Ajker Patrika

সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৩
সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম

কুড়িগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে। করোনা ও বিদ্যালয়ে খাবার কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষক ও অবিভাবকেরা।

কুড়িগ্রাম জেলায় ১ হাজার ২৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে সাড়ে ৪ শতাধিক বিদ্যালয় চরাঞ্চলে অবস্থিত। জেলার ৯ উপজেলার সব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর হার বাড়াতে এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণে ২০০২ সাল থেকে চালু করা হয় বিদ্যালয়ে খাবার কর্মসূচি। এর আওতায় মধাহ্ন বিরতির সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৭৫ গ্রাম ওজনের পুষ্টিমান সম্পন্ন এক প্যাকেট করে বিস্কুট দেওয়া হতো। কিন্তু সম্প্রতি খাবার কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় জেলায় প্রাথমিকে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে ২০ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত। এ অবস্থায় দ্রুত এ কার্যক্রম চালু করা হলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি ঝরে পড়াও কমে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের খেয়ার আলগার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম বলে, ‘আগে আমাদেরকে টিফিনের সময় বিস্কুট দেওয়া হত। এখন দেওয়া হয় না। তাই দুপুরের পর খিদে লেগে যাওয়ায় আমরা ক্লাস করতে ভালো লাগে না।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের চঞ্চলতা ও ক্লাসে মনোযোগ বাড়াতে খাবার কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুপুরের পর শিক্ষার্থীরা আর ক্লাসে মনোযোগী হতে পারছে না।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের চর উদনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বাবলু মিয়া বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৬২ জন। এর মধ্যে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকছে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী।’ প্রায় ৪ মাস ধরে খাবার কার্যক্রম বন্ধ থাকার প্রভাব শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির জন্য কিছুটা দায়ি। বিদ্যালয়ে খাবার কার্যক্রম আবারও চালু হলে উপস্থিতি বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কানিজা আক্তার জানান, করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হয়। বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিকে শিক্ষার্থীর হার একটু বেশি থাকলেও বিস্কুট না দেওয়ায় দিনে দিনে কমে যাচ্ছে সংখ্যা। খাবার কার্যক্রম চালু হলে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়বে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, দেশের দরিদ্রতম জেলা হিসেবে কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০২ সাল থেকে খাবার কার্যক্রম চালু করা হয়। কার্যক্রম চালুর জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মধ্যে চুক্তিও হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন শারীরিক পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে ক্লাসে মনোযোগী করতে দ্রুত এ কার্যক্রম চালু করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত