রজত কান্তি রায়, ঢাকা
চেন্নাই এক্সপ্রেস, চেন্নাই শহর, শাহরুখ খান, নুর আলম ও মোমো! না, শাহরুখ খানের সঙ্গে নুর আলমের দেখা হয়নি।
এ জন্মে কোনো ‘দুর্বিপাক’ না ঘটলে তার সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু শাহরুখ খানের ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ সিনেমাটি কিছুটা হলেও নুর আলমের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
২০১৩ সালে চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার সময় নুর আলম ঢাকা শহরের বনশ্রী নামের জায়গাটিতে একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। রেডিমেইড কাপড়ের দোকান। মূলত ভারত আর দেশের বিভিন্ন হাউস থেকে কাপড় কিনে বিক্রি করত দোকানটি। সে দোকানের মালিক, না, মালকিন, মোমো খেতে পছন্দ করতেন। নুর আলম বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে লক্ষ করেন। একসময় তাঁর মনে হয়, মোমোতে কী আছে? বানানো শিখতেই হবে। সে সময়, চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমাটি বিশাল জনপ্রিয়তা পায়। ফলে সে সিনেমায় ব্যবহার করা শাড়ির কদর বেড়ে যায় ঢাকায়। এ শাড়ি আনতে নুর আলমের দোকানের মালকিন বিভিন্ন সময় ভারতে যান। নুর আলমও তাঁর সঙ্গে যান কখনো কখনো।
একবার, মানে সেই চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমা মুক্তির সময়, নুর আলম একা একা চেন্নাই গিয়ে হাজির হলেন শাড়ি কিনতে। কিন্তু বিধি বাম। তাঁর পাসপোর্ট কীভাবে যেন হারিয়ে গেল। তিনি স্থানীয় থানায় উপস্থিত হয়ে আইনগত সব কাজ সেরে ফেললেন। বুঝতে পারলেন, সেখানে তাঁকে থাকতে হবে বেশ কিছুদিন। তিনি সেখানে ছিলেনও ২০ দিনের মতো। সে সময়গুলো হেলায় না হারিয়ে তিনি পূর্বপরিচিত এক শেফের সহায়তায় চেন্নাই শহরের এক শেফের কাছ থেকে মোমো বানানো শিখে ফেলেন। তাতে তাঁর সময় লাগে ১৭ দিন। এরপর দেশে ফিরে আসেন।
নুর আলমের মালকিন জানতেন না যে তিনি মোমো বানানো শিখেছেন। মাঝে মাঝে নুর আলম নিজের বানানো মোমো অন্য দোকানের নামে চালিয়ে সহকর্মীদের খাইয়ে জানতে চেয়েছেন, কেমন হয়েছে খেতে? সবাই প্রশংসা করেছেন। একসময় বাড়িতেই মোমো বানাতে শুরু করেন নুর আলম। তারপর ফুটপাতে বিক্রি শুরু করেন। করোনার সময় চাকরিটা চলে গেলে তিনি মোমো বিক্রিতে মন দেন। নুর আলম বলেন, ‘অনলাইনে বেচতাম তখন। কোনো দিন একটা বা দুইটা অর্ডার পাইতাম। নিজেই হেঁটে গিয়ে দিয়া আসতাম।’
ভীষণ যুদ্ধ করতে হয় করোনার সময়টায়। এ সময় তাঁর এক মামা, যিনি আবার শেফ, তিনি নুর আলমকে সাহস জোগান। কিন্তু সমস্যা হলো, তাঁর তো ফ্রিজ নেই! একজনকে পার্টনার করে নিলেন। কারণ তাঁর ফ্রিজ আছে আর নুর আলম মোমো বানাতে জানেন। কিছুদিন চলল। তারপর যা হয়, দুজনের দুটি পথ দুদিকে বেঁকে গেল।
এবার একাই পথে নামলেন নুর আলম। সঙ্গী চেন্নাইতে শিখে আসা মোমো বানানোর বিদ্যা। বনশ্রী এলাকায় নুর আলমের কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ভাবি ছিলেন, কাপড়ের দোকানের সূত্র ধরে।
একজনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল ভালো। নুর আলম তাঁকে বললেন, তিনি দোকান দেবেন। ভাবি ১০ হাজার টাকা দিয়ে সহায়তা করলেন। এমন আরও অনেকেই তাঁকে সে সময় সামর্থ্যমতো টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন। নুর আলম সেই টাকায় দোকান ভাড়া নিয়েছেন। তারপর খুলেছেন নিজের মোমোর দোকান— মোমো মেলা।
এখন বনশ্রী ও আফতাবনগরসহ তাঁর চারটি দোকান—সব দোকানে মূলত মোমো বিক্রি হয়। সঙ্গে চিকেন কিংবা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা অন্য হালকা কিছু খাবার।
এই মধ্য ডিসেম্বরের এক বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে উপস্থিত হই নুর আলমের মোমোর দোকানে, বনশ্রী ৫ নম্বর সড়কে। এটিই তাঁর হেড অফিস। আনুমানিক চার হাত প্রস্থ আর আট হাত দৈর্ঘ্যের সে দোকানের ভেতর দাঁড়িয়ে হট চিলি চিকেন মোমো খেতে খেতে কথা হয় নুর আলমের সঙ্গে।
বললাম, কত রকমের মোমো বানান? উত্তর দিলেন, ১০ রকমের! এর মধ্যে ভেজিটেবল মোমো, চিকেন মোমো, বিফ মোমো, চিজ মোমো, চকলেট মোমো, নাগা বিফ মোমো, প্রন মোমো, ফিশ মোমো উল্লেখযোগ্য। প্রতি প্লেটে থাকে ছয় পিস মোমো আর সঙ্গে সস।
নুর আলম নিজ হাতেই সব তৈরি করেন। অর্থাৎ মোমোর ভেতরের পুর থেকে শুরু করে চাটনি—সব নিজ হাতে বানান।
দরদাম
এখানে মোমোভেদে দামেরও পার্থক্য আছে। প্রতি প্লেট ভেজিটেবল মোমো ৭০ টাকা, চিকেন মোমো ৮০ টাকা, বিফ মোমো ১০০ টাকা, চিজ মোমো ১০০ টাকা, চকলেট মোমো ১০০ টাকা, নাগা বিফ মোমো ১৩০ টাকা, চিলি চিকেন মোমো ৯০ টাকা।
চেন্নাই এক্সপ্রেস, চেন্নাই শহর, শাহরুখ খান, নুর আলম ও মোমো! না, শাহরুখ খানের সঙ্গে নুর আলমের দেখা হয়নি।
এ জন্মে কোনো ‘দুর্বিপাক’ না ঘটলে তার সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু শাহরুখ খানের ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ সিনেমাটি কিছুটা হলেও নুর আলমের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
২০১৩ সালে চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার সময় নুর আলম ঢাকা শহরের বনশ্রী নামের জায়গাটিতে একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। রেডিমেইড কাপড়ের দোকান। মূলত ভারত আর দেশের বিভিন্ন হাউস থেকে কাপড় কিনে বিক্রি করত দোকানটি। সে দোকানের মালিক, না, মালকিন, মোমো খেতে পছন্দ করতেন। নুর আলম বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে লক্ষ করেন। একসময় তাঁর মনে হয়, মোমোতে কী আছে? বানানো শিখতেই হবে। সে সময়, চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমাটি বিশাল জনপ্রিয়তা পায়। ফলে সে সিনেমায় ব্যবহার করা শাড়ির কদর বেড়ে যায় ঢাকায়। এ শাড়ি আনতে নুর আলমের দোকানের মালকিন বিভিন্ন সময় ভারতে যান। নুর আলমও তাঁর সঙ্গে যান কখনো কখনো।
একবার, মানে সেই চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমা মুক্তির সময়, নুর আলম একা একা চেন্নাই গিয়ে হাজির হলেন শাড়ি কিনতে। কিন্তু বিধি বাম। তাঁর পাসপোর্ট কীভাবে যেন হারিয়ে গেল। তিনি স্থানীয় থানায় উপস্থিত হয়ে আইনগত সব কাজ সেরে ফেললেন। বুঝতে পারলেন, সেখানে তাঁকে থাকতে হবে বেশ কিছুদিন। তিনি সেখানে ছিলেনও ২০ দিনের মতো। সে সময়গুলো হেলায় না হারিয়ে তিনি পূর্বপরিচিত এক শেফের সহায়তায় চেন্নাই শহরের এক শেফের কাছ থেকে মোমো বানানো শিখে ফেলেন। তাতে তাঁর সময় লাগে ১৭ দিন। এরপর দেশে ফিরে আসেন।
নুর আলমের মালকিন জানতেন না যে তিনি মোমো বানানো শিখেছেন। মাঝে মাঝে নুর আলম নিজের বানানো মোমো অন্য দোকানের নামে চালিয়ে সহকর্মীদের খাইয়ে জানতে চেয়েছেন, কেমন হয়েছে খেতে? সবাই প্রশংসা করেছেন। একসময় বাড়িতেই মোমো বানাতে শুরু করেন নুর আলম। তারপর ফুটপাতে বিক্রি শুরু করেন। করোনার সময় চাকরিটা চলে গেলে তিনি মোমো বিক্রিতে মন দেন। নুর আলম বলেন, ‘অনলাইনে বেচতাম তখন। কোনো দিন একটা বা দুইটা অর্ডার পাইতাম। নিজেই হেঁটে গিয়ে দিয়া আসতাম।’
ভীষণ যুদ্ধ করতে হয় করোনার সময়টায়। এ সময় তাঁর এক মামা, যিনি আবার শেফ, তিনি নুর আলমকে সাহস জোগান। কিন্তু সমস্যা হলো, তাঁর তো ফ্রিজ নেই! একজনকে পার্টনার করে নিলেন। কারণ তাঁর ফ্রিজ আছে আর নুর আলম মোমো বানাতে জানেন। কিছুদিন চলল। তারপর যা হয়, দুজনের দুটি পথ দুদিকে বেঁকে গেল।
এবার একাই পথে নামলেন নুর আলম। সঙ্গী চেন্নাইতে শিখে আসা মোমো বানানোর বিদ্যা। বনশ্রী এলাকায় নুর আলমের কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ভাবি ছিলেন, কাপড়ের দোকানের সূত্র ধরে।
একজনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল ভালো। নুর আলম তাঁকে বললেন, তিনি দোকান দেবেন। ভাবি ১০ হাজার টাকা দিয়ে সহায়তা করলেন। এমন আরও অনেকেই তাঁকে সে সময় সামর্থ্যমতো টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন। নুর আলম সেই টাকায় দোকান ভাড়া নিয়েছেন। তারপর খুলেছেন নিজের মোমোর দোকান— মোমো মেলা।
এখন বনশ্রী ও আফতাবনগরসহ তাঁর চারটি দোকান—সব দোকানে মূলত মোমো বিক্রি হয়। সঙ্গে চিকেন কিংবা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা অন্য হালকা কিছু খাবার।
এই মধ্য ডিসেম্বরের এক বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে উপস্থিত হই নুর আলমের মোমোর দোকানে, বনশ্রী ৫ নম্বর সড়কে। এটিই তাঁর হেড অফিস। আনুমানিক চার হাত প্রস্থ আর আট হাত দৈর্ঘ্যের সে দোকানের ভেতর দাঁড়িয়ে হট চিলি চিকেন মোমো খেতে খেতে কথা হয় নুর আলমের সঙ্গে।
বললাম, কত রকমের মোমো বানান? উত্তর দিলেন, ১০ রকমের! এর মধ্যে ভেজিটেবল মোমো, চিকেন মোমো, বিফ মোমো, চিজ মোমো, চকলেট মোমো, নাগা বিফ মোমো, প্রন মোমো, ফিশ মোমো উল্লেখযোগ্য। প্রতি প্লেটে থাকে ছয় পিস মোমো আর সঙ্গে সস।
নুর আলম নিজ হাতেই সব তৈরি করেন। অর্থাৎ মোমোর ভেতরের পুর থেকে শুরু করে চাটনি—সব নিজ হাতে বানান।
দরদাম
এখানে মোমোভেদে দামেরও পার্থক্য আছে। প্রতি প্লেট ভেজিটেবল মোমো ৭০ টাকা, চিকেন মোমো ৮০ টাকা, বিফ মোমো ১০০ টাকা, চিজ মোমো ১০০ টাকা, চকলেট মোমো ১০০ টাকা, নাগা বিফ মোমো ১৩০ টাকা, চিলি চিকেন মোমো ৯০ টাকা।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪