Ajker Patrika

গায়ের জোরে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি মামলা বসিয়ে দেওয়া হয়: দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৫, ১৮: ০৮
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত

বহুল আলোচিত পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির যথেষ্ট উপাদান ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ ছিল। এটি এখন পুনরুজ্জীবিত করে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

২০১২ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির আশঙ্কায় অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। এরই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে সে বছরের ১৭ ডিসেম্বর সাতজনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ।

মামলার প্রধান আসামি ছিলেন তৎকালীন সেতু বিভাগের সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তাঁকে গ্রেপ্তার করে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার চাকরিতে ফিরে আসেন।

সেই মামলা সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিল, সেটা নিয়ে মামলা করা হয়। মামলার উপাদানগুলো সঠিক থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত আদালতে এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু) দাখিল করা হয়। গত ডিসেম্বরে নতুন কমিশন শুরু হলে আমরা এটি পুনরায় বিবেচনা করি। আমাদের মনে হয়েছে, অনেকটা গায়ের জোরে মামলাটি বসিয়ে দেওয়া হয়। মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন। এ জন্য আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করি।’

আবদুল মোমেন বলেন, ‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা পিপিএ (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট) ও পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস) পুরোপুরি অনুসরণ করেই কাজ করতে হয়। পিপিএ-পিপিআর অনুসরণ করে যে কাজ করার কথা, পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে যে মূল্যায়ন কমিটি গঠন করার কথা, সে কমিটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছে।

‘অসৎ উদ্দেশ্য বা অপরাধপ্রবণতা এর মধ্যে থেকে যায়, যা প্রমাণিত হয়। আর্থিক মূল্যায়নে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ব্যয় বাদ দেওয়া হয়নি। বড় প্রকল্প করতে গেলে একই জিনিস অনেকবার ব্যবহার করার সুযোগ থাকে। সে ক্ষেত্রে যে জিনিস একবার ক্রয় করলে বারবার ব্যবহার করা যায়, সেটা কয়েকবার ক্রয় দেখানো সমীচীন নয়—এ রকম কয়েকটি ঘটনা পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঘটেছে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা যখন যৌথ মূল্যায়ন করি, পরামর্শদাতাদের যেসব জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) মূল্যায়ন করার কথা ছিল, সেগুলো সেভাবে করা হয়নি। এখানে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। মূল্যায়নের বিভিন্ন জায়গায় পিপিএ-পিপিআর এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। মূল্যায়ন কার্যক্রম চলাকালে কমিটির সদস্যদের যেসব সাক্ষাৎ ও তথ্য গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক ছিল, সেগুলো সেভাবে হয়নি।

‘ফলে আমরা মনে করি, আগের যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে, তা বাধ্য হয়েই হোক, যেভাবেই হোক—ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ। এবার আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন দাখিল করবেন এবং মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাকিব খানের নামের সঙ্গে ‘মেগাস্টার’ শব্দ নিয়ে জাহিদ হাসানের আপত্তি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পরই অস্ত্রের লাইসেন্স পান উপদেষ্টা আসিফ

১৬ জুলাই নিয়ে নাটক করা হয়েছে: শহীদ আবু সাঈদের ভাই

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এনপিবি পিস্তল কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র

গায়ের জোরে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি মামলা বসিয়ে দেওয়া হয়: দুদক চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত