Ajker Patrika

‘বাজারে আইলেই মাথা ঘোরে, যে দাম বাড়ছে!’

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২২, ১৬: ১৪
‘বাজারে আইলেই মাথা ঘোরে, যে দাম বাড়ছে!’

‘কাম-কাজ নাই। বাজারোত আইলেই মাথা ঘোরে, যে দাম বাড়ছে! কী থুইয়া কী কিনি। বাজারোত গরিব মারার কল বসাইছে।’

পীরগাছায় বাজারে এসে কথাগুলো বলছিলেন অনন্তরাম গ্রামের দিনমজুর আব্দুস সাত্তার। উপজেলায় তাঁর মতো নিম্ন আয়ের মানুষের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। রমজান মাসকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা তেল, ডাল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্যে সংকট সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে ধারাবাহিকভাবে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা। এমনকি তেলের বোতলের গায়ে থাকা মূল্য তুলে ফেলছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া বেড়ে গেছে সবজি এবং পশু-খাদ্যের দাম। এতে হাঁপিয়ে উঠছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। আর মধ্যবিত্তরা পারছেন না কুলিয়ে উঠতে।

উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে লিটার প্রতি ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি কেজি চিনি ৮০ থেকে ৯০, ডাল ৮০ থেকে ১০০, খোলা লবণ ১০ থেকে ২০, করলা ১০০ থেকে ১২০, কাঁচা মরিচ ৩০ থেকে ৪০ ও পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পৌঁছেছে। মাংসে দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। ডিমের দাম ২৮ টাকা হালি থেকে ৩৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে। আর ভুসি কেজিতে ৫ টাকা এবং বয়লার ফিড কেজিতে ৭ টাকা বেড়েছে।

বাজারে কথা হয় আজিজুল নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যেভাবে তেলে দাম বাড়ছে, তেল খাওয়া ছেড়েই দিতে হবে। বোতলের গায়ে কোনো মূল্য নেই। ব্যবসায়ীরা যা চাচ্ছেন তাতেই নিলে নেন, না নিলে নাই। তাঁদের অজুহাত, তেল পাওয়া যাচ্ছে না।’

সব দোকানে তেল থাকার পরও সংকটের কথা বলে দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ করেন সুখানপুকুর গ্রামের আলা উদ্দিন। তাঁর দাবি, বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম না থাকায় ব্যবসায়ীরা গরিব মারার ফাঁদ পেতেছেন।

তবে পীরগাছা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ডিলার পয়েন্ট থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলাররা সংকট সৃষ্টি করে বেশি দামে বিক্রির জন্য তেল মজুত করে রাখছেন।

অন্যদিকে পীরগাছা বাজারের ডিলার আব্দুল মান্নান বলেন, তেলের কোনো সংকট নেই। কিছু খুচরা ব্যবসায়ী বেশি দামের আশায় আগের কেনা বোতলের লিখিত মূল্য তুলে বেশি দামে বিক্রি করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, ‘ভোজ্যতেলের বোতলের মূল্য তুলে বিক্রি অপরাধ। এ রকম কেউ অভিযোগ করেননি। তবু বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত