Ajker Patrika

বাইক চুরি হয় ঢাকায়, বিক্রি মুন্সিগঞ্জে

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, ০৮: ৫৩
বাইক চুরি হয় ঢাকায়, বিক্রি মুন্সিগঞ্জে

ঢাকায় মোটরসাইকেল চুরির চারটি চক্র সক্রিয়। প্রতি চক্রে সদস্য পাঁচ থেকে সাতজন। রাজধানীসহ আট এলাকায় ভাগ হয়ে কাজ করে চক্রগুলো। প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে আটটি করে বাইক চুরির টার্গেট থাকে একেকটি চক্রের। চুরি করতে গিয়ে প্রায়ই এরা ধরা পড়ে। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের শুরু করে বাইক চুরি। চোরদের এই সিন্ডিকেট ও ক্রেতার অধিকাংশের বাড়িই মুন্সিগঞ্জের তিন উপজেলায়।

মোটরসাইকেল চুরি নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (গুলশান বিভাগ) করা বিস্তর এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল চুরির ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ বাইক ঢুকছে মুন্সিগঞ্জে। সদর উপজেলাসহ সিরাজদিখান, টঙ্গিবাড়ী ও গজারিয়া উপজেলায় চোরাই মোটরসাইকেল বেশি বিক্রি হচ্ছে। দেড়-দুই লাখ টাকার বাইক ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সেখানে। মোটরসাইকেল কিনে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে উঠতি বয়সী কিশোরেরা।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি লেক, গুলিস্তান, কাঁচপুর ও গাউছিয়া থেকে চুরি হচ্ছে বেশির ভাগ বাইক। চুরির ঘটনায় হচ্ছে মামলাও। গত ৬ জানুয়ারি এমনই এক চক্রের মূল হোতাসহ তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর (গোয়েন্দা) গুলশান বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ দল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মশিউর রহমান মিশু (৩২), রনি দালাল (৩১) ও নাজিম শেখ (৩৫)। তাঁদের কাছ থেকে ১০টি দামি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। চক্রের সদস্যরা আগেও গ্রেপ্তার হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তার চক্রটি গত তিন বছরে অন্তত ৫০০টি মোটরসাইকেল চুরি করেছে। পুরো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। লিও, মামুন ও কিরণ নামের বাকি তিনটি চক্রের ওপরও আমরা নজর রাখছি।’

পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভিতে দেখা যায়, মাত্র চার-পাঁচ সেকেন্ডেই দামি মোটরসাইকেল চুরি করছে একটি চক্র। তারা টার্গেট করছে দুই থেকে চার লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেলগুলো। একধরনের বিশেষ মাস্টার চাবি ব্যবহার করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, মুন্সিগঞ্জ থেকে মাস্টার চাবি তৈরি করে তারা ঢাকায় আসে। একটি মোটরসাইকেল চুরি করতে চোর চক্রের দুজন স্পটে থাকে। একজন মালিকের গতিবিধিতে দৃষ্টি রাখে। অন্যজন দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, সিরাজদিখানের বালুচর ইউনিয়নে অনেকটা প্রকাশ্যেই চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি হয়। এ ছাড়া চিত্রকোট ইউনিয়নের মরিচা এলাকায় চোরাই মোটরসাইকেল এমনকি প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন মডেলের গাড়িও পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ বলছে, এই চোর চক্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা হয়। গত মাসে পাঁচটি মোটরসাইকেল তারা জব্দ করেছে। টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড় নদীর ওপারে হাসাইল বাজার থেকে কিছু মোটরসাইকেল যাত্রী পারাপার করে থাকে। সেগুলো হাসাইল বাজার থেকে বানারী পর্যন্ত যায়। তাদের অধিকাংশ মোটরসাইকেলই অনিবন্ধিত। এমনকি নেই নম্বরপ্লেট বক্সও।

মুন্সিগঞ্জে চোরাই মোটরসাইকেলের আধিক্য নিয়ে জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুমন দেব বলেন, জেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলার উঠতি বয়সী তরুণেরা চোরাই মোটরসাইকেল কিনছে। লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল মূল সড়কে প্রবেশ করলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, জেলা পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে, এখানে স্বল্প দামে বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি বিক্রি হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত