Ajker Patrika

শেরপুরের দই

রঞ্জন কুমার দে, শেরপুর (বগুড়া) 
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ০৯
শেরপুরের দই

দই মিষ্টি ক্ষীরসা,

রাজা বাদশাহ শেরশাহ,

মসজিদ মন্দির মূর্চাঘুর,

এসব মিলেই শেরপুর।

দেশের অন্যতম প্রাচীন নগরী বগুড়ার শেরপুরের কথা বলতে গেলে দইয়ের নামটাই আগে আসে। বগুড়ার দই বলতে আসলে শেরপুরের দইকেই বোঝায়।

বগুড়া শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে প্রাচীন শহর শেরপুর। একসময় এখানেই রাজত্ব করত প্রায় ২০টি জমিদার পরিবার। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এখানকার দুগ্ধজাতশিল্প বিকশিত হয়েছে। জমিদারদের প্রতাপ শেষ হলেও শেরপুরের দইয়ের চাহিদা দিন দিন বেড়েছে। এ চাহিদা মেটাতে এখন শেরপুরেই ছোট-বড় দুই শর মতো দইয়ের কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানায় প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে সাড়ে তিন শ মণ দই উৎপন্ন হয়।

দুধের মান, ঘনত্ব, সঠিক সময় ধরে জ্বাল দেওয়া, আবহাওয়া, পানির বিশুদ্ধতা, পাত্র প্রস্তুত করা, কারিগরের দক্ষতা ইত্যাদি যেকোনো একটির তারতম্য হলেই তা দইয়ের মানের ওপর প্রভাব ফেলে। শেরপুর পৌরশহরের সন্তোষ কুমার ঘোষ বলেন, ‘দই তৈরির কাজ শেষ হয় দুই ধাপে।’

প্রতি ১০০ লিটার দুধের সঙ্গে ১০ লিটার ফুটন্ত পানি মেশাতে হয়। সেই মিশ্রণ কড়াই বা ড্রামে ঢেলে কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা জ্বাল দিতে হবে। দুধ হালকা বাদামি হয়ে এলে তার সঙ্গে ২০ থেকে ২২ কেজি চিনি মিশিয়ে আবারও প্রায় আধা ঘণ্টা জ্বাল দিতে হবে। এই পর্যায়ে জ্বলন্ত কড়াই বা ড্রাম থেকে সেই দুধ বালতিতে ভরে মগে করে চুলার চারপাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা মাটির সরায় ঢালতে হবে। তবে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন আকারের পাত্রেও দই ভরা হয়।

দ্বিতীয় ধাপে, পাত্রগুলো জ্বলন্ত চুলার পাশে ছাউনি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। তবে মাঝেমধ্যেই ছাউনি উঠিয়ে দেখতে হয় পাত্রে দই ঠিকমতো জমছে কি না। দই সঠিকভাবে পাত্রে জমানোর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা একটি বড় বিষয়। আবহাওয়া খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা হলে দই জমবে না। তাই তাপমাত্রা নির্ধারণের কাজটি সাধারণত দক্ষ কারিগরেরাই ঠিক করেন। এভাবে দুই ঘণ্টা চলে যাওয়ার পর আলাদাভাবে রাখা ফুটন্ত দুধের মধ্যে খুবই সামান্য পরিমাণ বীজ দই ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হয়। এরপর ছাউনি উঁচু করে রেখে দইয়ের পাত্রে রাখা দুধের পরিমাণ বুঝে বীজ দই মেশানো হয়। এরপর টানা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ছাউনি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে দই। তারপর ছাউনি উঠিয়ে দইয়ের পাত্রগুলো বের করে আনা হয়।

শেরপুরের তৈরি দই বিক্রি করতে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে গড়ে উঠেছে বিশাল বাজার। রয়েছে শতাধিক দোকান। এগুলো ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে।

দরদাম
শেরপুরে দই বিক্রি হয় এক কেজি বা দুই কেজি সমমানের মাটির সরায়। এক কেজি দইয়ের দাম ব্র্যান্ডভেদে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া সেখানেই চটজলদি খাওয়ার জন্য প্রতি গ্লাস দই বিক্রি হয় ২০ টাকায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম ছেলে বিয়ে করে পরিবারহারা, স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

স্ত্রীর সামনে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, বোমা ফাটিয়ে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট

চলন্ত বাসে ‘অজ্ঞান’ ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক, সিসিইউতে ভর্তি

৩য় শ্রেণির কর্মচারীর অঢেল সম্পদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত