Ajker Patrika

বাঁধ-সড়ক ভেঙে ২০ গ্রামে পানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২০ জুন ২০২২, ১৩: ৪১
বাঁধ-সড়ক ভেঙে ২০ গ্রামে পানি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী এবং বাসাইল উপজেলায় বাঁধ ও সড়ক ভেঙে কমপক্ষে ২০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে সেখানকার বাসিন্দারা। এসব এলাকার আউশ ধান, পাট, তিল, বাদামসহ বিভিন্ন শাকসবজির খেত তলিয়ে গেছে।

গতকাল রোববার কালিহাতী উপজেলার আনালিয়াবাড়ী এলাকায় বাঁধ ও বাসাইল উপজেলার আন্ধিরাপাড়া-বালিনা সড়কের কিছু অংশ ভেঙে যায়। আগামী কয়েক দিনে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, দুদিন ধরে বাসাইল উপজেলার আন্ধিরাপাড়া-বালিনা সড়কের বালিনা উত্তরপাড়া এলাকার সড়কটির ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে সড়কটি ভেঙে যায়। এ ছাড়া আন্ধিরাপাড়ার আরও তিনটি স্থানের সড়ক ভেঙে গেছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। এতে কয়েকটি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বিকল্প হিসেবে মানুষ নৌকায় যাতায়াত করছে।

এই দুদিনে উপজেলার বালিনা, আন্ধিরাপাড়া, আদাজান, কাঞ্চনপুর, কোদালিয়াপাড়াসহ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলার বালিনা দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. সোলাইমান বলেন, এ সড়কের চারটি জায়গা ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটির চারটি জায়গায় ভেঙে গেছে। সড়ক দিয়ে পানি ঢুকে বালিনা, আদাজান, ভোরপাড়া, আন্ধিরাপাড়া, কাঞ্চনপুরসহ আটটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। এখন নৌকা নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’

এদিকে কালিহাতী উপজেলার আনালিয়াবাড়ী এলাকার বাঁধটি ভেঙে গেছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম। এ বাঁধ এলাকা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে।

সল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, ‘পানির অতিরিক্ত চাপের কারণে বাঁধটি ভেঙে গেছে। এ কারণে উপজেলার আনালিয়াবাড়ী, ভাওয়াল, নরদৈ, গড়িয়া, হাবলা, দেওলাবাড়ীসহ ১০ থেকে ১২টি গ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত বছরও এটি ভেঙে গিয়েছিল।’

আব্দুল আলিম আরও বলেন, ‘মীরহামজানি এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড আরও একটি বাঁধে গত বছর কাজ করেছিল। সেই বাঁধ গত শনিবার বিকেলে দেবে যাওয়ার ফলে ঘরবাড়ি নদীতে বিলীনের উপক্রম হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা লোকজন নিয়ে সেখান থেকে ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করি।’

অপরদিকে, যমুনা, ধলেশ্বরী, ঝিনাই, বংশাই, লৌহজংসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে জেলার ১২টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ভূঞাপুর যমুনা নদীতে ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতুর পাড়ে ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, চারদিকেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় নদীভাঙনও দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে যেসব জায়গায় কাজ করা প্রয়োজন, সেখানে করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বলেন, ‘যমুনা, ধলেশ্বরীসহ জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ জিআর চাল, শুকনো খাবারসহ পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুত আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত