Ajker Patrika

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে অচলাবস্থা দীর্ঘ হচ্ছে, বাড়ছে মামলাজট

সাইফুল মাসুম ও শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ৪৮
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে অচলাবস্থা দীর্ঘ হচ্ছে, বাড়ছে মামলাজট

দ্বন্দ্বের শুরু একটি মামলার নথিভুক্তি নিয়ে। এক বিচারক ও আইনজীবীর বিবাদের পর জড়িয়ে পড়েন পুরো আইনজীবী সমিতি ও আদালতের কর্মচারীরা। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। কর্মচারীরা পালন করেন কর্মবিরতি, আর আইনজীবীরা আদালত বর্জন। তিন দিনের আদালত বর্জন কর্মসূচি বেড়ে হলো ছয় দিন। এতে অচলাবস্থা দীর্ঘ হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের। বাড়ছে মামলার জট, সেই সঙ্গে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে স্ত্রী হোছনার সঙ্গে মামলা চলছে ডেকোরেটর শ্রমিক আলম মিয়ার। দুই পরিবারের সমঝোতায় এখন নিষ্পত্তি হওয়ার পথে। মামলাটির শুনানির তারিখ ছিল গতকাল সোমবার। সেই অনুযায়ী আদালতে এসেছিলেন উভয় পক্ষের লোকজন। কিন্তু আইনজীবীদের আদালত বর্জনে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁদের।

শুধু আলম-হোছনা দম্পতিই নন, আদালতের অচলাবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার হাজারো বিচারপ্রার্থী। ১৬ বছর ধরে জেলা আইনজীবী সমিতির সঙ্গে জড়িত আইনজীবী হুমায়ুন মোর্শেদ। গতকাল তাঁর তিনটি মামলার শুনানি ও তিনটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এই ছয় মামলার সঙ্গে অন্তত ২৫ জন যুক্ত।

আইনজীবীদের আদালত বর্জনের এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করেন সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। কর্মবিরতি ছিল বৃহস্পতি, রবি ও সোমবার। আগের ঘোষণা অনুযায়ী তিন দিনের আদালত বর্জন সোমবার শেষ হবে, এমন আশায় ছিলেন অনেক মামলার বাদী, বিবাদী এবং আইনজীবীরা। কিন্তু তা হয়নি। সোমবার আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে সাধারণ সভা শেষে আদালত বর্জন কর্মসূচি আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভুইয়া বলেন, তিন কার্যদিবসের দাবিগুলো আদায় না হওয়ায় আদালত বর্জন কর্মসূচি আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। 

দীর্ঘ হচ্ছে মামলার জটব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬টি আদালতে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। সব আদালতে দৈনিক ৫০০-এর বেশি মামলার শুনানি হয়। অচলাবস্থার কারণে জেলার ২৬টি কোর্টে মামলার জট দীর্ঘ হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিচারকেরা এজলাসে নিয়মিত এলেও আইনজীবীরা আদালতে না আসায় আদালতের কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এর সঙ্গে বাড়ছে মামলার জট।

বিষয়টি নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, দিনের পর দিন তাঁদের কর্মবিরতিতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই কর্মসূচির ইতি টানা উচিত। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত