Ajker Patrika

হাসপাতালে আনসার সদস্যের বাড়াবাড়ি

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৭
হাসপাতালে আনসার সদস্যের বাড়াবাড়ি

আনসার বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে মাস্তানির অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মাস্তানি করছেন বলে রোগীর সঙ্গে আসা কয়েকজন স্বজন অভিযোগ তুলেছেন।

রোগীর স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, রামেক হাসপাতালে মাঝে মধ্যেই আনসার বাহিনীর সদস্যদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। সম্প্রতি একে একে ১২ জনকে ব্যাটালিয়নে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একজনের চাকরিও গেছে। তাও মাস্তানি থামছে না।

সবশেষ শুক্রবার রাতে দুই রোগীর ছয়জন স্বজন আনসার সদস্যদের মারধরের শিকার হয়েছেন। আত্মরক্ষায় রোগীর এক স্বজন পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরে রাজপাড়া থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাঁদের আনসার সদস্যদের থেকে রক্ষা করে। এর আগে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় রোগীর স্বজনদের।

ভুক্তভোগীদের একজনের নাম নাহিদ হাসান (৩০)। ব্যবসায়ী নাহিদের বাড়ি নগরীর টিকাপাড়া এলাকায়। তিনি বলেন, গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পাশের ওয়ার্ড থেকে এক ব্যক্তিকে বেধড়ক পেটাতে পেটাতে আনসারদের অফিসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই লোকটির পায়ে স্যান্ডেলও নেই। পাঁচ-ছয়জন আনসার তাঁকে পিটিয়েই যাচ্ছেন। এভাবে পেটাতে দেখে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এর মধ্যে আরও ২০ থেকে ২২ জন আনসার সদস্য চলে আসেন লাঠি হাতে। তাঁরা নাহিদকে বলতে থাকেন, ‘এটা চোর’। নাহিদ বুঝতে পারেন, তাঁকে চোর সাজিয়ে গণপিটুনি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তখন পালিয়ে ওয়ার্ডের ভেতর চিকিৎসাধীন থাকা তাঁর মায়ের কাছে যান তিনি। সেখানে গিয়েও আনসার সদস্যরা তাঁকে মারধর করতে থাকেন। তাঁকে বাঁচাতে গেলে লাঞ্ছিত হন তাঁর দুই ভাই, বোন এবং ভাইয়ের স্ত্রী। আনসারদের হাত থেকে বাঁচতে নাহিদ তখন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। এরপর পুলিশ এসে তাঁদের রক্ষা করে।

সম্প্রতি আনসার সদস্যদের হাতে রোগীর স্বজনদের লাঞ্ছিত হওয়ার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি তাঁদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন মৃত এক নারীর বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী ও তাঁর ছেলে, কলেজের শিক্ষক, মৃত এক শিশুর বাবা ও তাঁর বন্ধু। আনসার সদস্যদের হাত থেকে রেহাই পাননি এক নার্সের স্বামী, এমনকি চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যও। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা পর্যন্ত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ করা হলেই আনসার সদস্যরা এসে মারধর করেন। আর প্রতিটি ঘটনার পর আনসার সদস্যরা দাবি করেন, রোগীর স্বজনেরাই তাঁদের ওপর চড়াও হন। তাই এমন ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল আনসার বক্সের প্লাটুন কমান্ডার রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘রোগীর স্বজনেরা পরিচালক স্যারের সঙ্গে দেখা করলেন। আমরাও আছি। বিষয়টি সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’ মাঝে মাঝেই আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তিন দিন আগে এখানে এসেছি। সাক্ষাতে কথা বলব।’

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘রাতে ওয়ার্ডের ডাক্তার রোগীর স্বজনদের বের হয়ে যেতে বলছিলেন। কিন্তু একজন বের হচ্ছিলেন না। আনসার সদস্যরা তাঁকে বের করতে গেলে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তখন ওই ব্যক্তির পক্ষ নেওয়ায় আরেকজন রোগীর স্বজনদের সঙ্গে একটা ঝামেলা হয়েছে।’

মাঝে মাঝেই এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আনসার সদস্যদের মোটিভেশন করছি যে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা যাবে না। তারপরও যারা এমন করছেন, তাঁদের আমরা ব্যাটালিয়নে ফেরত পাঠাই। সম্প্রতি এ রকম ১২ জনকে ফেরত পাঠিয়েছি। আমাদের সুপারিশের ভিত্তিতে একজনের চাকরিও চলে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত