Ajker Patrika

ভারতীয় পণ্য কিনতে ভিড় বাংলাদেশি দোকান ফাঁকা

আশিস রহমান, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১৫: ৪৭
ভারতীয় পণ্য কিনতে ভিড়  বাংলাদেশি দোকান ফাঁকা

সিরামিকসামগ্রী বিক্রেতা আলমগীর হোসেন। সীমান্ত হাটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন। কাঁচামাল ব্যবসায়ী আবুল হোসেন দুপুর পর্যন্ত এক টাকার পণ্যও বিক্রি করতে পারেননি। তাঁদের মতো আলমগীর, আবুল হোসেন, সুমন, আব্দুর রহমানসহ বাংলাদেশি অন্য ব্যবসায়ীদের অবসর কাটছে ক্রেতাদের অপেক্ষায়।

অন্যদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দোকানগুলোতে বাংলাদেশি ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ভারতীয় পণ্য কিনতে দূরদূরান্ত থেকে বাংলাদেশি ক্রেতারা বর্ডার হাটে ভিড় করছেন। এমন চিত্র দেখা গেছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের বোগলাবাজার ইউনিয়নের বাগানবাড়ী-রিংকু বর্ডার হাটে।

বাংলাবাজার ইউনিয়নের ভাঙাপাড়া গ্রামের মেলামিনসামগ্রী বিক্রেতা সুমন বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত মাত্র দেড় হাজার টাকার মালামাল বিক্রি করতে পেরেছি।’

একই গ্রামের খাদ্যসামগ্রী বিক্রেতা আব্দুর রহমান জানান, সারা দিনে তাঁর ৬০০ টাকার খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হয়েছে।

আশানুরূপ ক্রেতা না পেয়ে হতাশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। প্রত্যাশা অনুযায়ী লাভের মুখ দেখছেন না তাঁরা। এমন অবস্থায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন।

গত ১২ মে বাগানবাড়ী-রিংকু বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হয়। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ হাট বসে। হাটে সাধারণত স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাঁচামাল, খাদ্য ও প্রসাধনসামগ্রী বিক্রি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, যেখানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে ২ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না; সেখানে একই সময়ে ভারতীয় বিক্রেতারা ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি করছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাটে ভারতীয় ক্রেতারা কম আসছেন। ক্রেতারা না আসায় তাঁরা লাভবান হতে পারছেন না।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, বাংলাদেশি পণ্যের চেয়ে ভারতীয় পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী কেনার জন্য দুই দেশের ক্রেতারা টিকিট কেটে হাটে প্রবেশ করেন। তবে বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্রেতাই টিকিট না কেটে হাটে প্রবেশ করলেও ভারতীয় ক্রেতারা টিকিট ছাড়া হাটে প্রবেশ করতে পারেন না। ফলে ভারতীয় পণ্য বেশি বিক্রি হয়।

বর্ডার হাটের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘হাটে যত মানুষের সমাগম হয়, সে অনুযায়ী বেচাকেনা করতে পারি না। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যদি এক লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেন, সেখানে আমরা বিক্রি করি মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। হাটে বাংলাদেশি ক্রেতা যদি আসেন ৩ হাজার, ভারতীয় ক্রেতা আসেন ৩০০।’

বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘এই হাটে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে যাঁদের বসতি রয়েছে, তাঁরাই মূলত পণ্য কিনতে পারেন। অথচ নিয়ম অমান্য করে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এসে পাইকারি ও খুচরা মালামাল কিনে নিয়ে যান। এতে আমাদের পণ্যদ্রব্যের চাহিদা কম। সরকারের কাছে দাবি, নিয়ম মেনে হাটে ক্রেতা আসুক। ভারতীয় নাগরিকেরা যেমন সীমিত আসছেন, তেমন বাংলাদেশি নাগরিকেরা সীমিত আসুক।’

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মউডন এলাকার বিক্রেতা তরুণ, বারিশ ও দেবী জানান, বিক্রি ভালো হচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ক্রেতাদের উপস্থিতি গত হাটের তুলনায় কম হয়েছে। প্রসাধনসামগ্রী বাংলাদেশি ক্রেতাদের বেশি আকৃষ্ট করছে।

বোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খান বলেন, ‘বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হাটের নিরাপত্তায় দেখভাল করছেন। হাটে দুই দেশের ক্রেতার সংখ্যা বাড়লে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে প্রক্রিয়া মানা হয়নি: ইউনেসকো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত