Ajker Patrika

৯৬% করাতকলই অবৈধ

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
আপডেট : ১৫ মে ২০২২, ১৩: ০৫
Thumbnail image

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শতকরা প্রায় ৯৬ ভাগ করাতকলই অবৈধ। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় অবৈধ এসব করাতকলে অবাধে চেরাই করা হচ্ছে গাছ। শুধু তা-ই নয়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার অন্যান্য সড়কের দুই পাশেই সেই কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়। এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। উপজেলা বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে করাত কলের এ তথ্য জানা গেছে।

সচেতন ব্যক্তিদের অভিযোগ, সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এসব করাতকল গড়ে তুলেছেন। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বন বিভাগ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এক বছর আগের হিসেবে ৩২টি করাতকল রয়েছে। এ বছর ১০ থেকে ১৫টি করাতকল স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে মাত্র দুটি করাত কলের অনুমোদন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধভাবে চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার চরহোসেনপুর থেকে শুরু হয়ে মাইজবাগ ইউনিয়নের মাইজবাগ বাজার পর্যন্ত অন্তত আটটি করাত কল রয়েছে। ওই সব করাত কলের মালিকেরা আইনকানুনের কোনো তোয়াক্কা না করেই নিজেদের ইচ্ছেমতো ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক ঘেঁষে কাঠ স্তূপ করে রেখেছেন। শুধু তা-ই নয়, অন্যান্য করাতকলের কাঠও গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে স্তূপ করে রাখা হয়। সড়কের দুই পাশে কাঠগুলো স্তূপ করে রাখায় শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এ অবস্থায় বাড়ছে দুর্ঘটনাও।

মাইজবাগ পাছপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানিয়া তাবাচ্ছুম আঁখি বলে, ‘সড়কের এ অংশে আসার পর ভয় লাগা শুরু হয়। মনে হয়, এই বুঝি দুর্ঘটনা ঘটল। বিশেষ করে যখন বাস-ট্রাক আসে, তখন কাঠের স্তূপের কারণে সরে দাঁড়ানোর আর উপায় থাকে না।’

পৌর এলাকার শিমরাইলে অবস্থিত করাতকল মালিক মো. বিল্লাল হোসেন বাবুল বলেন, ‘সনদের জন্য জেলা থেকে কাগজপাতি সংগ্রহ করেছি। খুব দ্রুত জমা দিয়ে দেব।’

লাইসেন্সবিহীন করাতকলের বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক মালিক বলেন, লাইসেন্সের বিষয়ে এখন অবধি কেউ আসেনি। তাই লাইসেন্স করা হয়নি। তবে অচিরেই সনদের জন্য আবেদন করবেন বলে জানান তাঁরা। এ ছাড়া মহাসড়কের দুই পাশ থেকে কাঠের স্তূপ সরিয়ে নেবেন বলেও জানান করাতকল মালিকেরা।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমি কয়েক দিন হলো এ উপজেলায় যোগদান করেছি। যেসব করাতকলের সনদ নেই, সেগুলোতে গিয়ে তাদের দ্রুত সনদ নিতে তাগিদ দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘সনদ না নিয়ে যাঁরা অবৈধভাবে করাতকল চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া অবৈধভাবে মহাসড়ক ঘেঁষে কাঠের স্তূপ রেখেছেন যাঁরা, তাদেরও মৌখিকভাবে নোটিশ করে এসেছি। অচিরেই তা সরিয়ে না নিলে কাঠ বাজেয়াপ্ত করাসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত