Ajker Patrika

চা-পাতা কিনছে না কারখানা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১৩: ২৬
Thumbnail image

কারখানায় ঢুকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের প্রতিবাদে চা কেনা বন্ধ রেখেছে পঞ্চগড়ের ২০টি চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে চা-পাতা কেনা বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র চা-চাষি।

এর আগে গত সোমবার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের মরগেন চা কারখানায় মারধরের ঘটনা ঘটে। এর ফলে মঙ্গলবার রাতে কারখানাটির সুপারভাইজার মো. নাজমুল হুদা অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ও তাঁর ভাই মোকলেছুর রহমানসহ আরও ২০-২৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কারখানায় জোর করে বড় পাতা নিয়ে প্রবেশ করেন। চায়ের মান বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ চা-পাতা ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই চা-পাতা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। গত সোমবার বিকেলে এজাহারভুক্ত আসামি জহিরুল ইসলাম ও বশিরুল আলম সরকার জোর করে কারখানায় বড় চা-পাতা নিয়ে প্রবেশ করলে কারখানার কোষাধ্যক্ষ সঞ্জয় কুমার রায় ওই পাতা কিনতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁরা তাঁকে মারধর করতে থাকেন।

কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এ সময় হামলাকারীদের মোবাইলে খবর পেয়ে অমরখানার চেয়ারম্যান, তাঁর ভাইসহ অন্যরা কারখানায় এসে পুলিশের সামনে মারধর করে চারজনকে জখম করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কারখানার ব্যবস্থাপক আখলাকুজ্জামান শামীম বলেন, ‘ঘটনার সময় ইউপি চেয়ারম্যানের হুকুমে আমাদের ওপর হামলা হয়। কারখানার বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকার কাঁচা পাতা নষ্ট হয়েছে।’

অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নরুজ্জামান নুরু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘দুজন ক্ষুদ্র চা-চাষি মরগেন টি ফ্যাক্টরিতে কাঁচা চা-পাতা বিক্রি করতে যান। এ সময় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ওজন কর্তন করে কাঁচা চা-পাতার দাম দিচ্ছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। চাষিরা প্রতিবাদ করলে মরগেন টি ফ্যাক্টরির লোকজন তাঁদের আটকে রেখে মারধর করছিলেন। বিষয়টি তাঁরা আমাকে জানালে আমি তাঁদের উদ্ধার করতে কারখানায় যাই। এ সময় কারখানার লোকজন আমাকেও মারতে উদ্যত হন।’

মরগেন টি ফ্যাক্টরিতে হামলার প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে চা-চাষিদের কাছ থেকে কাঁচা চা-পাতা কেনা বন্ধ রেখেছে ২০টি চা কারখানা।

তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া এলাকার চা-চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি যে কারখানায় ঘটেছে, সেখানকার চা-পাতা কেনা বন্ধ থাকতে পারে। কিন্তু অন্য কারখানায় কেনা বন্ধ রাখা অযৌক্তিক।’

মরগেন টি ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী নিয়াজ আলী চিশতি বলেন, ‘অকশন মার্কেটে নিম্নমানের চা-পাতার দাম পাওয়া যায় না। তাই ওই চা-পাতা কিনি না। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে লোকজন আমার কারখানায় হামলা করেন। তাঁরা আমার কারখানা বন্ধ করে দেন।’

বাংলাদেশ বটলিফ টি ফ্যাক্টরি অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পঞ্চগড় জেলার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মরগেন টি ফ্যাক্টরিতে কর্মচারীদের মারধরের প্রতিবাদে গতকাল দুপুর থেকে কাঁচা চা-পাতা কেনা বন্ধ রেখেছি। আমরা জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত