Ajker Patrika

বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে অস্বস্তি আওয়ামী লীগে

সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, পাকুন্দিয়া
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৪
বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে অস্বস্তি আওয়ামী লীগে

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ৩১ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ৯ ইউপিতেই রয়েছে স্বতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। বিএনপি দলীয়ভাবে না থাকলেও কয়েকটি ইউপিতে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে মাঠে রয়েছেন নেতা-কর্মীরা। বেশির ভাগ ইউপিতেই শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯ ইউপিতে ৫৪ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩৫১ জন সাধারণ সদস্য পদে ও ১১৬ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে লড়ছেন। প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এখানে ভোট গ্রহণ হবে। ইভিএমে ভোট গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউপিতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রার্থীরা। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নেই এখন নির্বাচনী আমেজ বইছে। পোস্টার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পাড়া-মহল্লার অলিগলি। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানগুলো নির্বাচনী আলোচনায় সব সময় থাকছে মুখর। প্রচার মাইকিংয়ে চলছে প্রার্থীদের গুণকীর্তন ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার জাঙ্গালিয়া, চরফরাদী, এগারসিন্দুর, বুরুদিয়া, পাটুয়াভাঙ্গা, হোসেন্দী, নারান্দী, চণ্ডীপাশা ও সুখিয়া ইউপিতে দলীয় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। যাঁরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান রয়েছেন চারজন। এদিকে ৯ ইউপিতেই নৌকার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। যাঁদের অনেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি কিংবা গত নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে না এলেও উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, মাঠের অবস্থান ভালো থাকায় এবং কর্মী-সমর্থকদের চাপে তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে এবং ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারলে জয়ের ব্যাপারেও তাঁরা আশাবাদী।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাঁরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই স্থানীয়ভাবে ভোটের মাঠে জনপ্রিয় নন। তাই সেসব ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে মাঠ গোছানোর কাজ চলছে। নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রতিদিনই পথসভা ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের প্রতি অনুরোধ করছি।’

বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি বর্তমান কমিটিতে নেই, সেহেতু এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, প্রথমবারের মতো উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে। তাই এর প্রচার-প্রচারণার কাজ করা হচ্ছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ৯টি ইউপিতে চারজন রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রার্থীরা যেন নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলেন, সে জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত