Ajker Patrika

নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২২, ১১: ৩৪
নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয়

দুর্নীতির দুই মামলায় ইতিমধ্যেই দণ্ডিত হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। যে কারণে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসনের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে গতকাল সোমবার সহকারী জজদের ৪৭তম বিশেষ বনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৬৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, দুর্নীতির মামলায় দুই বছর বা তার অধিক সাজা হলে এমপি নির্বাচন করতে পারবেন না। খালেদা জিয়া আদালতের মাধ্যমে দণ্ডিত। দেশে বর্তমানে যে আইন আছে সে আইনে যদি তিনি (খালেদা) যোগ্য হন তাহলে নির্বাচন করবেন, আর তিনি যদি অযোগ্য হন তাহলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। তবে এখন যে আইন আছে তাতে মনে হয় না, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন।

সংসদ নির্বাচনে অযোগ্যতার বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬(২) (ঘ) তে বলা আছে–নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পর ওই দিনই খালেদাকে নেওয়া হয় পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। এরপর খালেদা জিয়া সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন। এদিকে সাজা বাড়াতে আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে একই বছরের ৩০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। যা এখন আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। পরে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। যা এখন শুনানির অপেক্ষায়।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি দেয় সরকার। এর আগে সাজা কমাতে আবেদন করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

সাজা স্থগিতের শর্ত ছিল খালেদা জিয়া নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এরপর থেকে দফায় দফায় তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাসের জন্য মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

তবে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতা ছাড়ুক, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসুক, এরপর দেখা যাবে, কে নির্বাচন করতে পারবে, আর কে পারবে না।’

এ ছাড়া বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আইন যদি তার নিজস্ব গতিতে চলে, আইনি প্রক্রিয়াতেই খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। তাঁর তথাকথিত দণ্ড আইনবহির্ভূতভাবে এক ব্যক্তির ইচ্ছায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত