Ajker Patrika

টানা বৃষ্টিতে জনজীবন ব্যাহত

মামুনুর রহমান, টাঙ্গাইল
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ৪৪
টানা বৃষ্টিতে জনজীবন ব্যাহত

টাঙ্গাইলে টানা দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক ও দিনমজুরেরা। অপরদিকে যমুনাসহ বিভিন্ন 
নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এ ছাড়া শহরের প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, সাগরে নিম্নচাপের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

গত সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেনের পচা দুর্গন্ধযুক্ত পানি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ভেসে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে জেলা সদর সড়কে হাঁটুপানি জমেছে। এর মধ্যেই রিকশা ও অটোরিকশা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। এ ছাড়া পানি জমে শহরের নিরালা মোড় থেকে জেলা সদর সড়কের যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পৌর উদ্যানের পর থেকে শিক্ষা অফিস পর্যন্ত সড়কে প্রায় হাঁটুপানি জমে যায়। রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলচালক ও পথচারীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরাও। এ ছাড়া বটতলা থেকে কোর্ট মসজিদ পর্যন্ত সড়কের বিশাল গর্তে পানি জমে বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বৃষ্টির কারণে রিকশা ও অটোরিকশার চালকেরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় কথা হয় রিকশাচালক হুমায়ুন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘টাকার প্রয়োজনে সকালে বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি, তবে শহরে আজ তেমন একটা যাত্রী নেই। তাই দুপুর পর্যন্ত ৩০০ টাকাও ইনকাম করতে পারিনি।’

শাহ আলম মিয়া নামের এক নির্মাণশ্রমিক বলেন, ‘সকালে কাজ করার জন্য রেজিস্ট্রিপাড়া এসেছিলাম। বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারলাম না। তিন ঘণ্টা 
বসে থেকে ভিজে ভিজে বাড়ি চলে যাচ্ছি।’

সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের ছিটকিবাড়ী গ্রামের রাজমিস্ত্রি হুমায়ুন মিয়া বলেন, ‘আমার গর্ভবতী স্ত্রী অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে ডাক্তার দেখাতে টাঙ্গাইল শহরের মা ও শিশুকেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি। বৃষ্টির কারণে রিকশা পেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে রোপা আমনসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কৃষিশ্রমিকদের দিনভর বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করতে দেখা গেছে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার বরুহা এলাকায় বেশ কয়েকজন কৃষিশ্রমিককে পাট থেকে আঁশ ছাড়াতে দেখা যায়। বৃষ্টি থেকে শরীর রক্ষা করতে মাথায় প্লাস্টিকের আবরণ ব্যবহার করলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না তাঁদের। এ সময় কথা হয় আব্দুর রহিম, সবুর ও মেনহাজের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি আর এর মধ্যেই পানিতে দাঁড়িয়ে পাটের আঁশ ছাড়ানো খুবই কষ্টের। কিন্তু কী করার, কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে। তাই বাধ্য হয়ে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করছেন তাঁরা।

টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলুর রশীদ বলেন, সাগরে নিম্নচাপের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে। জেলায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মোট ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত