Ajker Patrika

ওয়ানডের বাংলাদেশ যেন ধারাবাহিকতার প্রতীক

বোরহান জাবেদ, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২২, ১২: ০৯
ওয়ানডের বাংলাদেশ যেন ধারাবাহিকতার প্রতীক

ঘরে ও ঘরের বাইরে ওয়ানডে ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য এক দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে এ বছর নিজেদের প্রথম সিরিজে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে তামিম ইকবালের দল। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐতিহাসিক সিরিজ জয়। এবার বাংলাদেশের শিকার ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে পরশু রাতে এক ম্যাচ বাকি রেখে সিরিজ মুঠোয় পুরেছে সফরকারীরা। সেটিও দুই অভিজ্ঞ তারকা সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমকে ছাড়াই।

২০১৪ সালের পর থেকে এ নিয়ে বাংলাদেশের কাছে টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ হারল ক্যারিবিয়ানরা। শুধু তাঁরাই নন, গত দুই বছরে ঘরে-বাইরে মিলিয়ে ৮টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের ৭টিই জিতেছে বাংলাদেশ। চারটি দেশে, তিনটি বিদেশে। একমাত্র সিরিজ হারটি গত বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠে। এ বছর অন্য দুই সংস্করণে কঠিন সময় পার করলেও ওয়ানডেতে সেটার প্রভাব পড়েনি। তিন সিরিজের তিনটিই নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

গায়ানায় প্রথম দুই ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আক্ষরিক অর্থেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমটিতে ৬ উইকেটের জয়। দ্বিতীয়টিতে আরও নির্ভুল রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা। একপেশে জয়টা ৯ উইকেটের। অথচ ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে মানসিকভাবে বিপর্যস্তই ছিলেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি স্বাগতিকদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ, এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে ভ্রমণের ধকল—সফর দুর্বিষহ হয়ে ওঠার মতো সব অভিজ্ঞতাই হয়েছিল। সব সামলে নিজেদের পছন্দের সংস্করণে ফিরতেই ধারাবাহিক বাংলাদেশ।

ঘরের বাইরে র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে বেশি সাফল্য এলেও গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে এর ইতি টানে বাংলাদেশ। ওই সফরের আগে প্রোটিয়াদের মাঠে সিরিজ জয় দূরে থাক, কোনো ম্যাচই জেতেনি লাল-সুবজের প্রতিনিধিরা।

পরশু ৫০ ওভারের ক্রিকেটের সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত করেছে বাংলাদেশ। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে লাগাতার ব্যর্থতার মধ্যে প্রায় একই দলটা ওয়ানডেতে কীভাবে এতটা ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে? গায়ানায় দ্বিতীয় ওয়ানডে-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক তামিম সেটার কিছু ধারণা দিয়েছেন, ‘আমরা এই খেলায় হয়তো একটু স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। বেশ কিছু ম্যাচও খেলেছি এই সংস্করণে। আমার মনে হয়, ঘরোয়া ক্রিকেটে ডিপিএল এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। আপনি যদি দেখেন, এটাই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট। সম্ভবত এ কারণেই আজ আমরা এই জায়গায় (আন্তর্জাতিক পর্যায়ে) ফল পাচ্ছি।’

২০২০ সালের মার্চে মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছ থেকে অধিনায়কত্বের ব্যাটন ওঠে তামিমের হাতে। এর মধ্যে ২৩ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। জয় ১৪টি, হার ৯টি। ৬০ দশমিক ৮৬ শতাংশ জয় নিয়ে সাফল্যের হারে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক তামিমই। তবে তাঁর অধিনায়কত্ব নয়, যে কেউ নেতৃত্ব দিলে এই সংস্করণে বাংলাদেশ ভালো করার মতো দল হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন তিনি। সিরিজ শুরুর আগে দলের প্রতি নিজের বার্তা নিয়ে তামিম বলেন, ‘সিরিজ শুরুর আগে ছেলেদের বলেছিলাম, এই একটা সংস্করণ (ওয়ানডে) যেটা নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। এখানে আমরা ভালো খেলি। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি হারের পর ড্রেসিংরুমে ছেলেরা খুশি ছিল না। সবাই জিততে চেয়েছিল।’

এই সংস্করণে বাংলাদেশের পরবর্তী লক্ষ্য ২০২৩ বিশ্বকাপ। নিজেদের জন্য এটিকে সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট হিসেবে দেখছেন তামিম, ‘আমাদের চারজনের (সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ) এটাই সম্ভবত শেষ বিশ্বকাপ। তার আগেই আমাদের সম্ভাব্য সেরা দল গড়ে তুলতে হবে ও লড়াই করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত