Ajker Patrika

সংকটের অজুহাতে বাড়ল দাম

বাবলু মোস্তাফিজ, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ২৫
Thumbnail image

দুই বছর করোনার কারণে ঈদে বেচাকেনা হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবার ঈদকে কেন্দ্র করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে রাজধানীর নিউমার্কেটের ঘটনার প্রভাব পড়েছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। ক্রেতার ভিড়ে জমজমাট ঈদবাজারে দেখা দিয়েছে পোশাকের সংকট। স্থানীয় দোকানিরা জানান, নিউমার্কেট থেকে তাঁদের পোশাক আসত। সংকটের কারণে বেড়েছে পোশাকের দাম।

পোশাকের দোকান ছাড়াও উপজেলার ছোট বড় সব মার্কেট এবং দোকানে ক্রেতাদের ভিড় প্রতিনিয়ত বাড়ছে। নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে মার্কেট কমিটির সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার তদারকিতে রয়েছে।

ভেড়ামারা শহরের প্রধান কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, নানা রঙের বাতি দিয়ে মার্কেটগুলো সাজানো। এসব বিপণি বিতানে পাওয়া যাচ্ছে লেহেঙ্গা, স্কার্ট টপস, থ্রি-পিস, জিনস প্যান্ট, টি-শার্ট, শাড়ির মধ্যে বেনারসি, কাতান ও জামদানি সিল্ক। ছেলেদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, ফতুয়া, জিনস প্যান্ট ও বিভিন্ন ডিজাইনের সেন্ডেল। এ ছাড়াও বাচ্চাদের জন্য রয়েছে হরেক ডিজাইনের পোশাক।

ডাকবাংলো মার্কেটের অনিকা ফ্যাশনের প্রোপ্রাইটর মো. সুইট শেখ বলেন, ‘নিউমার্কেট থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে আসতাম। সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা পোশাক পাইনি। এতে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেল। অন্য জায়গা থেকেও পোশাক পাচ্ছি না। যদিও কিছু পাচ্ছি, কিন্তু দাম গতবারের চেয়ে তিনগুণ বেশি। বিক্রি করলেও লাভ থাকছে কম।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় পর্যাপ্ত পোশাক পেলে দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারতাম। কারণ এবার ফসল ভালো হওয়ায় গ্রামের মানুষের কাছে পোশাক কেনার মতো টাকা রয়েছে।’

মার্কেটের শাম্মি ফ্যাশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গেল দুই ঈদে করোনা ছিল। এবার বেচা-বিক্রি অনেক ভালো। পোশাকের দাম বেশি হলেও দিন শেষে পোশাক কিনছেন ক্রেতারা।’ জ্যোতি ফ্যাশনের মালিক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য পণ্যের মতো এবার পোশাকের দাম বেড়েছে। এরপরও আমরা ঢাকাতে গিয়ে পোশাক পাচ্ছি না। অর্ডার অনুযায়ী পাচ্ছি না। সীমিত পোশাক পেয়েছি, তাও দাম বেশি। ক্রেতারা শুনে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তবে দাম বেশি হলেও কিনছেন। কারণ বাজারে পোশাকের স্বল্পতা রয়েছে।’

আকাশ অ্যান্ড অর্থী কসমেটিকসের প্রোপ্রাইটর সানবির রহমান স্বপন বলেন, ‘ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। পণ্যের দাম গত ঈদের থেকে তিনগুণ বেশি। প্রয়োজনের তুলনায় অল্প নিচ্ছেন ক্রেতারা।’ এ দোকানে কথা হয় মিমি নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কসমেটিকসের অনেক দাম বেড়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনছি। কারণ বাজেটের মধ্যে পোশাকসহ আরও জিনিস কিনতে হবে।’

পোশাক কিনতে আসা রাজিব বলেন, ‘আমার বন্ধুরা কয়েক দিন আগে প্যান্ট, জামা ও টিশার্ট কিনেছেন। তাঁদের নিয়ে কিনতে এসে দেখছি, এ ধরনের পোশাক আর নেই। যদিও এক দোকানে পেলাম, কিন্তু দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়েই কিনলাম।’

কামরুল ও রিমি দম্পতি তাঁদের দুই ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ঈদের বাজার করতে এসেছেন। বিরক্ত হয়ে কামরুল বলেন, ‘পোশাক পছন্দ হচ্ছে, কিন্তু দাম অনেক বেশি। এরপর ছেলে-মেয়েদের মাপের পোশাক পাচ্ছি না। দুদিন ঘুরে শুধুমাত্র জুতা কিনেছি। মনে হচ্ছে, দেরি হলে বাচ্চাদের পোশাক আর পাওয়া যাবে না। প্রতিটি দোকানে পোশাক সংকট রয়েছে।’

ডাকবাংলো মার্কেট পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘ঈদবাজার জমে উঠেছে। অনেক ক্রেতা। জিনিসপত্রের দাম এবার খুবই বেশি। পর্যাপ্ত পোশাক নেই দোকানে। অর্ডার দিলেও পাওয়া যাচ্ছে না।’

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, সব সময় পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে। কয়েক স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্বিঘ্নে ঈদের কেনাকাটাসহ সুন্দর পরিবেশে ঈদ উদ্‌যাপন উপহার দিতে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত