমে পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও রয়েছে।
ডিমের উৎপাদন নাকি ব্যাহত। কোরবানির হাটে তোলার জন্য গরু পালনে নিয়োজিতদের কী অবস্থা এখন? রাজধানীর বাইরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সুবিধাজনক নয় বলেই জানা যাচ্ছে। এ কারণে চার্জার ফ্যান ও আইপিএস কেনার প্রবণতা বেড়েছে মফস্বলে। দেশজুড়ে এসি বিক্রিও বেড়ে গেছে। অত্যধিক এসি ব্যবহারের কারণেও কিন্তু শহরাঞ্চলে তাপপ্রবাহ কমছে না। রাজধানীসহ শহরগুলো হয়ে উঠছে ‘হিট আইল্যান্ড’!
তাপপ্রবাহে বোরোর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে না। এটা আমাদের প্রধান ফসল। আম, লিচুচাষিরাও উদ্বিগ্ন। সেচের অভাব কিংবা পরিচর্যার দুর্বলতায় ফল-ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে গ্রাম ও শহরের সব শ্রেণির মানুষকেই কমবেশি মাশুল গুনতে হবে। তাপপ্রবাহ কিংবা আবহাওয়ার বিচিত্র আচরণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো অঞ্চলে ফলন মার খেলে সেটা কিন্তু বড় দুঃসংবাদ হয়ে ওঠে খোদ বিশ্ববাজারে।
এর প্রভাবে ওই জরুরি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই দৃষ্টি রাখতে হয় দেশের বাইরেও। এই বাস্তবতা এটা অনুধাবনের দিকেও আমাদের নিয়ে যায় যে আবহাওয়ার কোনো সীমান্ত নেই এবং আমরা সবাই একটা অখণ্ড গ্রহের মধ্যে আছি। এ অবস্থায় নিজ নিজ দেশেও তাপপ্রবাহ বা এমন কোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে জীবনকে স্বাভাবিক ধারায় রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে; বিশেষ করে যারা এর অসহায় শিকার হয়ে পড়ছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে যথাসম্ভব প্রস্তুত রাখতে হবে রাষ্ট্রকে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৩ ডিগ্রিতে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
প্রিলের বাকি সময়ে পরিস্থিতির উন্নতির বদলে অবনতির শঙ্কাই বেশি। তবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক এলাকায় তাপমাত্রা অসহনীয় নয় এখনো। কোথাও কোথাও বৃষ্টি আর কালবৈশাখীর পূর্বাভাসও রয়েছে। তবে প্রায় দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টি না হলে মাঝারি থেকে তীব্র এবং কোনো কোনো অঞ্চলে অতি তীব্র হয়ে ওঠা তাপপ্রবাহ কমবে বলে মনে করা যাচ্ছে না।
ঈদেও আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীসহ বড় বড় শহর থেকে গ্রামের বাড়ি গেছে। বেড়াতেও গেছে পর্যটন স্পটগুলোয়। নববর্ষ যুক্ত হওয়ায় এবার দীর্ঘ ছুটি পেয়েছে মানুষ। সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছে। আরও বেশি গরমের মধ্যে নববর্ষ পালন করেছে মানুষ উৎসাহভরে। সেদিন রাঙামাটিতে তাপমাত্রা ওঠে ৪০ ডিগ্রিতে। তাতেও ওই পার্বত্য জেলায় ‘বৈসাবি’ পালনে উৎসাহের ঘাটতি হয়নি। রাজধানী থেকেও অনেকে গিয়ে এই উৎসবে যোগ দিয়েছে যথারীতি। প্রতিকূল আবহাওয়া আমাদের কখনো পুরোপুরি দমাতে পারেনি। তবে কষ্ট তো হয়েই থাকে।
সময়ে-সময়ে আবহাওয়া অত্যন্ত বিরূপ হয়ে উঠছে, যেটাকে বলে ‘চরম ভাবাপন্ন’। এটা কেবল এ দেশে নয়; এই অঞ্চলে এবং পৃথিবীর আরও কিছু অংশে। এর কারণ নিয়ে হচ্ছে গবেষণা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়া বিশেষ প্রতিকূল হয়ে উঠছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অদৃষ্টপূর্ব দুর্যোগ নেমে আসার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি দুবাই শহর ডুবে যায় বিরল অতিবর্ষণে। একই সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে প্রবল বন্যা, ভূমিধসে শতাধিক মানুষ মারা গেছে। ফসল, সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু ঘটেছে অনেক গবাদিপশুর।
বাংলাদেশে চলমান তাপপ্রবাহও একধরনের দুর্যোগ নিয়ে এসেছে জনজীবনে। গত ক’বছরের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছে, এটা স্বল্পমেয়াদি হবে না। অন্তত চলতি অর্থবছরের বাকি দুই মাসেও থেকে থেকে তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করেই চলতে হবে আমাদের। আবহাওয়াবিদেরা তেমনটাই বলছেন।
অত্যধিক গরম ও তাপপ্রবাহে প্রথমত জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটে থাকে। এর চাপ গিয়ে পড়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয়; বিশেষ করে গরমজনিত জটিলতায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা হাজির হন হাসপাতালে। দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকার কথা। ভালো যে তাদের একেবারে অপ্রস্তুত মনে হচ্ছে না। তাপপ্রবাহ চলাকালে প্রাপ্তবয়স্করাও ‘হিট স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এরই মধ্যে কমপক্ষে তিনজন এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকলে এটা কিন্তু এড়ানো যেতে পারে। দেরিতে হলেও এ-বিষয়ক নির্দেশনা প্রচারিত হচ্ছে। মিডিয়া এ ক্ষেত্রে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গত বছরও তাপপ্রবাহ, এর প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল মিডিয়ায়। এবার সেটা আরও গভীরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
দুপুরের দিকে তাপমাত্রা যখন বেশি থাকে এবং আকাশ থেকে সূর্য ঢালতে থাকে আগুন, তখন ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা হলো, দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে এই পরিস্থিতিতেও বাইরে যেতে হয় উপার্জন করতে। খোলা আকাশের নিচেই কাজ করতে হয় অনেককে। যেমন কৃষি ও নির্মাণশ্রমিকদের। হাওরাঞ্চলে এরই মধ্যে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগাম বন্যা বা অন্য কোনো কারণে তাঁদের ফসল নষ্ট হয়নি এবার। বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে; ফলনও নাকি ভালো। এই গরমেও তাঁরা প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ঘরে ফসল তুলছেন। তাপপ্রবাহ বেশি প্রতিকূল হলে সেখানে যান্ত্রিকভাবে ধান উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবসাবিষয়ক একটি সংবাদপত্রে হাওরে ‘কম্বাইন হারভেস্টার’ ব্যবহার শুরুর খবর দেওয়া হয়েছে। যা হোক, ধান উত্তোলনসহ কৃষিকাজে নিয়োজিত সবাইকে কার্যকরভাবে সতর্ক করতে হবে এমন তাপপ্রবাহে বেশি ঝুঁকি না নেওয়ার। হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া একজন জমিতে কাজ করার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
সরকার প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিনক্ষণ পিছিয়েছে। ঘরেও, বিশেষ করে শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যেন গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়ে। প্রবীণ ও আগে থেকে রোগাক্রান্তরা এমন পরিস্থিতিতে নাজুক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠে। তাদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এক একটি পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। কারও অসুস্থতা মানেই আবার হঠাৎ করে অর্থ ব্যয়। অনেকেরই এর প্রস্তুতি থাকে না।
এটা একই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জারও সময়। গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত খারাপ। বহু মানুষ মারা গেছে এই প্রতিরোধযোগ্য রোগে।এটা ঘিরে বহু পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগ; হয় বিপুল অর্থ ব্যয়। এবারও এই তাপপ্রবাহের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। সময় ও সুযোগ থাকতে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।
অর্থবছরের শেষ সময়ে এডিপির আওতাধীন প্রকল্পগুলো পুরোদমে বাস্তবায়নের সময় এখন। দেশে তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে এটি অবশ্য ব্যাহত হবে। অর্থবছরের শুরুতে ক’মাস বৃষ্টিবাদলে এডিপির বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। এখন শেষ সময়ে তাপপ্রবাহে এর বাস্তবায়ন, বিশেষ করে নির্মাণ ও উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হলে তাতে কর্মসংস্থান কমবে।
প্রবৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চলতি মাসে গরমের মধ্যে দু-দুটি উৎসবে অর্থনীতি চাঙা হয়ে ওঠাটা অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক। এতে মূল্যস্ফীতি আবার কিছুটা বাড়ার কথা। এটা থেকে আমাদের রেহাই নেই আরও অনেক দিন; বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ এক বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকল সইছে। তাপপ্রবাহে তাদের একাংশও যদি ঠিকমতো কাজ করতে না পারে; অসুস্থ থাকে, উৎপাদনশীলতা ও আয় হারায়, তাহলে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরও খারাপ। এ প্রসঙ্গে রিকশাচালক ও দিনমজুরদের কথা স্মরণ করা যায়।
গার্মেন্টসের মতো খাতে যাঁরা নিয়োজিত, তাঁদের উৎপাদনশীলতাও কি কমবে তাপপ্রবাহে? এ খাতে কাজের পরিবেশ অপেক্ষাকৃত ভালো হয়েছে মর্মন্তুদ ঘটনাবলি ঘটার পর, প্রধানত বিদেশি ক্রেতাদের চাপে। চলমান তাপপ্রবাহে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর মালিকপক্ষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিজিএমইএকে নিতে হবে সক্রিয় ভূমিকা। ঈদের আগে অনেক প্রতিষ্ঠান মার্চের বেতন না দিয়ে কেবল বোনাস দিতে পেরেছিল। তাপপ্রবাহে তারা যেন শ্রমিকদের কাজের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। সেটা পারা উচিত অন্যান্য শিল্প খাতেও। তবে এখনো বেশির ভাগ মানুষ নিয়োজিত অনানুষ্ঠানিক খাতে। রাস্তা আর ফুটপাতে আত্মকর্মসংস্থানেও অনেকে নিয়োজিত। দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর ক্ষতিপূরণ দেবে কে?
ঈদের পর পণ্য সরবরাহব্যবস্থা সচল হওয়ার আগেই শুরু হলো তাপপ্রবাহ। নতুন করে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে এর অবদান থাকতে পারে। তাপপ্রবাহে পণ্য সংরক্ষণেও সৃষ্টি হয় চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিকের অধিক তাপমাত্রায় ওষুধের গুণমান হারানোর কথা বিবেচনায় নিতে হবে আমাদের। প্রচণ্ড গরমে পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও রয়েছে।
ডিমের উৎপাদন নাকি ব্যাহত। কোরবানির হাটে তোলার জন্য গরু পালনে নিয়োজিতদের কী অবস্থা এখন? রাজধানীর বাইরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সুবিধাজনক নয় বলেই জানা যাচ্ছে। এ কারণে চার্জার ফ্যান ও আইপিএস কেনার প্রবণতা বেড়েছে মফস্বলে। দেশজুড়ে এসি বিক্রিও বেড়ে গেছে। অত্যধিক এসি ব্যবহারের কারণেও কিন্তু শহরাঞ্চলে তাপপ্রবাহ কমছে না। রাজধানীসহ শহরগুলো হয়ে উঠছে ‘হিট আইল্যান্ড’!
তাপপ্রবাহে বোরোর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে না। এটা আমাদের প্রধান ফসল। আম, লিচুচাষিরাও উদ্বিগ্ন। সেচের অভাব কিংবা পরিচর্যার দুর্বলতায় ফল-ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে গ্রাম ও শহরের সব শ্রেণির মানুষকেই কমবেশি মাশুল গুনতে হবে। তাপপ্রবাহ কিংবা আবহাওয়ার বিচিত্র আচরণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো অঞ্চলে ফলন মার খেলে সেটা কিন্তু বড় দুঃসংবাদ হয়ে ওঠে খোদ বিশ্ববাজারে।
এর প্রভাবে ওই জরুরি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই দৃষ্টি রাখতে হয় দেশের বাইরেও। এই বাস্তবতা এটা অনুধাবনের দিকেও আমাদের নিয়ে যায় যে আবহাওয়ার কোনো সীমান্ত নেই এবং আমরা সবাই একটা অখণ্ড গ্রহের মধ্যে আছি। এ অবস্থায় নিজ নিজ দেশেও তাপপ্রবাহ বা এমন কোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে জীবনকে স্বাভাবিক ধারায় রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে; বিশেষ করে যারা এর অসহায় শিকার হয়ে পড়ছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে যথাসম্ভব প্রস্তুত রাখতে হবে রাষ্ট্রকে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক
হাসান মামুন

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৩ ডিগ্রিতে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
প্রিলের বাকি সময়ে পরিস্থিতির উন্নতির বদলে অবনতির শঙ্কাই বেশি। তবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক এলাকায় তাপমাত্রা অসহনীয় নয় এখনো। কোথাও কোথাও বৃষ্টি আর কালবৈশাখীর পূর্বাভাসও রয়েছে। তবে প্রায় দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টি না হলে মাঝারি থেকে তীব্র এবং কোনো কোনো অঞ্চলে অতি তীব্র হয়ে ওঠা তাপপ্রবাহ কমবে বলে মনে করা যাচ্ছে না।
ঈদেও আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীসহ বড় বড় শহর থেকে গ্রামের বাড়ি গেছে। বেড়াতেও গেছে পর্যটন স্পটগুলোয়। নববর্ষ যুক্ত হওয়ায় এবার দীর্ঘ ছুটি পেয়েছে মানুষ। সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছে। আরও বেশি গরমের মধ্যে নববর্ষ পালন করেছে মানুষ উৎসাহভরে। সেদিন রাঙামাটিতে তাপমাত্রা ওঠে ৪০ ডিগ্রিতে। তাতেও ওই পার্বত্য জেলায় ‘বৈসাবি’ পালনে উৎসাহের ঘাটতি হয়নি। রাজধানী থেকেও অনেকে গিয়ে এই উৎসবে যোগ দিয়েছে যথারীতি। প্রতিকূল আবহাওয়া আমাদের কখনো পুরোপুরি দমাতে পারেনি। তবে কষ্ট তো হয়েই থাকে।
সময়ে-সময়ে আবহাওয়া অত্যন্ত বিরূপ হয়ে উঠছে, যেটাকে বলে ‘চরম ভাবাপন্ন’। এটা কেবল এ দেশে নয়; এই অঞ্চলে এবং পৃথিবীর আরও কিছু অংশে। এর কারণ নিয়ে হচ্ছে গবেষণা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়া বিশেষ প্রতিকূল হয়ে উঠছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অদৃষ্টপূর্ব দুর্যোগ নেমে আসার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি দুবাই শহর ডুবে যায় বিরল অতিবর্ষণে। একই সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে প্রবল বন্যা, ভূমিধসে শতাধিক মানুষ মারা গেছে। ফসল, সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু ঘটেছে অনেক গবাদিপশুর।
বাংলাদেশে চলমান তাপপ্রবাহও একধরনের দুর্যোগ নিয়ে এসেছে জনজীবনে। গত ক’বছরের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছে, এটা স্বল্পমেয়াদি হবে না। অন্তত চলতি অর্থবছরের বাকি দুই মাসেও থেকে থেকে তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করেই চলতে হবে আমাদের। আবহাওয়াবিদেরা তেমনটাই বলছেন।
অত্যধিক গরম ও তাপপ্রবাহে প্রথমত জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটে থাকে। এর চাপ গিয়ে পড়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয়; বিশেষ করে গরমজনিত জটিলতায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা হাজির হন হাসপাতালে। দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকার কথা। ভালো যে তাদের একেবারে অপ্রস্তুত মনে হচ্ছে না। তাপপ্রবাহ চলাকালে প্রাপ্তবয়স্করাও ‘হিট স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এরই মধ্যে কমপক্ষে তিনজন এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকলে এটা কিন্তু এড়ানো যেতে পারে। দেরিতে হলেও এ-বিষয়ক নির্দেশনা প্রচারিত হচ্ছে। মিডিয়া এ ক্ষেত্রে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গত বছরও তাপপ্রবাহ, এর প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল মিডিয়ায়। এবার সেটা আরও গভীরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
দুপুরের দিকে তাপমাত্রা যখন বেশি থাকে এবং আকাশ থেকে সূর্য ঢালতে থাকে আগুন, তখন ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা হলো, দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে এই পরিস্থিতিতেও বাইরে যেতে হয় উপার্জন করতে। খোলা আকাশের নিচেই কাজ করতে হয় অনেককে। যেমন কৃষি ও নির্মাণশ্রমিকদের। হাওরাঞ্চলে এরই মধ্যে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগাম বন্যা বা অন্য কোনো কারণে তাঁদের ফসল নষ্ট হয়নি এবার। বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে; ফলনও নাকি ভালো। এই গরমেও তাঁরা প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ঘরে ফসল তুলছেন। তাপপ্রবাহ বেশি প্রতিকূল হলে সেখানে যান্ত্রিকভাবে ধান উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবসাবিষয়ক একটি সংবাদপত্রে হাওরে ‘কম্বাইন হারভেস্টার’ ব্যবহার শুরুর খবর দেওয়া হয়েছে। যা হোক, ধান উত্তোলনসহ কৃষিকাজে নিয়োজিত সবাইকে কার্যকরভাবে সতর্ক করতে হবে এমন তাপপ্রবাহে বেশি ঝুঁকি না নেওয়ার। হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া একজন জমিতে কাজ করার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
সরকার প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিনক্ষণ পিছিয়েছে। ঘরেও, বিশেষ করে শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যেন গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়ে। প্রবীণ ও আগে থেকে রোগাক্রান্তরা এমন পরিস্থিতিতে নাজুক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠে। তাদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এক একটি পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। কারও অসুস্থতা মানেই আবার হঠাৎ করে অর্থ ব্যয়। অনেকেরই এর প্রস্তুতি থাকে না।
এটা একই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জারও সময়। গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত খারাপ। বহু মানুষ মারা গেছে এই প্রতিরোধযোগ্য রোগে।এটা ঘিরে বহু পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগ; হয় বিপুল অর্থ ব্যয়। এবারও এই তাপপ্রবাহের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। সময় ও সুযোগ থাকতে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।
অর্থবছরের শেষ সময়ে এডিপির আওতাধীন প্রকল্পগুলো পুরোদমে বাস্তবায়নের সময় এখন। দেশে তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে এটি অবশ্য ব্যাহত হবে। অর্থবছরের শুরুতে ক’মাস বৃষ্টিবাদলে এডিপির বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। এখন শেষ সময়ে তাপপ্রবাহে এর বাস্তবায়ন, বিশেষ করে নির্মাণ ও উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হলে তাতে কর্মসংস্থান কমবে।
প্রবৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চলতি মাসে গরমের মধ্যে দু-দুটি উৎসবে অর্থনীতি চাঙা হয়ে ওঠাটা অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক। এতে মূল্যস্ফীতি আবার কিছুটা বাড়ার কথা। এটা থেকে আমাদের রেহাই নেই আরও অনেক দিন; বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ এক বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকল সইছে। তাপপ্রবাহে তাদের একাংশও যদি ঠিকমতো কাজ করতে না পারে; অসুস্থ থাকে, উৎপাদনশীলতা ও আয় হারায়, তাহলে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরও খারাপ। এ প্রসঙ্গে রিকশাচালক ও দিনমজুরদের কথা স্মরণ করা যায়।
গার্মেন্টসের মতো খাতে যাঁরা নিয়োজিত, তাঁদের উৎপাদনশীলতাও কি কমবে তাপপ্রবাহে? এ খাতে কাজের পরিবেশ অপেক্ষাকৃত ভালো হয়েছে মর্মন্তুদ ঘটনাবলি ঘটার পর, প্রধানত বিদেশি ক্রেতাদের চাপে। চলমান তাপপ্রবাহে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর মালিকপক্ষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিজিএমইএকে নিতে হবে সক্রিয় ভূমিকা। ঈদের আগে অনেক প্রতিষ্ঠান মার্চের বেতন না দিয়ে কেবল বোনাস দিতে পেরেছিল। তাপপ্রবাহে তারা যেন শ্রমিকদের কাজের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। সেটা পারা উচিত অন্যান্য শিল্প খাতেও। তবে এখনো বেশির ভাগ মানুষ নিয়োজিত অনানুষ্ঠানিক খাতে। রাস্তা আর ফুটপাতে আত্মকর্মসংস্থানেও অনেকে নিয়োজিত। দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর ক্ষতিপূরণ দেবে কে?
ঈদের পর পণ্য সরবরাহব্যবস্থা সচল হওয়ার আগেই শুরু হলো তাপপ্রবাহ। নতুন করে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে এর অবদান থাকতে পারে। তাপপ্রবাহে পণ্য সংরক্ষণেও সৃষ্টি হয় চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিকের অধিক তাপমাত্রায় ওষুধের গুণমান হারানোর কথা বিবেচনায় নিতে হবে আমাদের। প্রচণ্ড গরমে পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও রয়েছে।
ডিমের উৎপাদন নাকি ব্যাহত। কোরবানির হাটে তোলার জন্য গরু পালনে নিয়োজিতদের কী অবস্থা এখন? রাজধানীর বাইরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সুবিধাজনক নয় বলেই জানা যাচ্ছে। এ কারণে চার্জার ফ্যান ও আইপিএস কেনার প্রবণতা বেড়েছে মফস্বলে। দেশজুড়ে এসি বিক্রিও বেড়ে গেছে। অত্যধিক এসি ব্যবহারের কারণেও কিন্তু শহরাঞ্চলে তাপপ্রবাহ কমছে না। রাজধানীসহ শহরগুলো হয়ে উঠছে ‘হিট আইল্যান্ড’!
তাপপ্রবাহে বোরোর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে না। এটা আমাদের প্রধান ফসল। আম, লিচুচাষিরাও উদ্বিগ্ন। সেচের অভাব কিংবা পরিচর্যার দুর্বলতায় ফল-ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে গ্রাম ও শহরের সব শ্রেণির মানুষকেই কমবেশি মাশুল গুনতে হবে। তাপপ্রবাহ কিংবা আবহাওয়ার বিচিত্র আচরণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো অঞ্চলে ফলন মার খেলে সেটা কিন্তু বড় দুঃসংবাদ হয়ে ওঠে খোদ বিশ্ববাজারে।
এর প্রভাবে ওই জরুরি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই দৃষ্টি রাখতে হয় দেশের বাইরেও। এই বাস্তবতা এটা অনুধাবনের দিকেও আমাদের নিয়ে যায় যে আবহাওয়ার কোনো সীমান্ত নেই এবং আমরা সবাই একটা অখণ্ড গ্রহের মধ্যে আছি। এ অবস্থায় নিজ নিজ দেশেও তাপপ্রবাহ বা এমন কোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে জীবনকে স্বাভাবিক ধারায় রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে; বিশেষ করে যারা এর অসহায় শিকার হয়ে পড়ছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে যথাসম্ভব প্রস্তুত রাখতে হবে রাষ্ট্রকে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৩ ডিগ্রিতে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
প্রিলের বাকি সময়ে পরিস্থিতির উন্নতির বদলে অবনতির শঙ্কাই বেশি। তবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক এলাকায় তাপমাত্রা অসহনীয় নয় এখনো। কোথাও কোথাও বৃষ্টি আর কালবৈশাখীর পূর্বাভাসও রয়েছে। তবে প্রায় দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টি না হলে মাঝারি থেকে তীব্র এবং কোনো কোনো অঞ্চলে অতি তীব্র হয়ে ওঠা তাপপ্রবাহ কমবে বলে মনে করা যাচ্ছে না।
ঈদেও আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীসহ বড় বড় শহর থেকে গ্রামের বাড়ি গেছে। বেড়াতেও গেছে পর্যটন স্পটগুলোয়। নববর্ষ যুক্ত হওয়ায় এবার দীর্ঘ ছুটি পেয়েছে মানুষ। সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছে। আরও বেশি গরমের মধ্যে নববর্ষ পালন করেছে মানুষ উৎসাহভরে। সেদিন রাঙামাটিতে তাপমাত্রা ওঠে ৪০ ডিগ্রিতে। তাতেও ওই পার্বত্য জেলায় ‘বৈসাবি’ পালনে উৎসাহের ঘাটতি হয়নি। রাজধানী থেকেও অনেকে গিয়ে এই উৎসবে যোগ দিয়েছে যথারীতি। প্রতিকূল আবহাওয়া আমাদের কখনো পুরোপুরি দমাতে পারেনি। তবে কষ্ট তো হয়েই থাকে।
সময়ে-সময়ে আবহাওয়া অত্যন্ত বিরূপ হয়ে উঠছে, যেটাকে বলে ‘চরম ভাবাপন্ন’। এটা কেবল এ দেশে নয়; এই অঞ্চলে এবং পৃথিবীর আরও কিছু অংশে। এর কারণ নিয়ে হচ্ছে গবেষণা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়া বিশেষ প্রতিকূল হয়ে উঠছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অদৃষ্টপূর্ব দুর্যোগ নেমে আসার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি দুবাই শহর ডুবে যায় বিরল অতিবর্ষণে। একই সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে প্রবল বন্যা, ভূমিধসে শতাধিক মানুষ মারা গেছে। ফসল, সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু ঘটেছে অনেক গবাদিপশুর।
বাংলাদেশে চলমান তাপপ্রবাহও একধরনের দুর্যোগ নিয়ে এসেছে জনজীবনে। গত ক’বছরের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছে, এটা স্বল্পমেয়াদি হবে না। অন্তত চলতি অর্থবছরের বাকি দুই মাসেও থেকে থেকে তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করেই চলতে হবে আমাদের। আবহাওয়াবিদেরা তেমনটাই বলছেন।
অত্যধিক গরম ও তাপপ্রবাহে প্রথমত জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটে থাকে। এর চাপ গিয়ে পড়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয়; বিশেষ করে গরমজনিত জটিলতায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা হাজির হন হাসপাতালে। দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকার কথা। ভালো যে তাদের একেবারে অপ্রস্তুত মনে হচ্ছে না। তাপপ্রবাহ চলাকালে প্রাপ্তবয়স্করাও ‘হিট স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এরই মধ্যে কমপক্ষে তিনজন এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকলে এটা কিন্তু এড়ানো যেতে পারে। দেরিতে হলেও এ-বিষয়ক নির্দেশনা প্রচারিত হচ্ছে। মিডিয়া এ ক্ষেত্রে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গত বছরও তাপপ্রবাহ, এর প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল মিডিয়ায়। এবার সেটা আরও গভীরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
দুপুরের দিকে তাপমাত্রা যখন বেশি থাকে এবং আকাশ থেকে সূর্য ঢালতে থাকে আগুন, তখন ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা হলো, দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে এই পরিস্থিতিতেও বাইরে যেতে হয় উপার্জন করতে। খোলা আকাশের নিচেই কাজ করতে হয় অনেককে। যেমন কৃষি ও নির্মাণশ্রমিকদের। হাওরাঞ্চলে এরই মধ্যে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগাম বন্যা বা অন্য কোনো কারণে তাঁদের ফসল নষ্ট হয়নি এবার। বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে; ফলনও নাকি ভালো। এই গরমেও তাঁরা প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ঘরে ফসল তুলছেন। তাপপ্রবাহ বেশি প্রতিকূল হলে সেখানে যান্ত্রিকভাবে ধান উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবসাবিষয়ক একটি সংবাদপত্রে হাওরে ‘কম্বাইন হারভেস্টার’ ব্যবহার শুরুর খবর দেওয়া হয়েছে। যা হোক, ধান উত্তোলনসহ কৃষিকাজে নিয়োজিত সবাইকে কার্যকরভাবে সতর্ক করতে হবে এমন তাপপ্রবাহে বেশি ঝুঁকি না নেওয়ার। হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া একজন জমিতে কাজ করার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
সরকার প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিনক্ষণ পিছিয়েছে। ঘরেও, বিশেষ করে শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যেন গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়ে। প্রবীণ ও আগে থেকে রোগাক্রান্তরা এমন পরিস্থিতিতে নাজুক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠে। তাদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এক একটি পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। কারও অসুস্থতা মানেই আবার হঠাৎ করে অর্থ ব্যয়। অনেকেরই এর প্রস্তুতি থাকে না।
এটা একই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জারও সময়। গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত খারাপ। বহু মানুষ মারা গেছে এই প্রতিরোধযোগ্য রোগে।এটা ঘিরে বহু পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগ; হয় বিপুল অর্থ ব্যয়। এবারও এই তাপপ্রবাহের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। সময় ও সুযোগ থাকতে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।
অর্থবছরের শেষ সময়ে এডিপির আওতাধীন প্রকল্পগুলো পুরোদমে বাস্তবায়নের সময় এখন। দেশে তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে এটি অবশ্য ব্যাহত হবে। অর্থবছরের শুরুতে ক’মাস বৃষ্টিবাদলে এডিপির বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। এখন শেষ সময়ে তাপপ্রবাহে এর বাস্তবায়ন, বিশেষ করে নির্মাণ ও উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হলে তাতে কর্মসংস্থান কমবে।
প্রবৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চলতি মাসে গরমের মধ্যে দু-দুটি উৎসবে অর্থনীতি চাঙা হয়ে ওঠাটা অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক। এতে মূল্যস্ফীতি আবার কিছুটা বাড়ার কথা। এটা থেকে আমাদের রেহাই নেই আরও অনেক দিন; বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ এক বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধকল সইছে। তাপপ্রবাহে তাদের একাংশও যদি ঠিকমতো কাজ করতে না পারে; অসুস্থ থাকে, উৎপাদনশীলতা ও আয় হারায়, তাহলে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরও খারাপ। এ প্রসঙ্গে রিকশাচালক ও দিনমজুরদের কথা স্মরণ করা যায়।
গার্মেন্টসের মতো খাতে যাঁরা নিয়োজিত, তাঁদের উৎপাদনশীলতাও কি কমবে তাপপ্রবাহে? এ খাতে কাজের পরিবেশ অপেক্ষাকৃত ভালো হয়েছে মর্মন্তুদ ঘটনাবলি ঘটার পর, প্রধানত বিদেশি ক্রেতাদের চাপে। চলমান তাপপ্রবাহে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর মালিকপক্ষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিজিএমইএকে নিতে হবে সক্রিয় ভূমিকা। ঈদের আগে অনেক প্রতিষ্ঠান মার্চের বেতন না দিয়ে কেবল বোনাস দিতে পেরেছিল। তাপপ্রবাহে তারা যেন শ্রমিকদের কাজের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। সেটা পারা উচিত অন্যান্য শিল্প খাতেও। তবে এখনো বেশির ভাগ মানুষ নিয়োজিত অনানুষ্ঠানিক খাতে। রাস্তা আর ফুটপাতে আত্মকর্মসংস্থানেও অনেকে নিয়োজিত। দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর ক্ষতিপূরণ দেবে কে?
ঈদের পর পণ্য সরবরাহব্যবস্থা সচল হওয়ার আগেই শুরু হলো তাপপ্রবাহ। নতুন করে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে এর অবদান থাকতে পারে। তাপপ্রবাহে পণ্য সংরক্ষণেও সৃষ্টি হয় চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিকের অধিক তাপমাত্রায় ওষুধের গুণমান হারানোর কথা বিবেচনায় নিতে হবে আমাদের। প্রচণ্ড গরমে পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও রয়েছে।
ডিমের উৎপাদন নাকি ব্যাহত। কোরবানির হাটে তোলার জন্য গরু পালনে নিয়োজিতদের কী অবস্থা এখন? রাজধানীর বাইরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সুবিধাজনক নয় বলেই জানা যাচ্ছে। এ কারণে চার্জার ফ্যান ও আইপিএস কেনার প্রবণতা বেড়েছে মফস্বলে। দেশজুড়ে এসি বিক্রিও বেড়ে গেছে। অত্যধিক এসি ব্যবহারের কারণেও কিন্তু শহরাঞ্চলে তাপপ্রবাহ কমছে না। রাজধানীসহ শহরগুলো হয়ে উঠছে ‘হিট আইল্যান্ড’!
তাপপ্রবাহে বোরোর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে না। এটা আমাদের প্রধান ফসল। আম, লিচুচাষিরাও উদ্বিগ্ন। সেচের অভাব কিংবা পরিচর্যার দুর্বলতায় ফল-ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে গ্রাম ও শহরের সব শ্রেণির মানুষকেই কমবেশি মাশুল গুনতে হবে। তাপপ্রবাহ কিংবা আবহাওয়ার বিচিত্র আচরণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো অঞ্চলে ফলন মার খেলে সেটা কিন্তু বড় দুঃসংবাদ হয়ে ওঠে খোদ বিশ্ববাজারে।
এর প্রভাবে ওই জরুরি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই দৃষ্টি রাখতে হয় দেশের বাইরেও। এই বাস্তবতা এটা অনুধাবনের দিকেও আমাদের নিয়ে যায় যে আবহাওয়ার কোনো সীমান্ত নেই এবং আমরা সবাই একটা অখণ্ড গ্রহের মধ্যে আছি। এ অবস্থায় নিজ নিজ দেশেও তাপপ্রবাহ বা এমন কোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে জীবনকে স্বাভাবিক ধারায় রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে; বিশেষ করে যারা এর অসহায় শিকার হয়ে পড়ছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে যথাসম্ভব প্রস্তুত রাখতে হবে রাষ্ট্রকে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।
২২ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।
২২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।
২২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গত বছরও এপ্রিলে বেশ গরম পড়েছিল; বইছিল তাপপ্রবাহ। এবারও এপ্রিলের মধ্যভাগ থেকে পরিস্থিতি খারাপ। এরই মধ্যে রাজধানীসহ ১২টি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ নিবন্ধ লেখার দিন এটা ছাড়িয়ে গেছে ৪২ ডিগ্রি।
২২ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫