Ajker Patrika

নাব্যতা-সংকটে ফের নৌজট

জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫১
Thumbnail image

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও জামালগঞ্জের একাংশে আবার নৌজট সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে বৌলাই ও রক্তি নদীতে পলি জমে নৌজট সৃষ্টি হয়। ১৫ দিনের ব্যবধানে আবারও নৌজটের কারণে বিপাকে পড়েছেন নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নাব্যতা-সংকটের কারণে তাহিরপুরের পাটলাই নদীর সুলেমানপুর এলাকা ও জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের বৌলাই ও আবুয়া নদীর, হিজলা, হাওরিয়া আলীপুর, বদরপুর, বেহেলীসহ প্রায় কয়েক কিলোমিটারজুড়ে নৌযান আটকা পড়ে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে জামালগঞ্জের উল্লিখিত অঞ্চলগুলোতে চরম নৌজট সৃষ্টি হয়।

প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় নৌজট স্বাভাবিক হলেও, ১৫ দিনের ব্যবধানে আবার তাহিরপুরের সুলেমানপুর এলাকার পাটলাই নদীতে নৌজট বাধে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রায় ৭০০ নৌযানে থাকা প্রায় তিন হাজার শ্রমিককে।

গতকাল রোববার সকালে সুলেমানপুর পাটলাই নদীর সরেজমিন এ চিত্র দেখা গেছে। এ সময় স্থানীয়রা জানান, নদীর তলদেশ ভরাট ও নৌযান শ্রমিকদের প্রতিযোগিতায় প্রতিবছরই একাধিকবার এই নৌজটের সৃষ্টি হয়। জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুরের বৌলাই এবং রক্তি নদীতে আটকা পড়া নৌযানগুলো বালু ও পাথর নিয়ে তাহিরপুর উপজেলার ফাজিলপুর ও বড়ছড়া থেকে ছেড়ে আসে। গত বছর বিশ্বম্ভরপুরের রক্তি নদী খনন করা হলেও নাব্যতা সংকট না কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নৌযান শ্রমিক ও স্থানীয়রা।

পাটলাই নদীতে আটকে থাকা নৌশ্রমিক মো. আবুল কালাম বলেন, ‘এ পথে প্রায় ১২ বছর যাবৎ যাতায়াত করছি। প্রতিবছরই শীতের এ মৌসুমে নদীতে পানি কম থাকায় নৌজটে আটকে থাকতে হয়। বর্তমানে আমরা প্রায় ১০ দিন যাবৎ এখানে আটকা আছি।’

আরেক নৌশ্রমিক শাহজাহান বলেন, ‘আমরা যেখানে বর্তমানে আটকা আছি, এখান থেকে মাত্র আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ১০ থেকে ১৫ দিন। এ সংকট যেন দেখার কেউ নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নৌকার সুকানি বলেন, ‘নৌজটের এ সময়ে রাতের আঁধারে দুষ্কৃতকারীরা নৌকায় উঠে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধরসহ মোবাইল ফোন ও নৌকার ব্যবহৃত অন্যান্য মালামাল তারা নিয়ে যায়।’

নৌজট নিরসনে তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সচিব রাজেশ তালুকদার বলেন, ‘প্রতিবছর এ সময় নদীতে পানি কম থাকে। বর্তমানে প্রায় ৭০০ নৌযান আটকা রয়েছে। তবে এ জট নিরসনে আমাদের সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে কিছু অস্থায়ী লোক নিয়োগ দিয়েছি। তাঁরা পুলিশের উপস্থিতিতে কাজ করছেন।’

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির বলেন, ‘আশা করছি, দ্রুত নৌজট স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

নৌকায় চাঁদাবাজির বিষয়টি জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘নৌজট নিয়ে যাতে কোনো পক্ষ চাঁদাবাজি করতে না পারে, সে জন্য প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা ১৪টি নদী খননের জন্য একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এটি অনুমোদন পেলেই নদী খননের কাজ শুরু হবে। তখন আর নাব্যতা সংকট থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত