Ajker Patrika

শত বছরের ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিহারটি

শিপ্ত বড়ুয়া, রামু (কক্সবাজার) 
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ০৮: ৩৩
Thumbnail image

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় দেখা মিলবে বেশ কয়েকটি প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের। এর মধ্যে অন্যতম লামার পাড়া বৌদ্ধবিহার। উপজেলার ফঁতেখারকুল ইউনিয়নের অফিসের চর এলাকার লামার পাড়ার এ বিহারটি প্রায় দুই একর জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। উপজেলা শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিহারের চারপাশে একসময় রাখাইনদের বসতি থাকলেও এখন কিছুই নেই। প্রায় দুই একর জায়গার দাঁড়িয়ে থাকা বিহারটি ঘিরে রাখে এক অদ্ভুত নীরবতা।

প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের পর চোখে পড়ে কাঠ দিয়ে বানানো কয়েকটি ভবন। প্রতিটি ভবনেই কাঠের কারুকাজ করা। একটু এগোলেই কাঠের ভবনের সামনে দেখা মিলবে একটি ঘণ্টাঘরের। ভেতরে রয়েছে দুটি বড় বড় ঘণ্টা। প্রাচীন এই বিহারের অন্যতম আকর্ষণ এই ঘণ্টা দুটি। কথিত রয়েছে, একসময় এই দুই ঘণ্টার আওয়াজ শোনা যেত প্রায় ৫ মাইল দূর থেকে। একেকটি ঘণ্টার ওজন ৮০ মণেরও বেশি।

লামারপাড়া বৌদ্ধবিহারের বর্তমান অধ্যক্ষ জানান, বিহারটি ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন জমিদার থোয়াইঙ্গ্যা সওদাগর। তৎকালীন মিয়ানমার থেকে কাঠ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম এনে উক্ত বিহারটির নির্মাণকাজ করা হয়। লামারপাড়া বৌদ্ধবিহার ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন। শতবর্ষী এই বিহারের কাঠ ও নির্মাণে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি এতটাই মজবুত যে এখনো দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শক্ত-পোক্ত আছে ভবনগুলোও। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসে এ বিহারের ধ্যান-সাধনা করতে। যদিও প্রাচীন নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ এবং ধ্যানের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এখন বিহারে প্রবেশে নানা নিয়ম আরোপ করা হয়েছে। বিহার পরিদর্শনের জন্যও অনুমতি নিয়ে ভেতরে ঢুকতে হয়।

লামারপাড়া বৌদ্ধবিহারের আবাসিক অধ্যক্ষ পাঁঞয়াজ্যেতি জানান, বহু বছর পুরোনো হলেও এখনো শক্ত আছে বিহারের সব ভবন। ঘণ্টাগুলো যদিও এখন আর ব্যবহার হয় না। দেশের জন্য এই বিহার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করবে একসময়। বর্তমানে বহু লোক দূরদূরান্ত থেকে এখানে আসছে, ধ্যান সাধনার জন্যই মূলত বিহারে প্রবেশে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।

প্রাচীন এই বিহারের ইতিহাস নিয়ে কথা হয় রামুর বৌদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য গবেষক ধনিরাম বড়ুয়ার সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, লামারপাড়া বৌদ্ধবিহারের ভবনগুলো সেগুন কাঠের তৈরি। আমি দীর্ঘদিন ধরে লামারপাড়া বৌদ্ধবিহারের ইতিহাস খুঁজেছি। অনেক পুরোনো ম্যাগাজিন এবং সরাসরি সূত্র থেকে লামারপাড়া বৌদ্ধবিহারের নানান ইতিহাস জেনেছি। জানা যায়, লামারপাড়া বৌদ্ধবিহারে ধ্যানী বুদ্ধমূর্তিটি ব্রোঞ্জের তৈরি। মিয়ানমার থেকে কারিগর এনে লামারপাড়া বৌদ্ধমন্দিরে উক্ত বুদ্ধমূর্তিটি তৈরি করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত