Ajker Patrika

ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয়

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ২৯
ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয়

সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে ধানের বাজারদর বেশি, ঝামেলাও কম। তাই সরকারি গুদামে না দিয়ে স্থানীয় বাজার ও ব্যবসায়ীদের কাছে ধান বিক্রি করছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষকেরা। লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা থাকায় মিলমালিকদের অনেকেই চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করলেও মুখ থুবড়ে পড়েছে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম। এতে চলতি মৌসুমে পাকুন্দিয়া সরকারি খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারা দেশের মতো গত ৭ নভেম্বর এই উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমন ধানের সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ নূর মোহাম্মদ। এই বছর সরকারিভাবে প্রতি কেজি চালের দর ৪০ টাকা ও ধানের দর ২৭ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ধান ও চাল উভয়েরই বাজারদর সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি। এ জন্য ধান ও চাল সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে পৌরসভাসহ উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র এক মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪৬ মেট্রিক টন। অপর দিকে চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩২৪ দশমিক ৫০০ মেট্রিক টন। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬৭ মেট্রিক টন। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় রয়েছে। তাতে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ধান সংগ্রহে তা না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তৎপর রয়েছে খাদ্য বিভাগ।

কৃষকেরা বলেন, ‘সরকারি খাদ্যগুদামে ধান নিজ খরচে পৌঁছে দিতে হবে, ধানের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আরও অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়। সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে, এর চেয়ে বেশি দামে ব্যবসায়ীরা বাড়ির উঠান থেকে ধান নিয়ে যাচ্ছেন। তাহলে লোকসান দিয়ে আমরা কেন সরকারি গুদামে ধান দিতে যাব?’

উপজেলার রুকুন উদ্দিন ও কুদ্দুছ মিয়া নামের দুজন কৃষক বলেন, ‘সরকারিভাবে ধানের দাম ২৭ টাকা কেজি, অন্যদিকে ধান ব্যবসায়ী ও মিলাররা বাড়ির উঠোন থেকে ২৮ টাকা বা ২৯ টাকা কেজি দরে নগদ টাকায় ধান কিনছেন। আমাদের কোনো ঝামেলাই পোহাতে হচ্ছে না। তাহলে আমরা কেন কম দামে ধান দিতে যাব? এর বাইরেও সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে নিজ খরচে পৌঁছে দিতে হবে, ধানের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে হবে, নানা ঝামেলা আছে। দাম বেশি হলে তা-ও কষ্ট করা যায়, কিন্তু কষ্ট করে কম দামে ধান দিতে কেন যাব?’

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. হাসান আলী মিয়া বলেন, ‘চাল সংগ্রহে আমরা মিলমালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি, কিন্তু ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। সরকারঘোষিত দর আর বাইরের বাজারদর কাছাকাছি হওয়ার পরও মিলমালিকেরা সহযোগিতা করছেন। ফলে চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তবে ধান সংগ্রহ নিয়ে সংশয়ে আছি, তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনো যে সময় রয়েছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত