আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
‘ওই যে দেখেনচোল উচা বালুখান, ঔখানে হামার প্রায় ৫০ ঘরের (পরিবারের) বাড়ি আছিল। হামার সউগ শ্যাষ করি দেছে এই তিস্তা নদী। হামাকগুলাক সবাকে আইজ পথের ফকির বানাইছে এই তিস্তা।’ বলেন সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বিনবিনা চরের বাসিন্দা। একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। এরপর আবার বলেন, ‘হামার জমি আছিল, পুকুরভরা মাছ আছিল, আম-কাঁঠালের গাছ আছিল। এক রাইতে সউগগুলা ভাঙি নিয়া গেইছে এই সর্বনাশা তিস্তা। এই তিস্তার কারণে মোক আইজ মাইনষের ভিটার (জমির) এক কানিত থাকা লাগে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা নদী। বর্ষায় তিস্তার ভয়াল রূপ দেখা গেলেও শুষ্ক মৌসুমে পলি জমে নদীর বুকে। ফলে ফিরতি বর্ষায় সহজেই ভরে ওঠে নদী। এরপর আবার দেখা দেয় ভাঙন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র বলছে, শুধু চলতি বছরেই প্রায় ১৫০টি পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে তাদের কেউ চলে গেছে অন্যত্র, কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের ধারে। উপজেলায় তিস্তার ভাঙনকবলিত কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তার ভাঙনে প্রতিবছর ২০০-৪০০ পরিবার সর্বস্বান্ত হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অনেক কৃষক এখন দিনমজুর, রিকশাচালক কিংবা হোটেলশ্রমিক। হতদরিদ্রের খাতায় নাম উঠেছে তাঁদের। বাধ্য হয়ে অনেকে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকায়।
কথা হয় গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের গান্নারপাড় গ্রামের আব্দুল মজিদের সঙ্গে। একসময় তাঁর আবাদি জমির পরিমাণ ছিল প্রায় ৭ একর। সংসারে সুখ-শান্তি ছিল। তখন তাঁর বাড়িতেই প্রতিদিন কাজ করতেন ৪-৫ জন দিনমজুর। জমির সঙ্গে তাঁর সব সুখও যেন গ্রাস করে নিয়েছে তিস্তা। নিঃস্ব মজিদ এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অন্যের জমিতে বাস করছেন। আফসোসের সুরে তিনি বলেন, ‘তিস্তা আমার এমন পরিণতি করিল, এখন আমাক বেলা ওঠা-ডোবা মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন বাঁচা লাগে।’
নদীভাঙনের কারণে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ গ্রামটি মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বলে জানান গ্রামবাসী। মজিদ মিয়া নামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘শংকরদহে আগে ৬০০-৭০০ পরিবার বাস করত। এখন ১৫-২০টা পরিবার ছাড়া সব নদীত ভাঙি গেইছে।’
নদীভাঙনের শিকার হয়ে যে দুর্ভোগ আর দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে হয়, তার পুনরাবৃত্তি চান না ভুক্তভোগীরা। তাঁরা চান তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
এ প্রসঙ্গে লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘বিনবিনা থেকে শংকরদহ পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার একটি বেড়িবাঁধ খুবই প্রয়োজন। তাহলে হয়তো এই তিস্তার ভাঙন থেকে কিছুটা মুক্তি পাব আমরা।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আখিনুজ্জামান বলেন, ‘তিস্তার ভাঙন এখন বাম তীরে। সেই ভাঙনের স্থায়ী সমাধানের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটির অনুমোদনও হয়ে গেছে। একটি কোম্পানিকে ফিজিক্যাল স্টাডি করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই স্টাডি হয়ে গেলে তারপর প্রকল্প তৈরি করে পাঠানো হবে।’
‘ওই যে দেখেনচোল উচা বালুখান, ঔখানে হামার প্রায় ৫০ ঘরের (পরিবারের) বাড়ি আছিল। হামার সউগ শ্যাষ করি দেছে এই তিস্তা নদী। হামাকগুলাক সবাকে আইজ পথের ফকির বানাইছে এই তিস্তা।’ বলেন সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বিনবিনা চরের বাসিন্দা। একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। এরপর আবার বলেন, ‘হামার জমি আছিল, পুকুরভরা মাছ আছিল, আম-কাঁঠালের গাছ আছিল। এক রাইতে সউগগুলা ভাঙি নিয়া গেইছে এই সর্বনাশা তিস্তা। এই তিস্তার কারণে মোক আইজ মাইনষের ভিটার (জমির) এক কানিত থাকা লাগে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা নদী। বর্ষায় তিস্তার ভয়াল রূপ দেখা গেলেও শুষ্ক মৌসুমে পলি জমে নদীর বুকে। ফলে ফিরতি বর্ষায় সহজেই ভরে ওঠে নদী। এরপর আবার দেখা দেয় ভাঙন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র বলছে, শুধু চলতি বছরেই প্রায় ১৫০টি পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে তাদের কেউ চলে গেছে অন্যত্র, কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের ধারে। উপজেলায় তিস্তার ভাঙনকবলিত কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তার ভাঙনে প্রতিবছর ২০০-৪০০ পরিবার সর্বস্বান্ত হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অনেক কৃষক এখন দিনমজুর, রিকশাচালক কিংবা হোটেলশ্রমিক। হতদরিদ্রের খাতায় নাম উঠেছে তাঁদের। বাধ্য হয়ে অনেকে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকায়।
কথা হয় গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের গান্নারপাড় গ্রামের আব্দুল মজিদের সঙ্গে। একসময় তাঁর আবাদি জমির পরিমাণ ছিল প্রায় ৭ একর। সংসারে সুখ-শান্তি ছিল। তখন তাঁর বাড়িতেই প্রতিদিন কাজ করতেন ৪-৫ জন দিনমজুর। জমির সঙ্গে তাঁর সব সুখও যেন গ্রাস করে নিয়েছে তিস্তা। নিঃস্ব মজিদ এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অন্যের জমিতে বাস করছেন। আফসোসের সুরে তিনি বলেন, ‘তিস্তা আমার এমন পরিণতি করিল, এখন আমাক বেলা ওঠা-ডোবা মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন বাঁচা লাগে।’
নদীভাঙনের কারণে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ গ্রামটি মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বলে জানান গ্রামবাসী। মজিদ মিয়া নামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘শংকরদহে আগে ৬০০-৭০০ পরিবার বাস করত। এখন ১৫-২০টা পরিবার ছাড়া সব নদীত ভাঙি গেইছে।’
নদীভাঙনের শিকার হয়ে যে দুর্ভোগ আর দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে হয়, তার পুনরাবৃত্তি চান না ভুক্তভোগীরা। তাঁরা চান তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
এ প্রসঙ্গে লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘বিনবিনা থেকে শংকরদহ পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার একটি বেড়িবাঁধ খুবই প্রয়োজন। তাহলে হয়তো এই তিস্তার ভাঙন থেকে কিছুটা মুক্তি পাব আমরা।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আখিনুজ্জামান বলেন, ‘তিস্তার ভাঙন এখন বাম তীরে। সেই ভাঙনের স্থায়ী সমাধানের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটির অনুমোদনও হয়ে গেছে। একটি কোম্পানিকে ফিজিক্যাল স্টাডি করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই স্টাডি হয়ে গেলে তারপর প্রকল্প তৈরি করে পাঠানো হবে।’
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৮ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৮ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৮ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫